বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট:
বৃহস্পতিবার, EUR/USD পেয়ারের মাঝারি মাত্রার দরপতন অব্যাহত ছিল। গত দুই দিনে এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা কমে গেছে, যা এই ইঙ্গিত দিচ্ছে পারে যে মার্কেটের ট্রেডাররা সপ্তাহের শেষভাগে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের প্রকাশনার জন্য অপেক্ষা করছে—যার মধ্যে মার্কিন বেকারত্ব হার এবং ননফার্ম পেরোল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে, বৃহস্পতিবারও সামষ্টিক প্রতিবেদনের ফলাফল মার্কিন ডলারের পক্ষে সহায়ক ছিল। মনে রাখবেন, সপ্তাহের শুরু থেকে প্রতিদিন ডলার বেশ কিছু সহায়ক কারণ পেয়েছে, যেমনটি দীর্ঘদিন ধরে দেখা যায়নি। গতকাল, সেপ্টেম্বর মাসের ISM পরিষেবা সংক্রান্ত PMI প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে প্রায় ৩ পয়েন্ট বেশি ছিল। সুতরাং, ডলারের শক্তিশালী হওয়ার যথেষ্ট কারণ ছিল, কিন্তু এই বৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে দুর্বল ছিল। সকল প্রতিবেদন সহায়ক ছিল বিবেচনায়, আমরা মনে করি যে সপ্তাহের শুরু থেকে পরিলক্ষিত দরপতন এখনও বেশ দুর্বল। এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সম্ভবত শেষ হয়েছে, তবে এটি মনে রাখা জরুরি যে ডলার গত দুই বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে দরপতনের শিকার হয়েছে। মাঝারি মেয়াদে, মার্কেটে আবারও অযৌক্তিকভাবে ডলারের ক্রয় শুরু হতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট:
বৃহস্পতিবার 5 মিনিটের টাইমফ্রেমে প্রায় সম্পূর্ণভাবে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। উপরোক্ত চার্টে দেখা যাচ্ছে যে, এই পেয়ারের মূল্য সারাদিন 1.1011 এবং 1.1048 লেভেলের মধ্যে ছিল। মূল্য এই রেঞ্জের উভয় প্রান্ত থেকে রিবাউন্ড করেছে। তাই নতুন ট্রেডাররা প্রথমে শর্ট পজিশন এবং পরে লং পজিশন ওপেন করতে পারত। উভয় ট্রেডই লাভজনক হয়েছে, তবে বৃহস্পতিবারের এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা খুব বেশি না থাকায় তুলনামূলকভাবে কম লাভ হয়েছে।
শুক্রবার কীভাবে ট্রেড করতে হবে:
এক ঘণ্টার টাইমফ্রেমে, এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা গঠনের সম্ভাবনা আছে; এই সপ্তাহে এই পেয়ারের মূল্য সেই দিকে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, মাঝারি মেয়াদে আবারও অযৌক্তিকভাবে ডলারের বিক্রি শুরু হতে পারে, কারণ কেউ জানে না মার্কেটের ট্রেডাররা কতদিন পর্যন্ত ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতি শিথিল করার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে চলবে, যখন ডলারের পক্ষে থাকা সকল বিষয় উপেক্ষা করা হচ্ছে। তবে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে মার্কেট ট্রেডারদের পক্ষে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট চলমান রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। আমরা হয়তো এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার শেষ পর্যায়ে রয়েছি, তবে এ সপ্তাহের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন এখনও প্রকাশ হওয়া বাকি রয়েছে, যা পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে পারে।
শুক্রবার 1.1011 এবং 1.1048 লেভেল থেকে ট্রেড করা যেতে পারে। তবে, আজ যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যেগুলোর ফলাফল দুর্বল হতে পারে এবং আরও একবার এটি ডলারের দরপতনের কারণ হতে পারে।
5 মিনিটের টাইমফ্রেমে, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0838-1.0856, 1.0888-1.0896, 1.0940, 1.0971, 1.1011, 1.1048, 1.1091, 1.1132-1.1140, 1.1189-1.1191, 1.1275-1.1292 লেভেলগুলো থেকে ট্রেডিং করা যেতে পারে। শুক্রবার ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্ব, পেরোল, এবং শ্রমবাজার সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।