মার্কেট জুড়ে এখনো ইরান-ইসরায়েল শান্তি আলোচনার বিষয়টি আধিপত্য বিস্তার করছে, যা পূর্বে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে তা শুধু তেলের মূল্য নয়, অন্যান্য অ্যাসেটের মূল্যেও স্পষ্ট প্রভাব ফেলবে। তবে এটিই বিনিয়োগকারীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা একমাত্র বিষয় নয়।
ইরান ও ইসরায়েলের আলোচকরা আগামী সপ্তাহে সাক্ষাত করবেন বলে নির্ধারিত হয়েছে। সক্রিয় সামরিক সংঘাত স্থগিত থাকলেও এটি কোনো চূড়ান্ত সমাধান নয়, অর্থাৎ আলোচনা ব্যর্থ হলে অনিবার্যভাবে সংঘাত পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। আলোচনার ব্যর্থতার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য পরিস্থিতির জন্য উভয় পক্ষই নিশ্চয় প্রস্তুতি নিচ্ছে—এটা ধরে নেওয়াই নিরাপদ।
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার বিষয়টি আপাতত পেছনের সারিতে চলে গেলেও বিনিয়োগকারীরা আবারও আরেকটি অমীমাংসিত সমস্যার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে, যা ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্থাপন করেছিলেন—সেটি হচ্ছে শুল্কনীতি। এই সমস্যার এখনো নিষ্পত্তি হয়নি, এবং চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে 90 দিনের সময়সীমা ঘনিয়ে আসায় এটি আবারও সামনে চলে এসেছে। এই পরিবর্তন ডলারের এক্সচেঞ্জ রেট ও স্বর্ণের মূল্যের মুভমেন্টে প্রতিফলিত হয়েছে, যেখানে স্বর্ণ ঐতিহ্যগতভাবে অস্থিরতার সময়ে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হয়।
প্রধান মুদ্রাগুলোর বিপরীতে ডলারের এক্সচেঞ্জ রেট স্বল্প সময়ের জন্য স্থিতিশীল ছিল এবং কিছুটা পুনরুদ্ধারও করেছিল। তবে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা আবারও ডলারের অন্তর্নিহিত দুর্বলতার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে । এর ফলে, ডলার সূচক 97.75-এর শক্তিশালী সাপোর্ট লেভেলের নিচে নেমে গেছে এবং এখন 96.65-এর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এই দুর্বলতার মূল কারণগুলো অপরিবর্তিত রয়েছে: মার্কিন জিডিপির ধারাবাহিক সংকোচনের উচ্চ ঝুঁকি, যা 2022 সালের পর আবার নেতিবাচক হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই শুরু হওয়া বাণিজ্যযুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব ঘিরে অনিশ্চয়তাও বিবেচনায় নিতে হবে। এই বাণিজ্যযুদ্ধই ডলারের অন্তর্নিহিত দুর্বলতার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
আজকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রান্তিকের জিডিপির সংশোধিত ফলাফল যদি প্রত্যাশা অনুযায়ী -0.2% হয় (পূর্ববর্তী +2.4%-এর তুলনায়), তাহলে ফরেক্স মার্কেটে ডলারের ওপর চাপ আরও বাড়বে এবং ডলারের বিপরীতে ট্রেড হওয়া প্রধান মুদ্রাগুলোর দর আরও বেড়ে যেতে পারে।
আজ মার্কেট থেকে কী প্রত্যাশা করা যায়?
মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত স্থগিত থাকায় স্টক মার্কেটে স্টকের প্রতি চাহিদা স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে এই ঘটনাটি এখনো একটি উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ কারণে হিসেবে থেকে যাওয়ায় এটি মার্কেটের ওপর—বিশেষ করে ডলার ও তেলের দামের ওপর—চাপ সৃষ্টি করবে। ক্রিপ্টো টোকেন ও স্বর্ণের দর সম্ভবত ঊর্ধ্বমুখী হবে।
আজকের পূর্বাভাস:
#USDX
মার্কিন ডলারের মৌলিক দুর্বলতার পটভূমিতে ডলার সূচকের দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে। এই পরিস্থিতিতে 96.65 পর্যন্ত দরপতনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। 97.30 লেভেল বিক্রির জন্য এন্ট্রি পয়েন্ট হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
USD/JPY
এই পেয়ারের মূল্য 144.50 সাপোর্ট লেভেলের নিচে নেমে গেছে। ডলারের দুর্বলতা সামগ্রিক সাইডওয়েজ প্রবণতার সঙ্গে মিল রেখে আরও দরপতনের সম্ভাবনা তৈরি করছে। 144.30 লেভেল শর্ট পজিশন নেওয়ার জন্য একটি সম্ভাব্য এন্ট্রি পয়েন্ট হতে পারে।