বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার GBP/USD পেয়ারের মূল্য কার্যত স্থবির ছিল। ব্রিটিশ পাউন্ড বা মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধির বা দরপতনের জন্য কোনো মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণ ছিল না, কারণ অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট দুর্বল ছিল এবং মৌলিক প্রভাবক অনুপস্থিত ছিল। একইসাথে, ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে কোনো শুল্ক আরোপ না করে এক দিন বিরতি নিয়েছেন। ফলে, মার্কেটের ট্রেডাররাও কার্যত এই স্বাভাবিক বিরতির সুযোগ নিয়েছে।
মোটের উপর, ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এটি এক সপ্তাহ আগে শেষ হওয়া উচিত ছিল, তবে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তগুলো প্রযুক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গিকে পুরোপুরিভাবে ব্যাহত করেছে। মার্কেটের ট্রেডাররা টানা তিন দিন ধরে ব্যাপকভাবে মার্কিন ডলার বিক্রি করেছে। যদি আজকের মার্কিন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল দুর্বল হয়, তাহলে ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, আগেও উল্লেখ করা হয়েছে যে বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্যের প্রবণতায় সামঞ্জস্যপূর্ণ যৌক্তিকতা নেই, তাই যদি প্রকাশিত প্রতিবেদনের ফলাফল আশানুরূপ না হলেও ডলার শক্তিশালী হয়ে উঠলে সেটি খুব একটা বিস্ময়কর হবে না।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
পাঁচ মিনিটের চার্টে, 1.2913 লেভেলের আশেপাশে একাধিক ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে পুরো দিন এই পেয়ারের মূল্যের সাইডওয়েজ মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। উভয় ক্ষেত্রেই, নতুন ট্রেডাররা শর্ট পজিশন ওপেন করতে পারতেন, তবে এই পেয়ারের মূল্য কোনবারই নিকটবর্তী টার্গেট লেভেলে পৌঁছায়নি। তবুও, এই সিগন্যালগুলো সামান্য মুনাফার সুযোগ তৈরি করেছিল।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, স্বল্পমেয়াদে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে, তবে ট্রাম্প সেটি প্রতিরোধ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। মধ্যমেয়াদে, আমরা এখনও 1.1800 লেভেলের দিকে পাউন্ডের দরপতনের সম্ভাবনা দেখছি, কারণ এটিই সবচেয়ে যৌক্তিক ফলাফল বলে মনে হচ্ছে। তবে, দৈনিক টাইমফ্রেমে প্রথমে কারেকশন সম্পন্ন হতে হবে, যেখানে ঘন্টাভিত্তিক চার্টে এই পেয়ারের মূল্যকে ট্রেন্ডলাইনের নিচে স্থিতিশীল হতে হবে। একইসাথে, ট্রাম্প যদি সবার উপর শুল্ক আরোপের নীতিমালা থেকে সরে আসেন, তাহলে মার্কেট আরও স্থিতিশীল হতে পারে।
শুক্রবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে, বিশেষ করে যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যান এবং তার নীতি কার্যকর করতে থাকেন। এছাড়াও, আজ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট রয়েছে, যা ডলারের আরও ব্যাপক বিক্রির কারণ হতে পারে।
পাঁচ মিনিটের চার্টে গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হল: 1.2164-1.2170, 1.2241-1.2270, 1.2301, 1.2372-1.2387, 1.2445, 1.2502-1.2508, 1.2547, 1.2613, 1.2680-1.2685, 1.2723, 1.2791-1.2798।
আজ যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল রিজার্ডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের ভাষণ অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে তিনি ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির বিষয়ে মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়া, নন-ফার্ম পে-রোল (NFP) প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে এবং বেকারত্বের হার সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এই তিনটি ইভেন্টের কারণে মার্কেটে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শুন পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত কৌশল হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।