ইউরোর ট্রেডের বিশ্লেষণ এবং ট্রেডিংয়ের টিপস
যখন MACD সূচকটি ইতোমধ্যেই শূন্যের বেশ নিচে অবস্থান করছিল, তখন এই পেয়ারের মূল্য 1.1357 এর লেভেল টেস্ট করে—যার ফলে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনা সীমিত হয়ে পড়ে। এই কারণেই আমি ইউরো বিক্রি করিনি। এরপর দ্বিতীয়বার 1.1357 লেভেল টেস্টের সময় MACD সূচকটি ওভারসোল্ড জোনে ছিল, যার ফলে বাই সিগন্যালের পরিকল্পনা #2 বাস্তবায়িত হয় এবং এই পেয়ারের মূল্য ৩০ পিপস পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
গতকালের ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ECB) বৈঠকে পুনরায় সুদের হার কমানো হলেও তাতে ইউরোর মূল্যের খুব বেশি প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ডে তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে ইউরোজোনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উদ্ভূত গুরুতর অস্থিরতার দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে, যা মন্দার ঝুঁকি তৈরি করছে। এজন্যই সর্বসম্মতিক্রমে সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বেশিরভাগ সূচকেই দেখা যাচ্ছে যে মুদ্রাস্ফীতি ইসিবির 2%-এর লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছেছে, যদিও নতুন করে শুল্কের প্রভাব এখনও অস্পষ্ট।
মার্কেটের ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া ছিল খুবই শান্ত, যেন তারা এই ধরনের পদক্ষেপে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে অথবা এগুলোকে আর খুব একটা কার্যকর মনে করছে না। বিনিয়োগকারীরা সম্ভবত এখন বৈশ্বিক বিষয়াবলীর দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন—বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং বাকি বিশ্বের মধ্যে চলমান বাণিজ্যবিরোধের দিকে—যা বাস্তবেই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে ঝাপসা করে তুলেছে। মার্কিন বাণিজ্য নীতিমালার প্রভাব ইউরোপীয় অর্থনীতিতেও ক্রমশ বাড়ছে। নতুন করে শুল্কের হুমকি, বাণিজ্যনীতির অনিশ্চয়তা এবং সামগ্রিক ভূ-রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ইউরোজোনে বিনিয়োগ খাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে এবং ব্যবসায়িক আস্থাকে দুর্বল করে দিচ্ছে। ইসিবি এসব বাহ্যিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সব ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করছে, কিন্তু সেগুলোর কার্যকারিতা সীমিত।
আজকের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কেবলমাত্র ইতালির ট্রেড ব্যালেন্স সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা মার্কেটের ট্রেডারদের খুব একটা দৃষ্টি আকর্ষণ করবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। যেহেতু গতকাল ইসিবির সুদের হার হ্রাস মার্কেটে খুব একটা মুভমেন্ট সৃষ্টি করতে পারেনি, সেহেতু আজকের ইতালির প্রতিবেদনের প্রভাবও সম্ভবত সীমিত থাকবে।
আজ মার্কেটে কনসোলিডেশনের প্রবণতা দেখা যেতে পারে, যেখানে মূলত গতকালের রেঞ্জের মধ্যেই ছোটখাটো ওঠানামা হবে। বিনিয়োগকারীরা এখন অপেক্ষা ও পর্যবেক্ষণের অবস্থানে থাকবে, এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ কোনো অনুঘটকের জন্য প্রস্তুতি নেবে যা মার্কেটে বড় ধরনের মুভমেন্ট ঘটাতে পারে।
দৈনিক কৌশলের ক্ষেত্রে, আমি মূলত পরিকল্পনা #1 এবং #2 বাস্তবায়নের ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করব।
বাই সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: আজ যখন ইউরোর মূল্য 1.1433-এর লেভেলে বৃদ্ধির লক্ষ্যে 1.1385-এর (চার্টে সবুজ লাইন দ্বারা চিহ্নিত) লেভেলে পৌঁছাবে, তখন আপনি ইউরো কিনতে পারেন। মূল্য 1.1433-এর লেভেলে গেলে, আমি বাই পজিশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 30-35 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে ইউরোর সেল পজিশন ওপেন করব। দিনের প্রথমার্ধে ইউরোর মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ! এই পেয়ার কেনার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের উপরে রয়েছে এবং সেখান থেকে উপরের দিকে উঠতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: আজ MACD সূচকটি ওভারসোল্ড জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.1365-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রে আমি ইউরো কেনার পরিকল্পনা করছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে ঊর্ধ্বমুখী করবে। আমরা 1.1385 এবং 1.1433-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দর বৃদ্ধির প্রত্যাশা করতে পারি।
সেল সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: EUR/USD পেয়ারের মূল্য চার্টে লাল লাইন দ্বারা চিহ্নিত 1.1365-এর লেভেলে পৌঁছানোর পর আমি ইউরো বিক্রি করার পরিকল্পনা করছি। লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1328-এর লেভেল, যেখানে মূল্য পৌঁছালে আমি সেল পজিশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 20-25 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে ইউরোর বাই পজিশন ওপেন করব। আজ মূল্য দৈনিক সর্বোচ্চ লেভেল ব্রেক করে উপরের দিকে যেতে ব্যর্থ হলে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা ফিরে আসতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ! বিক্রি করার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের নিচে রয়েছে এবং শূন্যের নিচে নামতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: MACD সূচকটি ওভারবট জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.1385-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রেও আমি আজ ইউরো বিক্রি করতে যাচ্ছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে নিম্নমুখী করবে। আমরা 1.1365 এবং 1.1328-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দরপতনের আশা করতে পারি।
চার্টে কী আছে:
- হালকা সবুজ লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট ক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় সবুজ লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্দেশ করে, কারণ এই লেভেলের উপরে আরও দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।
- হালকা লাল লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট বিক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় লাল লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে, কারণ এই লেভেলের নিচে আরও দরপতনের সম্ভাবনা নেই।
- মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার সময় ওভারবট এবং ওভারসোল্ড জোন মূল্যায়নের জন্য MACD সূচক ব্যবহার করা উচিত।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
- নতুন ফরেক্স ট্রেডারদের মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মূল্যের তীব্র ওঠানামা এড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক প্রতিবেদন প্রকাশের আগে মার্কেটে এন্ট্রি না করাই উত্তম। যদি আপনি সংবাদ প্রকাশের সময় ট্রেডিং করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে লোকসানের সম্ভাবনা হ্রাসের জন্য অবশ্যই স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করুন। স্টপ-লস অর্ডার ছাড়া ট্রেডিং করলে দ্রুত আপনার সম্পূর্ণ ডিপোজিট শেষ হয়ে যেতে পারে, বিশেষত যদি আপনি অর্থ ব্যবস্থাপনার নীতিমালা উপেক্ষা করেন এবং বেশি ভলিউমে ট্রেড করেন।
- মনে রাখবেন, সফল ট্রেডিংয়ের জন্য একটি সুসংগঠিত ট্রেডিং পরিকল্পনা থাকা আবশ্যক, ঠিক যেমনটি উপরে নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে সেটি দৈনিক ভিত্তিতে ট্রেড করা ট্রেডারদের জন্য লোকসানের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।