আজ EUR/USD পেয়ার কিছুটা পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত দিচ্ছে, তবে এটি এখনও চাপের মুখে রয়েছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতির ফলে মার্কিন ডলার শক্তিশালী হচ্ছে। সপ্তাহান্তে, সুইজারল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একটি প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছেছে, যার আওতায় শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে—যা বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনের ইঙ্গিত দেয়। এই চুক্তির অধীনে, যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের উপর শুল্ক 145% থেকে কমিয়ে 30%-এ নামিয়ে আনবে এবং চীন আমেরিকান পণ্যের উপর শুল্ক 125% থেকে কমিয়ে 10%-এ আনবে। এই অগ্রগতি মার্কেটে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য সম্পর্ক স্থিতিশীল করার দিকে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আজ ট্রেডিংয়ের জন্য ভালো সুযোগ তৈরির ক্ষেত্রে ট্রেডারদের নর্থ আমেরিকান সেশনে প্রকাশিতব্য এপ্রিল মাসের মার্কিন ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) প্রতিবেদনের দিকে নজর রাখতে হবে। অর্থনীতিবিদরা পূর্বাভাস দিচ্ছেন যে, মাসিক ভিত্তিতে মুদ্রাস্ফীতি -0.1% থেকে বেড়ে 0.3%-এ পৌঁছাতে পারে, এবং কোর CPI-ও 0.1% থেকে বেড়ে 0.3% হতে পারে। তবে বার্ষিক ভিত্তিতে এই সূচকগুলো অপরিবর্তিত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অপরদিকে, ইউরো এখনও চাপের মধ্যে রয়েছে, কারণ ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী প্রবণতার প্রতিক্রিয়ায় তাদের মুদ্রানীতির নমনীয়করণ আরও দীর্ঘায়িত করতে পারে বলে ধারণা জোরদার হচ্ছে। সম্প্রতি ইসিবি একাধিক কর্মকর্তা চলমান বাণিজ্য অনিশ্চয়তা ও মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী প্রবণতার কথা উল্লেখ করে সুদের হার আরও কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তবে, গত শুক্রবার স্ট্যানফোর্ডে ইসিবির নির্বাহী বোর্ড সদস্য ইসাবেল স্নাবেল তার বক্তব্যে কিছুটা সতর্ক অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বর্তমানে সুদের হার যথাযথ রয়েছে এবং তা নিরপেক্ষ পর্যায়ে থাকা উচিত। পাশাপাশি তিনি মাঝারি মেয়াদে মূল্যস্ফীতির ঝুঁকির কথা বলেও সতর্ক করে বলেন, যা চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে ইসিবির 2% এর লক্ষ্যমাত্রাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
ফলে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ভবিষ্যত মুভমেন্ট মূলত নির্ভর করবে বাণিজ্য আলোচনার ফলাফল, আসন্ন যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন এবং ইসিবির মুদ্রানীতির সংকেতগুলোর উপর। ট্রেডারদের এই বিষয়গুলোর দিকেই নিবিড়ভাবে দৃষ্টি দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
টেকনিক্যাল পূর্বাভাস:
যদি এই পেয়ারের মূল্য 1.1100-এর গুরুত্বপূর্ণ লেভেলের ওপরে থাকতে সক্ষম হয়, তাহলে পরবর্তী রেজিস্ট্যান্স 1.11525-এর কাছাকাছি রয়েছে, যা 1.1200-এর রাউন্ড লেভেলের দিকে মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা নির্দেশ করে। তবে, দৈনিক চার্টে রিলেটিভ স্ট্রেন্থ সূচক (RSI) নেগেটিভ টেরিটরিতে থাকায় 1.1200-এর দিকে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাছাড়া, ঘন্টাভিত্তিক ও ৪-ঘন্টার চার্টে থাকা অসসিলেটরগুলো এখনও বিয়ারিশ জোনে রয়েছে।