সম্পূর্ণ এশিয়ায় প্রধান স্টক সূচকসমূহে দরপতন পরিলক্ষিত হয়েছে, যেখানে জাপান, তাইওয়ান এবং হংকংয়ে সবচেয়ে বেশি পতন লক্ষ্য করা গেছে। এশিয়ান ট্রেডিং সেশনের সময় ১০-বছরের মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের ইয়েল্ড তিন বেসিস পয়েন্ট কমে 4.4% হয়েছে, যখন সোমবার নিরাপদ বিনিয়োগের চাহিদা বৃদ্ধির ফলে স্বর্ণের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। অন্যদিকে, বিটকয়েন এবং অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদও দরপতনের সম্মুখীন হয়েছে, যেখানে মূল সাপোর্ট লেভেলগুলো টেস্ট করা হয়েছে।
গতকাল, ডোনাল্ড ট্রাম্প নিশ্চিত করেছেন যে কানাডা এবং মেক্সিকোর জন্য নির্ধারিত শুল্ক আগামী মাসে কার্যকর করা হবে। পাশাপাশি, তিনি সরকারী কমিটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি, জ্বালানি এবং অন্যান্য কৌশলগত খাতে চীনা বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিয়েছেন।
এই ঘটনাগুলো মার্কেটে আরও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে, যার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব অনুমান করা কঠিন। তবে ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া ইতোমধ্যেই অনেক কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই পদক্ষেপগুলো মুদ্রাস্ফীতি বাড়িয়ে তুলবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর করবে কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়। ট্রাম্প ওয়াশিংটন এবং তার মিত্রদের মধ্যে ইউক্রেন সংক্রান্ত বিভক্তি আরও গভীর করেছেন, যেখানে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সাথে তার সাম্প্রতিক বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে বলে জানা গেছে।
চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে, ট্রাম্প প্রশাসন সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তির ওপর আরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যা চীনা প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। বিশেষত, ডিপসিক এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের কর্পোরেট নেতাদের সাথে বৈঠকের পর চীনা স্টক মার্কেট তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেভেলে পৌঁছানোর পর এই ধরনের বিধিনিষেধ আরোপের আলোচনা করা হচ্ছে।
এছাড়া, মার্কিন কর্মকর্তারা জাপান এবং নেদারল্যান্ডের প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন, যেখানে টোকিও ইলেকট্রন লিমিটেড এবং এএসএমএল হোল্ডিং এনভি-কে চীনে সেমিকন্ডাক্টর সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণের সক্ষমতা সীমিত করার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ বিনিয়োগকারীরা ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব মূল্যায়ন করছেন। স্বর্ণের দর রেকর্ড উচ্চতার কাছাকাছি অবস্থান করছে, যখন বিটকয়েন টানা তৃতীয় দিনের মতো দরপতনের সম্মুখীন হয়েছে। ইথেরিয়াম, সোলানা, এবং ডজকয়েনের মতো প্রধান অল্টকয়েনগুলোও বিক্রির চাপে রয়েছে, কারণ বিনিয়োগকারীরা বিকল্প সম্পদগুলোর দিকে ঝুঁকছেন।
S&P 500-এর টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ
এই সূচকের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। আজ ক্রেতাদের মূল লক্ষ্য হবে সূচকটির দরকে $6003-এর রেজিস্ট্যান্স লেভেল ব্রেক করে উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া, যা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেবে এবং $6024 লেভেলের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করবে। আরও ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের মাধ্যমে $6038 লেভেল স্পর্শ করা হলে বুলিশ প্রবণতা আরও দৃঢ় হতে পারে।
যদি ঝুঁকি গ্রহণের প্রবণতা আরও কমে যায়, তাহলে ক্রেতাদের অবশ্যই $5986 সাপোর্ট লেভেল ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে। যদি এই লেভেল ধরে রাখা সম্ভব না হয়, তাহলে সূচকটির দর দ্রুত $5967 লেভেলে নেমে যেতে পারে, যেখানে বিক্রির চাপ আরও বাড়লে তা $5951 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে।