ফোর্ড মোটর কোম্পানি শুক্রবার বলেছে যে এটি রপ্তানির জন্য বৈদ্যুতিক যানবাহন উৎপাদন করতে ভারতে একটি কারখানা স্থাপন করার সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। অতি সম্প্রতি মার্কিন গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি ভারতে গাড়ী বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল।
বৈদ্যুতিক গাড়ির পরবর্তী প্রধান বাজার হতে চলেছে ভারত
গত বছর, ফোর্ড ভারতের দেশীয় বাজারে গাড়ি বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছিল কিন্তু তার দুটি কারখানা চালু রেখেছিল।
গাড়ি উৎপাদনকারী কোম্পানিটি শুধুমাত্র উৎপাদন সুবিধার অনুমতি চায়নি বরং দূষণমুক্ত জ্বালানিচালিত যানবাহনের জন্য $ 3.5 বিলিয়ন মূল্যের ভারতীয় প্রকল্পের অধীনে প্রণোদনার জন্য আবেদন করেছিল। কোম্পানিটি তার সর্বশেষ বার্তায় জানিয়েছে যে তাদের প্রস্তাবটি সরকার অনুমোদন করেছে। এবং ভারত সরকারও এ খবর নিশ্চিত করেছে।
ফোর্ড মোটর কোম্পানি, সুজুকি মোটর কর্পোরেশন, এবং হুনদাই মোটর সহ বিশটি কোম্পানি পরিবেশ-বান্ধব গাড়ির উৎপাদনকে উৎসাহিত করার জন্য ৩.৫ বিলিয়ন ডলারের ভারতীয় প্রকল্পের অধীনে এই সুবিধা পাবে৷
গত বছর, ফেডারেল মন্ত্রিসভা একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে যা অনুসারে স্বয়ংচালিত যানবাহন খাতকে পাঁচ বছরের জন্য বৈদ্যুতিক গাড়ি সহ হাইড্রোজেন জ্বালানি এবং এর উপাদান দ্বারা চালিত যানবাহনের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সুবিধা দেওয়া হবে।
এই প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারি পরিকল্পনার অংশ যা পরিবেশ বান্ধব গাড়ির স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করে জ্বালানী আমদানি খরচ এবং দূষণ কমাতে পারে।
ভারী শিল্প মন্ত্রনালয় জানিয়েছে যে এটি কিয়া মোটরস, টাটা মোটরস, মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা এবং সফ্টব্যাঙ্ক-গ্রুপ সহ ২০টি কোম্পানির আবেদন ইতোমধ্যেই অনুমোদন করেছে৷
টাটা মোটরস ঘোষণা করেছে যে এটি "বুদ্ধিমান এবং টেকসই চলাচলের সমাধানের দিয়ে ভারতের স্বয়ংচালিত যানবাহনের জগতকে বদলে দিতে চায়।"
সুজুকি, হুনদাই, কিয়া, মাহিন্দ্রা এবং ওলাকে মন্তব্যের অনুরোধ জানালে তারা তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
মোট ১১৫টি গাড়ি এবং গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সুবিধার জন্য আবেদন করেছে। সরকার স্বয়ংচালিত যানবাহন প্রস্তুতকারকদের চূড়ান্ত তালিকা পরে ঘোষণা করবে।
প্রণোদনাসমূহ গাড়ি বা এর যন্ত্রাংশের বিক্রয় মূল্যের ৮% থেকে ১৮% পর্যন্ত হতে পারে এবং সেই কোম্পানিগুলোকে দেওয়া হবে যারা কিছু শর্ত পূরণ করবে, যেমন পাঁচ বছরের জন্য ন্যূনতম বিনিয়োগ এবং প্রতি বছর ১০% বিক্রয় বৃদ্ধি।
মূলত বিষয়টি বেশ সহজেই বোঝার কথা। ভারতে বিদ্যুৎ এখনও তুলনামূলকভাবে সস্তা। এটি বৈদ্যুতিক গাড়িকে ভারতীয়দের কাছে পরিবহনের একটি আকর্ষণীয় মাধ্যম হয়ে উঠবে, বিশেষ করে যখন বিশ্বজুড়ে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি প্রতিদিনই বাড়ছে৷
আপনাদের মনে নিশ্চয় যে মহামারির কারণে যানবাহনের চাহিদা কমে যাওয়ায়, ফোর্ড গত বছর ভারতে গাড়ি বিক্রি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ভারতীয় গাড়ির বাজারের একটি ছোট অংশ বৈদ্যুতিক গাড়ি আগেই দখল করে আছে, এবং গাড়ির বিক্রয় মহামারিকালীন ব্যাপক হ্রাসের কারণে, অনেক বড় কোম্পানির জন্য উৎপাদন অলাভজনক হয়ে উঠেছে।
তা সত্ত্বেও, মনে হচ্ছে গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ওমিক্রনের ঝুঁকিসমূহ চিন্তা করে, একটি প্রাথমিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা করেছে এবং সেই অনুযায়ী তাদের পণ্যের চাহিদা নির্ধারণ করেছে।
এছাড়াও, এই প্রকল্পের অধীনে সরকারের কাছ থেকে পাওয়া সুবিধা তাদের জন্য অতিরিক্ত প্রণোদনা হিসাবে কাজ করবে।
বিনিয়োগকারীদের মতে, সরকারি চুক্তিগুলো সর্বদা কোম্পানির শেয়ার মূল্যের স্থিতিশীলতার ভিত্তি করে হয়ে থাকে, তাই আপনি যদি এই সেক্টর থেকে কোম্পানি বেছে নিতে চান, তাহলে সেইসব সংস্থাগুলোর দিকে মনোযোগ দেওয়া অর্থপূর্ণ, যারা ইতোমধ্যে সক্রিয়ভাবে তাদের বাজারের শেয়ার প্রসারিত করছে।
সর্বপোরি, বৈদ্যুতিক যানবাহন ব্যবহারের বকাঠামোও বিকাশ লাভ করবে, যার অর্থ ভারতে নতুন করে বিনিয়োগ বাড়বে এবং সেইসাথে অর্থের প্রবাহ।