শুক্রবারে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কোন আকর্ষণীয় মুভমেন্ট দেখা যায়নি। এই পেয়ারের মূল্যের দৈনিক অস্থিরতার পরিমাণ ছিল 23 পিপস, যা থেকে চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সাধারণভাবে, এই পেয়ারের মূল্য সারা দিন এক জায়গায় স্থির ছিল। যাইহোক, এটি 4-ঘন্টার টাইম ফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্য মুভিং এভারেজ লাইনের উপরে ছিল, তাই মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অটুট রয়েছে। মনে করে দেখুন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্ব এবং নন-ফার্ম পে-রোল প্রতিবেদনের দুর্বল ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর ডলারের সর্বশেষ দরপতন পরিলক্ষিত হয়েছে, একই সময়ে, এই পেয়ারের কোট 1.0600-1.1000 এর হরিজন্টাল চ্যানেলে অবস্থান করছে, যেখানে এই পেয়ারের মূল্য সাত মাস ধরে রয়েছে। সুতরাং, নতুন সপ্তাহের ব্যাপারে মূল প্রশ্ন হবে ডলারের মূল্য 1.0600 এর লক্ষ্যমাত্রায় হরিজন্টাল চ্যানেলের মধ্যে প্রত্যাশিত বৃদ্ধি ধরে রাখতে পারে কিনা।
এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য, আমাদের প্রথমে সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি বিবেচনা করা উচিত। ইউরোপীয় ইউনিয়নে বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে যা ট্রেডারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে। যদি আমরা সবগুলো স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিবেদন (যেমন ZEW সূচক) বাদ দেই, তাহলে শুধুমাত্র দ্বিতীয় প্রান্তিকের জিডিপি এবং শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন অবশিষ্ট থাকে। যাইহোক, এই প্রতিবেদনগুলোকে খুব বেশি "গুরুত্বপূর্ণ" বলা যাবে না। জিডিপি প্রতিবেদনের দ্বিতীয় অনুমান প্রকাশ করা হবে, যা তিনটির মধ্যে সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ। অতএব, মার্কেটে কোন উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির আশা করা হচ্ছে না। উপরন্তু, প্রথম অনুমানের তুলনায়, এই সূচকের পূর্বাভাস পরিবর্তিত হয়নি। ইউরোপীয় অর্থনীতি 0.3% প্রবৃদ্ধি প্রদর্শন করতে পারে, যা খুবই সামান্য। যাইহোক, এই মুহূর্তে মার্কেটের ট্রেডাররা ইউরোপীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির গতি নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়। তারা শুধুমাত্র মার্কিন অর্থনীতি নিয়ে চিন্তিত!
মার্কিন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, এবং দেশটিতে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা যাবে বলে মনে হচ্ছে না। অন্তত দ্বিতীয় প্রান্তিকে মার্কিন অর্থনীতির 2.8% প্রবৃদ্ধি দেখা যেতে পারে। মার্কেটের ট্রেডাররা সাত মাস ধরে ফেডারেল রিজার্ভের মূল সুদের হার কমানোর জন্য অপেক্ষা করছে, তারা অবচেতনভাবে বুঝতে পারছে যে উচ্চ মার্কিন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ফেডকে সুদের হার উচ্চস্তরে বজায় রাখার জন্য অতিরিক্ত সময় দিচ্ছে। অন্য কথায়, অর্থনীতি ভালোভাবে চলতে থাকলে মুদ্রানীতি নমনীয় করার জন্য তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই। আপনি যদি নন-ফার্ম পেরোল এবং বেকারত্বের হার উপেক্ষা করেন তবে দেশটির অর্থনীতি ভালই চলছে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত, কোন প্রতিবেদন বেশি গুরুত্বপূর্ণ? শ্রম বাজারের প্রতিবেদন নাকি সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন?
