অবশেষে, মূল্য প্রবণতা আগস্টের সর্বোচ্চ অবস্থানকেও ছাড়িয়ে গেছে। ২০২০ এর শুরুর দিকে তেলের মূল্য ব্যারেল প্রতি ৬০ ডলার এর উপরে ছিল। করোনা ভাইরাস জনিত মহামারীর কারণে তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণ হ্রাস পায়। যাইহোক, গ্রীষ্মে তেল তার কিছু লোকসান পুষিয়ে নিয়েছে এবং প্রতি ব্যারেল প্রতি দাম এখন ৪০ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
দীর্ঘ সময় পর এখন ডাব্লুটিআই ক্রুডের দাম ব্যারেল প্রতি 4.3% বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারেল প্রতি $44.91 লেভেলে লেনদেন করেছে। ব্রেন্ট ক্রুড 3.9% বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারেল প্রতি $ 47.86 ডলারে স্থির হয়েছে, মার্চের পর থেকে এটি সর্বোচ্চ স্তরেও পৌঁছেছে।
সম্প্রতি মোদারনা ইনক., ফাইজার ইনক. এবং বায়োএনটেক কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সম্পর্কে রিপোর্ট করেছে। এই সংবাদের মধ্যেই, তেলের দাম বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সম্ভবত, খুব শীঘ্রই গণ ভ্যাকসিনেশন শুরু হবে। এর ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে এবং অর্থনীতি দ্রুত পুনরুদ্ধা হতে শুরু করবে।
এক্ষেত্রে তেল শিল্পও প্রত্যাবর্তন করবে, সড়ক ভ্রমণ বৃদ্ধি, বিমান ভ্রমণ বৃদ্ধি ও সামুদ্রিক পণ্য পরিবহনের ফলে তেলের চাহিদা বাড়বে। এখন ব্যবসায়ীরা আত্মবিশ্বাসী যে ২০২১ সালে তেলের ব্যবহার এবং মূল্য পুনরুদ্ধার হবে।
ইউএস কমোডিটি ফিউচারস ট্রেডিং কমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বিনিয়োগকারীরা চাহিদা বৃদ্ধির সম্ভাবনার মাঝে তেলের উচ্চমূল্য হবে বলে আশা করেছেন।
আরও একটি ইতিবাচক বিষয় হলো মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রতিনিধি জো বিডেনের জয়লাভ। এছাড়া জেনেট ইয়েলেনকে মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। বিশ্লেষকরা আত্মবিশ্বাসী যে মহামারীর পরে পরে ইয়েলেন আরও সক্রিয়ভাবে উদ্দীপনা ব্যবস্থা ব্যবহার করবেন।
ফলস্বরূপ, ব্যবসায়ীরা আবার স্টক, পণ্য এবং বৈদেশিক মুদ্রার ইন্সট্রুমেন্ট সহ ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
শেয়ারের বৃহত্তম প্রবৃদ্ধি রেকর্ড করা হয়েছে তেল ও গ্যাস কোম্পানিগুলোতে। সুতরাং, নভেম্বর মাসে, এস অ্যান্ড পি 500 সূচক 35% এরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ডায়মন্ডব্যাক এনার্জি ইনক. এবং অকসিডেন্টাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের শেয়ারগুলো লোকসান কাঠিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে।
এখন বিশ্লেষকদের নিকট একটি নতুন প্রশ্ন আছে: সাম্প্রতিক দাম বৃদ্ধির পরে ওপেক + কি বর্তমান উত্পাদন বিধিনিষেধ বজায় রাখবে? পূর্বে ধারণা করা হয়েছিল যে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের ক্রমবর্ধমান সক্রমনের মধ্যে দাম স্থিতিশীল রাখতে উৎপাদনে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে।
উত্পাদনের সীমাবদ্ধতা প্রত্যাহার করা হলে তেলের দাম আবারও হ্রাস পেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। ইউরোপে কোয়ারেন্টিনের কারণে শীতকালীন সময়ের জন্য তেলের চাহিদা এবং করোনভাইরাস সংক্রমনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়েও উদ্বেগ রয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার সোনার ফিউচার ট্রয় আউন্স প্রতি 1.8% হ্রাস পেয়ে 1,804.60 ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে আজ সোনা ট্রয় আউন্স প্রতি 1,811.12 ডলারে লেনদেন করছে। দেখে মনে হচ্ছে যে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি সম্পর্কে আশাবাদীদের মধ্যে বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণ বিক্রি করার পরে বাজারগুলিতে উচ্ছ্বসিত উত্সাহ অব্যাহত রয়েছে।