শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার, EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনের নিচে স্থিতিশীল হওয়ার পর নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। যদিও এই নিম্নমুখী মুভমেন্ট যৌক্তিক, তবে পুরো সপ্তাহ জুড়ে ইউরোর আরও ব্যাপক দরপতনের সম্ভাবনা ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে প্রকাশিত প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট এবং প্রতিবেদনের ফলাফল মার্কিন ডলারের পক্ষে কাজ করেছে, তবুও ইউরো প্রত্যাশার চেয়ে ভালোভাবে উচ্চ মূল্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তবে, শুক্রবার প্রকাশিত জার্মানির অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল ইউরোর তীব্র দরপতনের কারণ হয়েছে। দেশটির খুচরা বিক্রয় সূচক 0.2% বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হলেও 1.6% হ্রাস পেয়েছে। সেইসাথে দেশটির বেকারত্ব হার 6.2% এ উন্নীত হয়েছে, এবং মুদ্রাস্ফীতি সূচক প্রত্যাশিত 2.6% এর পরিবর্তে 2.3% এ নেমে এসেছে। মুদ্রাস্ফীতির এই অপ্রত্যাশিত হ্রাস ইউরোর আরও বড় দরপতন ঘটাতে পারত, কারণ এই বিষয়টি দ্রুতই ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংককে (ইসিবি) নীতিগত সুদের হার 2% -এ নামিয়ে আনার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করছে। অন্যদিকে, ফেডারেল রিজার্ভ মুদ্রানীতি শিথিলকরণ আপাতত বন্ধ রেখেছে এবং দীর্ঘ সময় ধরে এই অবস্থান বজায় রাখার পরিকল্পনা করেছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে, শুক্রবার দুইটি কার্যকর ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। প্রথমে, এই পেয়ারের মূল্য 1.0359 লেভেল থেকে রিবাউন্ড করে 1.0433 পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়, তারপর 1.0433 থেকে রিবাউন্ড হয়ে আবার 1.0359 এ ফিরে আসে। এই দুইটি সিগন্যাল ব্যবহার করে নতুন ট্রেডাররা প্রথমে লং পজিশন এবং পরে শর্ট পজিশন ওপেন করতে পারতেন। এই দুইটি ট্রেড থেকে প্রায় 90-100 পিপস লাভ করা যেতে পারত।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, মাঝারি-মেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, এবং স্থানীয় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সমাপ্ত হয়েছে। আগের মতো, আমরা ইউরোর আরও দরপতনের প্রত্যাশা করছি, কারণ মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষপট মার্কিন ডলারের পক্ষে কাজ করছে। ফলে, আমরা শীঘ্রই মার্কিন ডলারের আরও শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার প্রত্যাশা করছি।
সোমবার, এই পেয়ারের আরও দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে, তবে এই পেয়ারের মূল্য 1.0359 লেভেল ব্রেক করে নিচের দিকে গেলে নিম্নমুখী মুভমেন্টের সম্ভাবনা নিশ্চিত হবে। গত সপ্তাহে ইউরোর দরপতন ঘটাতে পারে এমন বেশি কিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও মার্কেটের ট্রেডাররা সেগুলোর প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে, ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলসমূহ হচ্ছে: 1.0156, 1.0221, 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851।সোমবার, জার্মানি, ইউরোজোন, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ম্যানুফ্যাকচারিং PMI সূচক প্রকাশিত হবে। এছাড়াও, ইউরোজোনে জানুয়ারি মাসের মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ISM ম্যানুফ্যাকচারিং সূচক প্রকাশিত হবে হবে। এই দুটি প্রতিবেদনের ফলাফল এই কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।