সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
সোমবার মোট আটটি গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে বলে নির্ধারিত রয়েছে। জার্মানি, ইউরোজোন, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে উৎপাদন ও পরিষেবা খাতের মার্চ মাসের প্রাথমিক ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচক (PMI) সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। পৃথকভাবে বিবেচনা করলে ট্রেডিংয়ে উপর এই সূচকগুলোর প্রভাব তুলনামূলকভাবে দুর্বল হতে পারে, কিন্তু সব মিলিয়ে আটটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। ইউরোপীয় PMI সূচকের সামান্য বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে, তবে এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো — পূর্বাভাসের তুলনায় বাস্তব ফলাফল কেমন আসে, কেবলমাত্র পরিসংখ্যানগত মানই গুরুত্বপূর্ণ নয়। যদি প্রকৃত ফলাফল পূর্ববর্তী মানের চেয়ে বেশি হলেও পূর্বাভাসের চেয়ে কম আসে, তাহলে সংশ্লিষ্ট মুদ্রার দরপতন হতে পারে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
সোমবারের ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলির বক্তব্য। তবে গত বৃহস্পতিবার ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের আর্থিক নীতিমালা সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে বেইলি অর্থনীতি, মুদ্রাস্ফীতি এবং আর্থিক নীতিমালার বিষয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন, তাই সোমবারের বক্তব্য থেকে নতুন বা গুরুত্বপূর্ণ কিছু জানতে পারার সম্ভাবনা খুবই কম। আমাদের মতে, বেইলি ট্রেডারদের নতুন কোন দিকনির্দেশনা দেবেন না। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড বর্তমানে তুলনামূলকভাবে হকিশ বা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে, যা ব্রিটিশ পাউন্ডকে সমর্থন করছে। তবে, এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে টানা তিন সপ্তাহ ধরে কোন কারেকশন ছাড়াই পাউন্ডের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের অবস্থান বা বেইলির বক্তব্য যাই হোক না কেন, এখন ব্রিটিশ মুদ্রার একটি কারেকশন বা দরপতনের প্রয়োজন রয়েছে।
উপসংহার:
সপ্তাহের প্রথম দিনের ট্রেডিংয়ে, উভয় কারেন্সি পেয়ারই (EUR/USD ও GBP/USD) বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রাখতে পারে। উভয় পেয়ারের মূল্যই অ্যাসেন্ডিং চ্যানেলের নিচে নেমে গেছে, এবং ফেডারেল রিজার্ভের বর্তমান অবস্থান ডলারকে তার আগে অযৌক্তিকভাবে হারানো মূল্য কিছুটা পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করছে। অবশ্য, কেউই জানে না যে ট্রাম্প কখন নতুন করে বাণিজ্য শুল্ক ঘোষণা করবেন, কিন্তু সেই সিদ্ধান্তগুলোও মার্কিন ডলারের অন্তহীন দরপতন ঘটাতে পারবে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত কৌশল হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।