সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
শুক্রবার তুলনামূলকভাবে বেশি সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রকাশনা নির্ধারিত থাকলেও, সেগুলোর মধ্যে কোনোটিই মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে না। অবশ্যই, কিছু প্রতিবেদন প্রকাশের পর স্বল্পমেয়াদি প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে, তবে এটি সর্বজনবিদিত যে মার্কেট এখন পুরোপুরি ট্রাম্পের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। সপ্তাহের শেষ দিনের ট্রেডিংয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত মার্কিন ডলারের মূল্যের মুভমেন্ট নির্ধারণ করবে। আর অন্যান্য কারেন্সিগুলোর মোমেন্টামও ডলারের মূল্যের মুভমেন্টের উপরই নির্ভর করছে। আজকের প্রতিবেদনের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো যুক্তরাজ্যের জিডিপি ও শিল্প উৎপাদন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের PCE সূচক এবং ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান কনজিউমার সেনটিমেন্ট ইনডেক্স বা ভোক্তা মনোভাব সূচক।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ ছাড়া অন্য কোনো মৌলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার কোনো অর্থ নেই। ডলারের দরপতন অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত চলতে পারে। আমরা ট্রেডারদের পরামর্শ দিচ্ছি যেন তারা বড় বড় দেশ ও জোটগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের শুল্ক সংক্রান্ত বক্তব্যের দিকে নিবিড় নজর রাখেন। ট্রাম্প বলেছেন, "অবিচার দূরীকরণের" উদ্দেশ্যে তার নেওয়া যেকোনো পদক্ষেপের জবাবে প্রতিক্রিয়া এলে, তা কঠোর পাল্টা ব্যবস্থা এবং নতুন শুল্কের মাধ্যমে মোকাবিলা করা হবে।
একই সময়ে, গতকাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট চীন ব্যতীত সকল দেশের জন্য ৯০ দিন বাড়তি শুল্ক আরোপ স্থগিত করেছেন, এই সময়ে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর একটি অভিন্ন 10% শুল্ক কার্যকর থাকবে। ট্রাম্পের মতে, এই সময়টি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে আমাদের উল্লেখ করা উচিত যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিংবা চীনের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। চীনের ওপর শুল্ক বাড়তেছেই, এবং বেইজিং পিছু হটবে—এমন কোনো সম্ভাবনাও নেই।
উপসংহার:
সপ্তাহের শেষ দিনের ট্রেডিংয়ে EUR/USD এবং GBP/USD এই দুইটি কারেন্সি পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে। মার্কেটে এখনো আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে, ফলে মূল্যের মুভমেন্টের পেছনে কোনো ধরনের যুক্তিসংগত কাঠামো নেই। কয়েক ঘণ্টা পরপর বাণিজ্যযুদ্ধ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হচ্ছে, আর সেগুলোর আগাম পূর্বাভাস দেওয়া বা ট্রাম্পের পরবর্তী পদক্ষেপ অনুমান করাও কার্যত অসম্ভব।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।