কিন্তু মার্কিন মুদ্রাস্ফীতির উপর বেশ পুরনো, নির্ভরযোগ্য, জনপ্রিয় প্রতিবেদন কি ডলারের বিক্রেতাদের জন্য সাহায্য আসতে পারে। আমরা এটিকে আলাদাভাবে তুলে করেছি কারণ, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে, এমনকি এই সূচকে ন্যূনতম মন্থরতা পরিলক্ষিত হলে মার্কিন মুদ্রার দরপতনের সূত্রপাত হয়েছে। বর্তমান সরকারী পূর্বাভাস অনুযায়ী জুলাই মাসে মূল এবং অন্তর্নিহিত মুদ্রাস্ফীতি 0.1% দ্বারা সামান্য হ্রাসের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। ভেবে দেখুন, জুলাইয়ে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি 0.2% কমে 2.8%-এ নেমে গেলে কী ঘটতে পারে! কয়েক বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো, দেশটির মুদ্রাস্ফীতি 3% এর নিচে নেমে যেতে পারে। সেপ্টেম্বরে মুদ্রানীতি নমনীয় হওয়ার সম্ভাবনা অবিলম্বে 100%-এ উন্নীত হবে, এবং এটির সাথে, মার্কিন ডলারের দরপতন ঘটবে। অতএব, মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন মার্কিন গ্রিনব্যাকের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক বিষয়, ইউরোপীয় জিডিপি বা শিল্প উৎপাদনের প্রতিবেদন নয়। মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন আবারও বাজারকে স্থবির করে দিতে পারে। যাইহোক, যে কোনও ক্ষেত্রে, এই পেয়ারের মূল্য হরিজন্টাল চ্যানেল থেকে বের না হওয়া পর্যন্ত আমাদের নতুন করে ঊর্ধ্বমুখী বা নিম্নমুখী প্রবণতার আশা করা সম্ভব নয়।
১২ আগস্ট পর্যন্ত বিগত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে EUR/USD-এর মূল্যের গড় অস্থিরতা হল 59 পিপস, যা গড় হিসাবে বিবেচিত হয়। আমরা আশা করছি যে সোমবার এই পেয়ারের মূল্য 1.0857 এবং 1.0975 এর লেভেলের মধ্যে মুভমেন্ট প্রদর্শন করবে। হায়ার লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল উপরের দিকে যাচ্ছে, কিন্তু বিশ্বব্যাপী এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অটুট রয়েছে। CCI সূচকটি দ্বিতীয়বারের মতো ওভারবট জোনে প্রবেশ করেছে, যা আবারও নিম্নমুখী প্রবণতায় স্থানান্তরের সতর্কবার্তা দিয়েছে।
নিকটতম সাপোর্ট লেভেল:
- S1 – 1.0864
- S2 – 1.0803
- S3 – 1.0742
নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল:
- R1 – 1.0925
- R2 – 1.0986
- R3 – 1.1047
ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:
বিশ্বব্যাপী EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে এবং 4-ঘণ্টার টাইমফ্রেমে একটি বিয়ারিশ কারেকশন শুরু হয়েছে, যা নতুন করে নিম্নমুখী প্রবণতার সূচনা করতে পারে। পূর্ববর্তী পর্যালোচনাগুলোতে, আমরা উল্লেখ করেছিলাম যে আমরা শুধুমাত্র ইউরোর দরপতনের আশা করছি। আমরা মনে করি না যে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করার মধ্যে ইউরোর মূল্যের নতুন কোন বৈশ্বিক প্রবণতা শুরু হতে পারে, তাই কিছু সময়ের জন্য এই পেয়ারের মূল্য সম্ভবত 1.0600 এবং 1.1000-এর মধ্যে ওঠানামা করবে। আপাতত, মনে হচ্ছে যে মূল্য হরিজন্টাল চ্যানেলের উপরের সীমানা থেকে বাউন্স হয়ে নিচের সীমানার দিকে যাচ্ছে।
চিত্রের ব্যাখা:
- লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল - বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। যদি উভয়ই একই দিকে পরিচালিত হয়, তাহলে এর অর্থ হল বর্তমানে প্রবণতা শক্তিশালী।
- মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, স্মুথেদ) – স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং বর্তমানে কোন দিকে ট্রেডিং করা উচিত তা নির্ধারণ করে।
- মারে লেভেল - মুভমেন্ট এবং কারেকশনের লক্ষ্য মাত্রা।
- অস্থিরতার মাত্রা (লাল লাইন) - সম্ভাব্য প্রাইস চ্যানেল যেখানে এই পেয়ারের মূল্য পরের দিন অবস্থান করবে, যা বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়।
- সিসিআই সূচক – এই সূচকের ওভারসোল্ড জোনে (-250-এর নীচে) বা ওভারবট জোনে (+250-এর উপরে) প্রবেশের মানে হল যে চলমান প্রবণতা বিপরীতমুখী হতে যাচ্ছে।