শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার সাইডওয়েজ মুভমেন্টের সাথে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের ট্রেড করা হয়েছে। যদিও আমরা এখনও মনে করি না যে ইউরোর মূল্যের ফ্ল্যাট মুভমেন্ট বিরাজ করছে, তবে সপ্তাহের শেষ তিনদিনের ট্রেডিংয়ে এই পেয়ারের মূল্য 1.0269 এবং 1.0359 লেভেলের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। দুর্বল সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমির প্রভাবে এই ধরনের পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে।
আমরা আগেই উল্লেখ করেছি যে, যদিও বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তবুও সেগুলো ট্রেডারদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। এর ফলে, এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফলের প্রতি ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া স্বল্পস্থায়ী ছিল এবং সামগ্রিক প্রযুক্তিগত পরিস্থিতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি, যা চার্টে প্রতিফলিত হয়েছে।
আরও গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হলো যে, এই পেয়ারের মূল্য দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন লেভেলের কাছাকাছি থাকার পরেও, এই লেভেল থেকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে সংগ্রাম করছে, যা হায়ার টাইমফ্রেমে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। এটি নির্দেশ করে যে মার্কেটের ট্রেডাররা মাঝে মাঝে বিরতি নিচ্ছে, যা চার্টে সামান্য দর বৃদ্ধি বা সাইডওয়েজ মুভমেন্টের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। আমরা মনে করি যে অব্যাহতভাবে ইউরোর দরপতন হবে, এবং এই মুহূর্তে মূল্য বিপরীতমুখী হয়ে বুলিশ মুভমেন্ট দেখতে পাওয়ার কোন সংকেত দেখা যাচ্ছে না।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, শুক্রবার দুটি চমৎকার বাই সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। মূল্য 1.0269-1.0277 লেভেল থেকে দুইবার রিবাউন্ড করেছিল। যদিও শক্তিশালী বিয়ারিশ প্রবণতার সময় বাই সিগন্যাল সাধারণত অগ্রাধিকার পায় না, শুক্রবার এই ট্রেডগুলো লাভজনক ছিল। প্রথম ক্ষেত্রে, মূল্য প্রায় ২০ পিপস বেড়েছে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে, মূল্য প্রায় ৪৫ পিপস বেড়েছে, যা পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা মাত্র ৩ পিপস দূরে ছিল।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। আমরা মনে করি যে মধ্যমেয়াদে ইউরোর দরপতন পুনরায় শুরু হয়েছে, এবং এখন ইউরোর মূল্য ডলারের সাথে প্যারিটি লেভেলের কাছাকাছি যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট ডলারের জন্য অনুকূল হওয়ায় ইউরোর দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার এই পেয়ারের মূল্যের সীমিত মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, এবং ইউরোর আরও দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা আশা করছি যে এই পেয়ারের মূল্য শীঘ্রই 1.0269-1.0277 এর লেভেল ব্রেক করবে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনায় নেওয়া উচিত: 1.0156, 1.0221, 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, এবং 1.0845-1.0851। সোমবার ইউরোজোন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো বড় ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার বা প্রতিবেদনের প্রকাশনা নির্ধারিত নেই। ফলে, সম্ভবত এই পেয়ারের মূল্যের দুর্বল মুভমেন্ট দেখা যাবে, এবং মূল্য আরও একদিন 1.0269-1.0359 রেঞ্জের মধ্যে থাকতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।