মার্কেটে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে এবং মার্কিন ডলারের দর ইউরো ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন যে তিনি ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে বরখাস্ত করার কোনো পরিকল্পনা করছেন না। যদিও তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরও আক্রমণাত্মকভাবে সুদের হার কমানোর পদক্ষেপ না নেয়ার কারণে ব্যক্ত করেছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "কখনো না,"। "না, আমি তাকে বরখাস্ত করবো না। আমি শুধু চাই সে সুদের হার কমানোর ব্যাপারে একটু বেশি আক্রমণাত্মক চিন্তা করুক।"
ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের পরিচালক কেভিন হ্যাসেট গত শুক্রবার সাংবাদিকদের জানান, ট্রাম্প বিবেচনা করছিলেন যে তিনি পাওয়েলকে বরখাস্ত করতে পারবেন কিনা, কারণ ট্রাম্প ধারাবাহিকভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং জনসম্মুখে ফেডের সমালোচনা করছিলেন। গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট আরও একবার পাওয়েলের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন, ঠিক সেই সময় যখন ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের মূল সুদের হার এক চতুরাংশ পয়েন্ট কমিয়ে 2.25% করেছে—যা বর্তমানে ফেডের 4.25–4.5% রেঞ্জের প্রায় অর্ধেক।
ট্রাম্প বারবার অভিযোগ করেছেন যে ফেড যথেষ্ট দ্রুত গতিতে সুদের হার কমাচ্ছে না। সম্প্রতি এক ভাষণে তিনি এই সমালোচনা পুনরাবৃত্তি করেন এবং দাবি করেন যে তার মন্তব্য ঘিরে মার্কেটের যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে তা অতিরঞ্জিত হয়েছে। ট্রাম্প বলেন, "আমরা এখন মনে করি সুদের হার কমানোর সময় এসেছে, এবং আমরা চাই ফেডের চেয়ারম্যান বেশি দেরি না করে এটি যথাসময়ে করুক।"
উল্লেখ্য, পাওয়েল এবং তার সহকর্মীরা 2024 সালের শেষ কয়েক মাসে পুরো এক শতাংশ সুদের হার কমানোর পর এখন পর্যন্ত সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছেন। নীতিনির্ধারকরা এখন দেখছেন যে ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক আরোপিত শুল্ক, কর সংস্কার, নিয়ন্ত্রণ শিথিলকরণ, এবং অভিবাসন নীতির ফলে অর্থনীতি কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়।
ফেডের অধিকাংশ কর্মকর্তারা বলেছেন যে বর্তমান নীতিমালা সঠিক জায়গায় রয়েছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছুটা চাপ বজায় রাখা দরকার যাতে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকে, যা গত চার বছর ধরে 2%-এর লক্ষ্যমাত্রার ওপরে রয়েছে।
গত বছর মার্কিন অর্থনীতি 2.8% হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, তবে অর্থনীতিবিদরা এখন মনে করছেন যে আরোপিত শুল্ক 2025 সালের শেষ নাগাদ দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে মন্থর করে দিতে পারে। সাধারণত এমন পরিস্থিতিতে ফেড সুদের হার কমায় অর্থনীতিকে সমর্থন করার জন্য, তবে পাওয়েল এবং তার কয়েকজন সহকর্মী ইঙ্গিত দিয়েছেন যে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে তাদের দ্বৈত ম্যান্ডেটের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতিকে অগ্রাধিকার দিতে হতে পারে, বিশেষ করে আরোপিত শুল্কের ফলে মুদ্রাস্ফীতি আবারও বেড়ে যেতে পারে।
এছাড়া, হোয়াইট হাউজ ঘোষণা করেছে যে তারা আরোপিত শুল্ক কমানোর লক্ষ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিচ্ছে, যার ফলে মার্কিন ডলারের দর অন্যান্য মুদ্রার বিপরীতে আরও স্থিতিশীলতা দেখিয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ
ক্রেতাদের অবশ্যই এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1360 লেভেলে পুনরুদ্ধারে মনোযোগ দিতে হবে। কেবল তখনই 1.1430 লেভেল টেস্টের সম্ভাবনা তৈরি হবে। সেখান থেকে মূল্যের 1.1500 লেভেলের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত হতে পারে, যদিও মার্কেটের বড় ট্রেডারদের সমর্থন ছাড়া মূল্যের সেখানে পৌঁছানো কঠিন হতে পারে। সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.1570 এর লেভেল। যদি মূল্য কমে যায়, আমি মূল্য 1.1280 এর কাছাকাছি থাকা অবস্থায় প্রধান ক্রেতাদের সক্রিয় হওয়ার আশা করছি। যদি সেখানে ক্রয়ের আগ্রহ না থাকে, তাহলে 1.1210 এর নতুন সর্বনিম্ন বা 1.1150 থেকে লং পজিশনে এন্ট্রির কথা ভাবা যেতে পারে।
GBP/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ
পাউন্ড ক্রেতাদের এটির মূল্যকে নিকটবর্তী রেসিস্ট্যান্স 1.3300 লেভেলে পুনরুদ্ধার করতে হবে। কেবল তখনই মূল্যের 1.3350 লেভেলের দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা সম্ভব হবে, যা ব্রেক করা কঠিন হবে। সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.3416 লেভেল। যদি মূল্য কমে যায়, তাহলে বিক্রেতারা মূল্যকে 1.3240 লেভেলে পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করবে। যদি তারা সফল হয়, তাহলে মূল্য এই রেঞ্জ ব্রেক করলে ক্রেতাদের জন্য বড় আঘাত আসবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3205 লেভেল পর্যন্ত নামতে পারে, এবং সেখান থেকে 1.3165 লেভেলের দিকে দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে।