BTC/USD পেয়ারের ৪-ঘণ্টার ওয়েভ স্ট্রাকচার বেশ স্পষ্ট। ফাইভ-ওয়েভের বুলিশ প্রবণতা সম্পন্ন হওয়ার পর, মার্কেটে এখন বিটকয়েনের বিয়ারিশ কারেকটিভ ফেজ শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, আমি আশা করছি না যে আগামী মাসগুলোতে বিটকয়েনের মূল্য $110,000–$115,000 লেভেলের ওপরে উঠবে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন সংবাদ বিটকয়েনের দর বৃদ্ধিকে সহায়তা করেছে, যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ, সরকার কর্তৃক ক্রিপ্টো ক্রয় এবং পেনশন ফান্ডের বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিটকয়েনের মূল্য বৃদ্ধি ঘটিয়েছে। তবে, ট্রাম্পের নীতিগুলো বিনিয়োগকারীদের দূরে সরিয়ে দিয়েছে, এবং কোনো প্রবণতাই অনির্দিষ্টকালের জন্য বুলিশ থাকতে পারে না।
২০ জানুয়ারি শুরু হওয়া ওয়েভটি কোনো ইমপালস ওয়েভের মতো মনে হচ্ছে না। বরং, এটি একটি জটিল কারেকটিভ স্ট্রাকচার, যা কয়েক মাস ধরে চলতে পারে। এই প্রথম কারেকটিভ পর্যায়ের অভ্যন্তরীণ ওয়েভ স্ট্রাকচার অত্যন্ত জটিল ও অস্পষ্ট। সাধারণত, কার্যকর ট্রেডিংয়ের জন্য ওয়েভ স্ট্রাকচার যতটা সম্ভব সহজবোধ্য ও স্পষ্ট হওয়া উচিত।
সাম্প্রতিক কয়েক দিনে, BTC/USD পেয়ারের মূল্য $10,000 কমে গেছে। এমনকি ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ভাষণ, যা সম্পূর্ণভাবে ক্রিপ্টোকারেন্সি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিটকয়েনের রিজার্ভ এবং ক্রিপ্টো ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যৎ নিয়ে দেয়া ছিল, সেটিও বিটকয়েনকে কোন সমর্থন প্রদান করতে পারেনি।
ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে, মার্কিন স্টক মার্কেট, বিটকয়েন এবং মার্কিন ডলার একসাথে দরপতনের সম্মুখীন হয়েছে। সাধারণত, ডলারের দরপতন হলে ডলার-নির্ভর অ্যাসেটের মূল্য বৃদ্ধি পায়, যার মধ্যে বিটকয়েনও অন্তর্ভুক্ত। তবে, ট্রাম্প এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করেছেন, যেখানে মার্কিন ডলার এবং বিটকয়েন উভয়ের মূল্যই মার্কিন স্টক সূচকের সঙ্গে একসাথে নিম্নমুখী রয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে, মার্কেটের ট্রেডাররা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ এড়িয়ে যাচ্ছে, কারণ ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত রয়ে গেছে। যদিও ফিন্যান্সিয়াল মার্কেটে সবসময়ই অনিশ্চয়তা থাকে, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তার মাত্রা অত্যন্ত বেশি। ট্রাম্প বৈশ্বিক নীতিগুলো পুনর্গঠন করছেন, এবং এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হবে, তা কেউই নিশ্চিতভাবে বলতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে, বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকতে পারে, যাতে তারা অস্থিতিশীল বাজার পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারে।
মূল পর্যবেক্ষণ
BTC/USD বিশ্লেষণের ভিত্তিতে, আমি এই উপসংহারে উপনীত হয়েছি যে বিটকয়েনের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আপাতত শেষ হয়েছে। সবকিছুই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে এটি একটি জটিল, বহু-মাসব্যাপী কারেকশন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। এর আগে আমি বিটকয়েন কেনার পরামর্শ দিইনি, এবং সেই পরামর্শ এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে।
ওয়েভ ৪-এর নিম্নমুখী লেভেল ব্রেক করলে এটি নিশ্চিত হবে যে বিটকয়েন একটি কারেকটিভ নিম্নমুখী প্রবণতায় প্রবেশ করেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে, আমি স্বল্পমেয়াদী টাইমফ্রেম বিশ্লেষণের মাধ্যমে শর্ট সাইডে সর্বোত্তম সুযোগগুলো দেখছি। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে $76,000 (161.8% ফিবোনাচি এক্সটেনশন) এবং $68,000 (200.0% ফিবোনাচি এক্সটেনশন) পর্যন্ত বিটকয়েনের দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার প্রত্যাশা করার আগে, আমি অন্তত তিনটি সুস্পষ্ট ও সুসংগঠিত বিয়ারিশ ওয়েভ দেখতে চাই।
হায়ার টাইমফ্রেম বিশ্লেষণে, ফাইভ-ওয়েভের বুলিশ স্ট্রাকচার দৃশ্যমান। তবে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে এটি হয় একটি কারেকটিভ পুলব্যাক গঠন করছে, অথবা এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী নিম্নমুখী ওয়েভ সাইকেলের সূচনা।
আমার বিশ্লেষণের মূল নীতিমালা:
- ওয়েভ কাঠামো সহজবোধ্য ও স্পষ্ট হওয়া উচিত। জটিল প্যাটার্নে ট্রেড করা কঠিন এবং এটি অপ্রত্যাশিতভাবে পরিবর্তিত হতে পারে।
- যদি মার্কেটের মুভমেন্টের সম্ভাবনা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকে, তাহলে মার্কেটের বাইরে থাকাই উত্তম।
- মার্কেটের মুভমেন্ট সম্পর্কে কখনোই 100% নিশ্চয়তা থাকে না। সর্বদা ডিপোজিটের সুরক্ষার জন্য স্টপ লস ব্যবহার করুন।
- ওয়েভ বিশ্লেষণকে অন্যান্য টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ও ট্রেডিং কৌশলের সাথে সমন্বয় করা যেতে পারে।