বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
1.0726 লেভেল থেকে বাউন্স করার পর বুধবার EUR/USD পেয়ারের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এই বাউন্স ইউরোর মূল্যের নতুন উত্থানের কারণ বলে মনে হতে পারে, তবে তা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। গতকাল, মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যা দিনের বেলায় এই পেয়ারের মূল্যের 100 এরও বেশি পিপসের বৃদ্ধির সূত্রপাত করেছে। ভোক্তা মূল্য সূচক 3.3%-এ নেমে এসেছে, যা আগের মাসের থেকে মাত্র 0.1% কমেছে। আমরা মনে করি মার্কেটের ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া অত্যধিক ছিল, এবং ডলারের দরপতন খুব শক্তিশালী ছিল। মুদ্রাস্ফীতিতে 0.1% হ্রাস ফেডারেল রিজার্ভের আর্থিক নীতিমালার দৃষ্টিভঙ্গির জন্য একেবারে কোন গুরুত্বই বহন করে না, যা পরে সন্ধ্যায় জেরোম পাওয়েলের বক্তব্য দ্বারা নিশ্চিত হওয়া হয়েছিল। ফেডের প্রধান বলেছেন মুদ্রাস্ফীতি সর্বোচ্চ স্তর থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে ঠিকই কিন্তু বেশ উচ্চ স্তরে রয়ে গেছে।
তাই ডলারের দরপতনের পরিবর্তে প্রবৃদ্ধি প্রদর্শন করা উচিত ছিল। তবে, মার্কেটের ট্রেডাররা আবারও মার্কিন মুদ্রা বিক্রির আনুষ্ঠানিক কারণ খুঁজে পেয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5 মিনিটের টাইমফ্রেমে শক্তিশালী মুভমেন্ট হয়েছিল, যা ট্রেডিংয়ের জন্য ভাল সুযোগ উপস্থাপন করেছিল। দিনের শুরুতে 1.0726-1.0733 রেঞ্জের উপরে এই পেয়ারের মূল্যের কনসলিডেশন হয় এবং বুধবার রাতারাতি এটি 1.0733 লেভেল থেকে বাউন্স হয়ে যায়। তাই সকালের দিকে ট্রেডাররা লং পজিশন ওপেন করতে পারতেন। মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদন প্রকাশের সময়, এই ট্রেড ইতোমধ্যেই লাভজনক ছিল, তাই স্টপ লস ব্রেকইভেনে সেট করা যেতে পারে এবং ট্রেডাররা অপেক্ষা করা চালিয়ে যেতে পারে। 1.0838 লেভেলের কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করা যেতে পারত। রাতের বেলা, 1.0797-1.0804 রেঞ্জ থেকে একটি বাউন্স হয়েছিল, যা আজকে আরও দর বৃদ্ধির আশা করার সুযোগ দেয়।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:
প্রতি ঘণ্টার চার্টে, EUR/USD পেয়ারের মূল্য কিছুদিনের মধ্যে প্রথমবারের মতো একটি স্থানীয় নিম্নমুখী প্রবণতা তৈরি করতে পরিবর্তনের মধ্যে থাকতে পারে, যদিও গতকালের দর বৃদ্ধি বর্তমান প্রযুক্তিগত চিত্রকে উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যাহত করেছে। এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতার সম্ভাবনা এখনও বাতিল করা হয়নি, তবে এর জন্য দ্রুত পুনরায় দরপতন শুরু হওয়া উচিত। অন্যথায়, মার্কেটে একটি নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠিত হতে পারে। আমরা মনে করি যে বুধবার ইউরো কেনার এবং ডলার বিক্রি করার কোন ভিত্তি ছিল না। ইউরোর মূল্যের উত্থান অনুমানমূলক হতে পারে।
বৃহস্পতিবার, ট্রেডারদের 1.0797-1.0804 রেঞ্জের আশেপাশে ট্রেডিং সিগন্যাল খোঁজা উচিত। এই রেঞ্জের নিচে মূল্যের কনসলিডেশন হলে ট্রেডাররা শর্ট পজিশন ওপেন করতে পারে এবং আমরা আশা করতে পারি এই পেয়ারের মূল্য 1.0726-1.0733 রেঞ্জে ফিরে আসবে। এই এরিয়া থেকে মূল্যের বাউন্স হলে আপনি লং পজিশন বিবেচনা করতে পারেন এবং আপনি 1.0838 এর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে পারেন।
5M চার্টের মূল লেভেলগুলো হল 1.0483, 1.0526, 1.0568, 1.0611, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0838-1.0856, 1.0888-1.0896, 1.0940, 1.0971-1.0981। আজ, ইউরোজোনে শিল্প উৎপাদন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে, যখন মার্কিন যুক্তরাজ্যে প্রাথমিক জবলেস ক্লেইমস এবং উৎপাদক মূল্য সূচকের প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এই প্রতিবেদনগুলো গুরুত্বের দিক থেকে গৌণ।
ট্রেডিংয়ের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। যত দ্রুত এটি গঠিত হয়, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হয়।
2) যদি ফলস সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করাই ভালো।
4) ইউরোপীয় সেশনের শুরু থেকে মার্কিন ট্রেডিং সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেডগুলো খোলা উচিত যখন সমস্ত পজিশন ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) আপনি 30-মিনিটের টাইম ফ্রেমে MACD সূচক থেকে সিগন্যাল ব্যবহার করে ট্রেড করতে পারেন, তবে এটি শুধুমাত্র শক্তিশালী অস্থিরতার মধ্যে ব্যবহার করা উচিত এবং একটি স্পষ্ট প্রবণতা থাকতে হবে যা ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত হওয়া উচিত।
6) যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
চার্ট কীভাবে বুঝতে হয়:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD নির্দেশক (14, 22, এবং 3) একটি হিস্টোগ্রাম এবং একটি সিগন্যাল লাইন নিয়ে গঠিত। যখন মূল্য এগুলো অতিক্রম করে, সেটি মার্কেটে এন্ট্রির একটি সিগন্যাল। ট্রেন্ড প্যাটার্ন (চ্যানেল এবং ট্রেন্ডলাইন) এর সাথে এই সূচকটি ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা এবং অর্থনৈতিক প্রতিবেদন অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যেতে পারে এবং এগুলো একটি কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, সেগুলোর প্রকাশের সময়, আমরা মূল্যের তীব্র ওঠানামা এড়াতে যতটা সম্ভব সাবধানে ট্রেড করার বা বাজার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিই।
ফরেক্সে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখা উচিত যে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হতে হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল এবং অর্থ ব্যবস্থাপনার বিকাশ হল দীর্ঘ মেয়াদে ট্রেডিংয়ে সাফল্যের চাবিকাঠি।