শুক্রবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে, যা মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে অবাক করার মতো। সংক্ষেপে, প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল দুর্বল ছিল এবং এগুলোর গুরুত্বও কম ছিল। ইউরোজোনে কোনো উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, তবুও সকাল থেকেই ইউরোর মূল্য বাড়তে শুরু করে। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোর গুরুত্বও সম্পূর্ণরূপে গৌণ ছিল, যদিও অনেক বিশেষজ্ঞ PCE ইনডেক্সকে ফেডারেল রিজার্ভের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সূচক বলে মনে করেন। তবে, আমরা এরকমটি মনে করি না, বিশেষত মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদন এবং ফেড বৈঠকের ঠিক পরপর। ফেড আগামী ১২ মাসের ব্যাপারে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে: তারা ১-২ বার সুদের হার কমাতে পারে, এর বেশি নয়। তাই, PCE ইনডেক্স বর্তমানে তেমন কোন গুরুত্ব বহন করে না, তবে এটি কয়েক মাস পরে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারে, যখন ফেড আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করা সম্পূর্ণ থামাবে এবং সুদের হার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে।
আমরা শুক্রবারের ইউরোর মূল্য বৃদ্ধিকে অযৌক্তিক বলে মনে করি। বৃহত্তর প্রযুক্তিগত চিত্রের দিকে তাকালে এটি স্পষ্ট হয় যে, ইউরোর মূল্য দীর্ঘ সময় ধরে নিম্নমুখী রয়েছে, যেখানে বিরল পরিস্থিতিতে দুর্বল কারেকশন দেখা যাচ্ছে। এই সপ্তাহে নতুন করে কারেকশনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
বিশ্বব্যাপী ক্রিসমাস এবং নববর্ষের ছুটি শুরু হওয়ায়, এই পেয়ারের মূল্যেরর ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেতে পারে, যা ফ্ল্যাট মুভমেন্টের দিকে নিয়ে যেতে পারে। তবে, ছুটি মানেই মার্কেট স্থিতিশীল থাকবে এমন নয়। এই ধরনের সময়ে ট্রেডারদের সংখ্যা এবং ট্রেডিং কার্যক্রম উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায় এবং এসময় মার্কেট মেকাররা উল্লেখযোগ্য পজিশন ওপেন করলে এই পেয়ারের তীব্র দরপতন বা শক্তিশালী দর বৃদ্ধি শুরু হতে পারে। প্রশ্ন হলো—এমন কোনো মার্কেট মেকার উপস্থিত হবে কি না।
এই সপ্তাহের পরিস্থিতি এই সপ্তাহে ইউরোজোনে কোনো উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট বা প্রতিবেদন নির্ধারিত নেই, যা বিশ্লেষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রদান করবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তবে অনেক প্ল্যাটফর্ম এবং এক্সচেঞ্জ ছুটির জন্য বন্ধ থাকবে, যার অর্থ ইন্টারব্যাংক ট্রেডিংও বন্ধ থাকবে। সুতরাং, এ বছরের বাকি সময়ে মার্কেট মূলত ফ্ল্যাট বা অপ্রত্যাশিত মুভমেন্ট প্রদর্শন করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।
প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে এ পর্যন্ত এই পেয়ারের মূল্য মুভিং এভারেজ পর্যন্ত কারেকশন করেছে এবং যতক্ষণ মূল্য এই লেভেল নিচে থাকে, ইউরোর মূল্যের টেকসই ইউরোর বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা ভিত্তিহীন। হায়ার টাইমফ্রেমে, এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে, যা এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্টকে সম্ভাবনাময় দৃশ্যপট হিসেবে তুলে ধরে।
২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গত পাঁচ দিনের ট্রেডিংয়ে গড় ভোলাটিলিটি হচ্ছে 91 পিপস, যা "মাঝারি" মাত্রার হিসেবে বিবেচিত। আমরা আশা করছি সোমবার এই পেয়ারের মূল্য 1.0338 এবং 1.0520 লেভেলের মধ্যে মুভমেন্ট প্রদর্শন করবে। হায়ার লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেলটি নিম্নমুখী হচ্ছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে বৈশ্বিক ভিত্তিতে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা এখনও অটুট রয়েছে। উল্লেখযোগ্য দরপতনের ফলে CCI সূচকটি আবার ওভারসোল্ড জোনে প্রবেশ করেছে, যা মূলত একটি সম্ভাব্য কারেকশনের সংকেত প্রদান করছে।
নিকটতম সাপোর্ট লেভেল:
S1 – 1.0376
S2 – 1.0254
S3 – 1.0132
নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল:
R1 – 1.0498
R2 – 1.0620
R3 – 1.0742
ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:
EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। গত কয়েক মাস ধরে, আমরা ধারাবাহিকভাবে ইউরোর মধ্যমেয়াদী দরপতনের প্রত্যাশার কথা উল্লেখ করেছি এবং আমরা সামগ্রিকভাবে বিয়ারিশ প্রবণতার সম্ভাবনা দেখতে। মার্কেটে ইতোমধ্যে ফেডের ভবিষ্যত সুদের হার কমানোর সমস্ত প্রভাব মূল্যায়ন করেছে বলে মনে হয়। সুতরাং, মধ্যমেয়াদে ডলারের দরপতনের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই, যদিও এগুলো আগেও সীমিত ছিল। মূল্য মুভিং এভারেজের নিচে থাকলে শর্ট পজিশনগুলো 1.0338 এবং 1.0254 লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রাসঙ্গিক থাকবে। যদি আপনি "শুধুমাত্র" টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ব্যবহার করে ট্রেড করেন, তাহলে মূল্য মুভিং এভারেজের উপরে চলে গেলে 1.0620 এর লক্ষ্যমাত্রায় লং পজিশন বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে, বর্তমানে লং পজিশন ওপেন করার পরামর্শ দিচ্ছি না।
চিত্রের ব্যাখা:
- লিনিয়ার রিগ্রেশন চ্যানেল - বর্তমান প্রবণতা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। যদি উভয়ই একই দিকে পরিচালিত হয়, তাহলে এর অর্থ হল বর্তমানে প্রবণতা শক্তিশালী।
- মুভিং এভারেজ লাইন (সেটিংস 20.0, স্মুথেদ) – স্বল্পমেয়াদী প্রবণতা এবং বর্তমানে কোন দিকে ট্রেডিং করা উচিত তা নির্ধারণ করে।
- মারে লেভেল - মুভমেন্ট এবং কারেকশনের লক্ষ্য মাত্রা।
- অস্থিরতার মাত্রা (লাল লাইন) - সম্ভাব্য প্রাইস চ্যানেল যেখানে এই পেয়ারের মূল্য পরের দিন অবস্থান করবে, যা বর্তমান অস্থিরতা সূচকের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়।
- সিসিআই সূচক – এই সূচকের ওভারসোল্ড জোনে (-250-এর নীচে) বা ওভারবট জোনে (+250-এর উপরে) প্রবেশের মানে হল যে চলমান প্রবণতা বিপরীতমুখী হতে যাচ্ছে।