যেখানে মার্কিন ডলারের বিপরীতে প্রতি মিনিটে ইউরো এবং পাউন্ডের আবারও পতন হচ্ছে, ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোমি পাওয়েলের সমস্যা কমেনি, বরং আরও বেড়েছে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সর্বশেষ মুদ্রাস্ফীতির পরিসংখ্যান ফেডের প্রধানকে আরও আক্রমনাত্মক অবস্থান নিতে বাধ্য করছে, যার ফলে মার্কিন অর্থনীতি আরও মন্দার দিকে এগিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে—মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কমিটির কাছে অন্য কোন উপায় নেই।
গত বছরের বেশিরভাগ সময় ধরে, পাওয়েল বলে আসছেন যে মুদ্রাস্ফীতি অস্থায়ী এবং সবকিছু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখন যেহেতু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, পাওয়েল ফেড আইকন খ্যাত পল ভলকারের স্টাইলে মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ভূমিকা নিয়েছেন৷ আমরা সম্ভবত এই বুধবার উচ্চ মূল্যের সাথে লড়াই করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে এবং ফেড এই সমস্যাটি সম্পূর্ণরূপে দূর করতে প্রস্তুত হওয়ার বিষয়ে অনেক কঠোর বিবৃতি শুনতে পাব। আশা করা হচ্ছে যে বুধবার ফেড আবারও সুদের হার 0.5% বাড়িয়ে দেবে।
এই সবই মার্কিন ডলারকে আরও শক্তিশালী করবে। ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ ধীরে ধীরে তাদের হারানো শক্তি ফিরে পাবে এমন আশা আর নেই। এটা স্পষ্ট যে ম্যানেজাররা কেউই আর সাইডলাইনে বসে থাকতে চাচ্ছেন না। তারা অভিযোগ করছেন যে মুদ্রাস্ফীতি শুধুমাত্র অস্থিরভাবে বাড়ছে এবং অন্তর্নিহিত সূচকটি সম্ভবত ততটা খারাপ নয়। সাম্প্রতিককালে প্রদর্শিত তথ্য অনুযায়ী, এটি সর্বোচ্চ স্তর থেকে অনেক দূরে।
অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে পরবর্তী সভায়, পাওয়েল সাবেক ফেড চেয়ারম্যান পল ভলকারের উদাহরণ অনুসরণ করে আর্থিক নীতিমালায় কঠোরতা আরোপ করবেন। পল ভলকার মূল্যস্ফীতি ঠেকাতে মার্কিন অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে, পাওয়েল স্বীকার করেছেন যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কিছু প্রচেষ্টা প্রয়োজন এবং একারণে সম্ভবত বেকারত্ব বাড়তে পারে।
ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি কেবল অর্থনীতি এবং জনগণকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে না, কেউ কেউ রাজনৈতিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে এই নভেম্বরে মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ব্যাপক চাপের মধ্যে থাকবেন। ফেডের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্লাইন্ডার সহ অনেক অর্থনীতিবিদ বলেছেন যে মুদ্রাস্ফীতিকে আরও সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে গেলে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে এবং বেকারত্ব হার বেড়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি 2%-এ নামিয়ে আনার ফেডের লক্ষ্যপূরণের জন্য অনেক বেশি মূল্য চুকাতে হতে পারে। নি;সন্দেহে এটি ডেমোক্র্যাটদের জন্য ভাল কিছু বয়ে আনবে না, কারণ তারা ইতিমধ্যেই অর্থনীতিকে এমন অবস্থায় নিয়ে আসার জন্য সমালোচিত হচ্ছে।
