সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার, কোনো রকম সমস্যা ছাড়াই GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল। এর পেছনে কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণ ছিল না, এবং এমনকি দিনের শেষে ইউরোর মূল্যেরও অনেক বেশি স্থিতিশীল মুভমেন্ট দেখা গিয়েছে। তবে, ট্রাম্পের নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা এবং উইকেন্ডে যুক্তরাষ্ট্রে নির্দিষ্ট ইলেকট্রনিক পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক অব্যাহতির পূর্বঘোষণাকে অস্বীকার করার পর সোমবার থেকে ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের আরও সক্রিয় মুভমেন্ট দেখা যায়। যেমনটা দেখা যাচ্ছে, বাস্তবে কিছুই পরিবর্তন হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট একদিন এক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এবং পরদিন আবার ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন—তিনি ক্রমাগত বিশ্বব্যাপী উত্তেজনা বাড়িয়ে চলেছেন। এর ফলে, ডলারের শক্তিশালী হওয়ার বাস্তবিক কোনো কারণ নেই, যদিও মার্কেটে যেকোনো সময় একটি কারেকশন শুরু হতে পারে। শুধুমাত্র একটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে প্রতিদিন চোখ বন্ধ করে এই পেয়ার ক্রয় করা উচিৎ নয়। আমরা মনে করি, একটি সংকীর্ণ রেঞ্জের মধ্যে চলমান মুভমেন্টের তুলনায় এ ধরনের পরিস্থিতি ট্রেডারদের জন্য অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। ট্রেডারদের নির্দিষ্ট প্রবণতার প্রয়োজন—তবে সেই প্রবণতা স্থির, বোধগম্য এবং টেকনিক্যাল কারণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
সোমবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে কেবলমাত্র 1.3102–1.3107 জোনে প্রথম বাই সিগন্যালটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই সিগন্যাল গঠনের পর এই পেয়ারের মূল্য প্রায় ৮০ পিপস ঊর্ধ্বমুখী হয়, এবং তারপর বিশৃঙ্খলা শুরু হয়—সকল লেভেল ও জোন উপেক্ষিত হতে থাকে। এটি নতুন ট্রেডারদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: বর্তমানে মার্কেটে অত্যন্ত এলোমেলো ও অনিয়মিত মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং আগের তুলনায় অনেক কম টেকনিক্যাল কারণ দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
১ ঘণ্টার টাইমফ্রেমে, অনেক আগেই GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ট্রাম্প এখনও ডলারকে চাপে ফেলার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সূচনার পর থেকে আমরা আর দীর্ঘমেয়াদি দিকনির্দেশনার পূর্বাভাস দিচ্ছি না। মার্কেট এখন ট্রাম্প ও তার সিদ্ধান্তের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। ট্রাম্প নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলেই ডলার দরপতনের শিকার হচ্ছে। ট্রাম্প শুল্কের মাত্রা বৃদ্ধি করলে ডলারের আরও দরপতন হচ্ছে। এমনকি উত্তেজনা বৃদ্ধি না পেলেও মার্কেটে সাইডওয়েজ মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে, কিংবা... ডলারের মূল্য হ্রাস পাচ্ছে।
মঙ্গলবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতা অব্যাহত থাকতে পারে। আজ পাউন্ড ও ডলার কোন দিকে যাবে তা অনুমান করা প্রায় অসম্ভব। এই মুহূর্তে এই পেয়ারের মূল্য যুক্তিসঙ্গতভাবে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে, তবে কেউ জানে না যে বেইজিং, ব্রাসেলস বা ওয়াশিংটন থেকে কবে এবং কী ধরনের খবর আসবে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বর্তমানে 1.2502–1.2508, 1.2547, 1.2613, 1.2680–1.2685, 1.2723, 1.2791–1.2798, 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3145–1.3167, 1.3225, 1.3272 লেভেলগুলোতে ট্রেড করা যেতে পারে।
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে বেকারত্ব, জবলেস ক্লেইমস বা বেকারভাতা আবেদন এবং মজুরি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। যদিও এগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এসব প্রতিবেদন খুব বেশি উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন ফেলবে বলে মনে হচ্ছে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।