সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
বুধবার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তবে আমরা নিশ্চিত নই যে এগুলোর ফলাফল কারেন্সি পেয়ারগুলোর মূল্যের মুভমেন্টে কোনো তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলবে কিনা। মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো অধিকাংশ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট উপেক্ষা করে চলেছে। জার্মানি থেকে প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনগুলো — যার মধ্যে খুচরা বিক্রয়, বেকারত্বের হার, মুদ্রাস্ফীতি এবং জিডিপি প্রতিবেদন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে — যদিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে, তবে এগুলো কেবলমাত্র ইউরোজোনের একটি দেশের জন্য প্রযোজ্য, যদিও দেশটি ইউরোজোনের বৃহত্তম অর্থনীতি। সেইসাথে আজ ইউরোজোনের ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকের জিডিপির প্রাথমিক অনুমান প্রকাশিত হবে, তবে ঐতিহাসিকভাবে ট্রেডাররা এই ধরনের জিডিপি প্রতিবেদনের প্রতি খুব বেশি প্রতিক্রিয়া দেখায় না। যুক্তরাষ্ট্রেও আজ জিডিপি এবং ADP কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। তারপরও, জিডিপি প্রতিবেদন উপেক্ষিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি, আর ADP-কে NFP প্রতিবেদনের "জুনিয়র ভার্সন" হিসেবে বিবেচনা করা হয় — যেটির প্রতি ট্রেডাররা তুলনামূলকভাবে অনেক কম মনোযোগ দিয়েছে। এসব প্রতিবেদনের প্রভাবে আজ মার্কেটে কিছুটা অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে, তবে দিনের শেষে যদি ইউরোর মূল্য সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যে আটকে থাকে, সেটাও বিস্ময়কর কিছু হবে না।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ ছাড়া অন্য কোনো ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট নিয়ে এখনো আলোচনা করার খুব একটা অর্থ নেই। যতদিন ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে শুল্ক আরোপ বা বিদ্যমান শুল্ক বৃদ্ধি করতে থাকবেন, ততদিন ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে। বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা বৃদ্ধি পেলে সেটি ডলারের আরও দরপতন ঘটাতে পারে — আর উত্তেজনা প্রশমনের যেকোনো ইঙ্গিত ডলারকে শক্তিশালী করতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট চীনের প্রতি তার অবস্থান কিছুটা নমনীয় করেছেন, তবে এটিকে প্রকৃত অর্থে চলমান "উত্তেজনার প্রশমন" বলা যাবে না। ট্রাম্পকে যতটুকু আমরা চিনি, তিনি চীনের ওপর শুল্ক কমানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর আবারও তা বাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
সম্প্রতি ট্রাম্প বলেছেন, তিনি চীনা পণ্যের ওপর 145% হারে শুল্ক রাখার কোনো ইচ্ছা পোষণ করেন না — এই বিবৃতি মার্কেটে সাময়িকভাবে স্বস্তি নিয়ে আসে। তবে, এর প্রতিক্রিয়ায় ডলারের দর বৃদ্ধির পাওয়ার কোনো সংকেত দেখা যায়নি। মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো স্পষ্টভাবেই বাণিজ্য উত্তেজনা হ্রাসের কোনো প্রমাণ দেখছে না এবং তাই তারা মার্কিন মুদ্রা কেনার ক্ষেত্রে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। এমনকি সোমবারেও, কোনো খবর ছাড়াই, ট্রেডাররা আবার ডলার বিক্রির পথ বেছে নিয়েছে।
উপসংহার:
সপ্তাহের তৃতীয় দিনের ট্রেডিংয়ে, উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে। ইউরোর মূল্যের ফ্ল্যাট থাকার প্রবণতা এখনো অব্যাহত থাকতে পারে, কারণ মার্কেটের ট্রেডাররা সম্পূর্ণভাবে সামষ্টিক প্রেক্ষাপটকে উপেক্ষা করছে। তাই আজকের দীর্ঘ অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রকাশনার তালিকাটি কেবল কাগজে-কলমেই চিত্তাকর্ষক দেখাচ্ছে। অন্যদিকে, পাউন্ড স্টার্লিংয়ের মূল্যের এখনো অনেক বেশি ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে — এবং তার জন্য কোনো খবরের প্রয়োজন পড়ছে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।