প্রায় সব নেতৃস্থানীয় অর্থনৈতিক সংস্থা এখন ধারণা করছে যে অর্থনৈতিক মন্দা ব্যতীত মুদ্রাস্ফীতিকে স্থিতিশীল করা আর সম্ভব নয়। দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি বজায় থাকলে শক্তিশালী শ্রমবাজারসম্পন্ন কোম্পানিগুলোর জন্য উচ্চ মজুরির বাধ্যবাধকতা এবং উচ্চ খরচের দিকে পরিচালিত করবে, যা শুধুমাত্র খরচ বাড়াবে। যার ফলে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে এবং মুনাফা হ্রাস পাবে।
আমরা চার্টে দেখতে পাচ্ছি, এই সব ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের ক্রেতাদের জন্য খুব বেশি আশাবাদ নেই। এটা স্পষ্ট যে ট্রেডাররা মার্কিন ডলারের শক্তিশালীকরণের উপর বাজি ধরে রেখেছেন, যার আকর্ষণ শুধুমাত্র মার্কিন বন্ডে ইয়েল্ডের বৃদ্ধির সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ইউরোর পরিস্থিতি বিবেচনার জন্য আপনি যদি চার্টটি দেখেন তবে আপনি স্পষ্টভাবে দেখতে পাবেন কীভাবে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা হারিয়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে সেলারদের একমাত্র লক্ষ্য এই বছরের নিম্নস্তর। তবে বুলিশ প্রবণতায় আশাবাদী ট্রেডার কর্তৃক বাজার গড়ে তোলার জন্য স্পষ্টতই আশা রয়েছে। মূল্য 1.0460 এবং 1.0420-স্তরের কাছাকাছি পৌছানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ যা ইউরোর নতুন মধ্যমেয়াদী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার নিম্ন সীমানা গঠনের জন্য বায়ারদের শেষ ভরসা। মূল্য 1.0460-এর স্তরে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে, আপনি এই পেয়ারের মূল্যের আরও বৃদ্ধির আশাকে বিদায় জানাতে পারেন, যা 1.0420 এবং 1.0390-এর স্তরে পৌঁছানোর পথ সরাসরি উন্মুক্ত করে দিবে। এই সাপোর্ট স্তরগুলোতে একটি ব্রেকআউট অবশ্যই এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্টের উপর চাপ বাড়াবে, 1.0350 এবং 1.0306 পরীক্ষা করার সুযোগ উন্মুক্ত করবে। পরিস্থিতি সংশোধন করার জন্য বুলিশ প্রবণতায় আশাবাদী ট্রেডারদের সংশোধন এবং প্রচেষ্টা সম্পর্কে কথা বলা সম্ভব, তবে সেটি শুধুমাত্র মূল্যের 1.0540 এবং 1.0580-এর স্তরে বৃদ্ধির সাথে এবং সুস্পষ্টভাবে 1.0500 এর উপরে ফিরে আসার পরে সম্ভব।
পাউন্ডের বায়ারদের স্পষ্টতই তাদের আগের তুলনায় অনেক বেশি সমস্যা রয়েছে। স্বল্পমেয়াদে, বুলিশ প্রবণতাইয় আশাবাদী ট্রেডাররা অবশ্যই 1.2320-এর স্তর ছাড়িয়ে যাওয়ার উপর নির্ভর করবে, যা এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্টের বৃদ্ধি বাড়াবে। 1.2320-এর ব্রেক 1.2410 এবং 1.2460-এর আপডেটের সম্ভাবনা সহ 1.2370-এ অবিলম্বে আঘাত করবে। এছাড়াও, বিয়ারিশ প্রবণতায় আশাবাদী ট্রেডাররা 1.2240 এর নীচে ব্রেক করে 1.2200 এ আঘাত করলে বুলিশ প্রবণতায় আশাবাদী ট্রেডারদের চিন্তা করা উচিত যে তারা কি করবে। এই পেয়ারের মূল্য এই রেঞ্জের বাইরে চলে গেছে চলতি বছরে আরেকটি নিম্নমুখী দিকে নিয়ে যাবে যেগুলো হল: 1.2160 এবং 1.2120-এর স্তর।