মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার, একটি সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের ট্রেডিং অব্যাহত ছিল, যা এখন কার্যত যেকোনো টাইমফ্রেমেই দৃশ্যমান এবং এক নজরেই চিহ্নিত করা যায়। স্মরণ করিয়ে দিই যে গত সপ্তাহের শুরুতে এই রেঞ্জ থেকে মূল্য স্বল্প সময়ের জন্য বেরিয়ে গিয়েছিল — স্বাভাবিকভাবেই তা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে হয়েছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রথমে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেন, পরে পরদিন সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। আমাদের মতে, এমন খবর বাস্তবে কোনো তাৎপর্য বহন করে না, কারণ ট্রাম্পের সরাসরি ফেডের ওপর হস্তক্ষেপ করার কোনো ক্ষমতা নেই। তবুও, মার্কেটের ট্রেডাররা উভয় ঘটনাতেই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, যার ফলে এই পেয়ারের মূল্য উল্লিখিত রেঞ্জ ব্রেকআউট করে বেরিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে আবার সেই রেঞ্জে ফিরে আসে। এই মুভমেন্টগুলো বাদ দিলে, তিন সপ্তাহ ধরেই এই পেয়ারের মূল্য একটি ফ্ল্যাট রেঞ্জে অবস্থান করছে। গতকালও পরিস্থিতি অপরিবর্তিত ছিল এবং ট্রেডাররা আবারও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটকে উপেক্ষা করেছে। একমাত্র উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন ছিল মার্কিন JOLTS জব ওপেনিংস বা চাকরির শূন্যপদ সংক্রান্ত প্রতিবেদন — যা প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল এসেছে, কিন্তু এটি মোটেও বিস্ময়কর ছিল না। তবে, এর ফলে ডলারের বড় ধরনের দরপতন দেখা যায়নি।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
মঙ্গলবার 5-মিনিট টাইমফ্রেমে তিনটি অভিন্ন ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। মূল্য 1.1413–1.1424 জোন থেকে তিনবার বাউন্স করেছে, তবে মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা খুবই দুর্বল ছিল, ফলে প্রতিবারই মূল্য প্রায় 30 পিপস কাঙ্ক্ষিত দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করে আবার আগের অবস্থানে ফিরে গেছে।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা বজায় রয়েছে। তবে, যদি আমরা গত সপ্তাহের শুরুতে হওয়া মুভমেন্টগুলো বাদ দিই, তাহলে দেখা যায় মার্কেটে তিন সপ্তাহ ধরে সম্পূর্ণভাবে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে। সামগ্রিকভাবে মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো মার্কিন ডলার এবং আমেরিকান অ্যাসেটের প্রতি অত্যন্ত নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছে। তবুও, যদি ট্রাম্প নিজেই বাণিজ্য সংঘাত প্রশমনের দিকে অগ্রসর হন, তাহলে ডলার কিছুটা পুনরুদ্ধার করতে পারে। তবে, এটি আদৌ ঘটবে কি না বা কবে ঘটবে — তা এখনো অজানা।
বুধবার, এই পেয়ারের মূল্য আবারও যেকোনো দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে, কারণ মার্কেটের মুভমেন্ট এখন পুরোপুরিভাবে ট্রাম্পের বক্তব্য এবং সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। আমাদের বিশ্বাস, মার্কেটে এখনো কিছুটা সময় ফ্ল্যাট ফেজ অব্যাহত থাকবে।
5-মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1091, 1.1132–1.1140, 1.1189–1.1191, 1.1275–1.1292, 1.1330, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622, 1.1666, 1.1689। বুধবার ইউরোজোনে বেশ কিছু সামষ্টিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যার মধ্যে রয়েছে জার্মানির খুচরা বিক্রয়, বেকারত্বের হার, মুদ্রাস্ফীতি এবং জিডিপি, পাশাপাশি ইউরোজোনের জিডিপি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রেও জিডিপি ও ADP কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। যদিও এগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন, তবুও আমরা দৃঢ়ভাবে ধারণা করছি যে, আজ মার্কেটের ট্রেডাররা এই সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনগুলোর প্রতি খুব একটা গুরুত্ব দেবে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।