বর্তমানে ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটে শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। মার্কেটের এই আশাবাদের পেছনে রয়েছে মার্কিন স্টক মার্কেটের সঙ্গে এর সংযুক্তি—যেখানে স্টকের দর রেকর্ড সর্বোচ্চ লেভেলে পৌছাচ্ছে —ফলে ডিজিটাল অ্যাসেটের আরও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
তবে মার্কেটে এই উচ্ছ্বাস দীর্ঘমেয়াদে মূল্য নির্ধারণকারী মৌলিক বিষয়গুলোকে যেন ছাপিয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মার্কিন স্টক মার্কেটের সাফল্য, যা মূলত ফেডের নমনীয় নীতিমালা ও চার্টের টেকনিক্যাল চিত্রের অগ্রগতির ওপর নির্ভরশীল, ক্রিপ্টো ইন্ডাস্ট্রিতে শুধুমাত্র পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলে ঠাকে। বরং আরও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে—ক্রিপ্টো মার্কেটের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার স্বীকৃতি এবং প্রাতিষ্ঠানিক আগ্রহের বিস্তার।
প্রাতিষ্ঠানিক আগ্রহের বিষয়ে বলতে গেলে, গতকাল Bakkt ঘোষণা দিয়েছে যে তারা $1 বিলিয়ন মূলধন সংগ্রহ করে ক্রিপ্টোকারেন্সি কিনতে চায়, যা বড় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ডিজিটাল অ্যাসেটের প্রতি আস্থা বৃদ্ধির স্পষ্ট লক্ষণ। Bakkt বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটিজ ইস্যুর মাধ্যমে এই অর্থ সংগ্রহ করতে চায়। এই মূলধন কর্পোরেট খাতের প্রয়োজনে এবং BTC ও অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি কিনে ব্যালান্স শিটে যুক্ত করার জন্য ব্যবহার করা হবে।
এই উদ্যোগটি অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী, এবং এটি Bakkt-এর নেতৃত্বের পক্ষ থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটের দীর্ঘমেয়াদি সম্ভাবনার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসের প্রতিফলন। এই পরিমাণ মূলধন সংগ্রহ করার মাধ্যমে কোম্পানিটি শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ট্রেডিং ও কাস্টডির একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে না, বরং ক্রিপ্টো অবকাঠামো গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারবে। BTC ও অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি কিনে কর্পোরেট ব্যালান্স শিটে যুক্ত করা একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত—যার মাধ্যমে Bakkt তাদের অ্যাসেটে বৈচিত্র্য আনতে পারবে, সম্ভাব্য রিটার্ন বাড়াতে পারবে এবং সরাসরি ক্রিপ্টো খাতের প্রতি আগ্রহী আরও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী আকর্ষণ করতে পারবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, Bakkt-এর এই উদ্যোগ এসেছে এমন এক সময়ে যখন প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রতি আগ্রহ বাড়ছে এবং রেগুলেটেড এক্সচেঞ্জে ট্রেডিং ভলিউমও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি একটি ইঙ্গিত হতে পারে যে ডিজিটাল অ্যাসেট মার্কেট ধীরে ধীরে পরিপক্বতার দিকে এগোচ্ছে এবং বৃহৎ বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।
ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:
বিটকয়েন (BTC): ক্রেতারা বর্তমানে বিটকয়েনের মূল্যকে $107,500 লেভেল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ট্রেড করছে, যা এটির মূল্যের $108,200-এর দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করে দিতে পারে; পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা $108,800-এর লেভেল অবস্থিত। আরও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে $109,200-এর আশেপাশের লেভেল নির্ধারণ করা যেতে পারে। যদি এই লেভেল ব্রেক করা হয়, তাহলে মার্কেটে বুলিশ প্রবণতার অব্যাহত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হবে। তবে যদি বিটকয়েনের মূল্য কমে যায়, তাহলে মূল্য $107,000 লেভেলে থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূল্য এই লেভেলের নিচে নেমে গেলে BTC-এর মূল্য দ্রুত $106,500-এর দিকে নেমে যেতে পারে, যেখানে $105,900 হচ্ছে নিম্নমুখী প্রবণতার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা।
ইথেরিয়াম (ETH): $2,460 লেভেলের উপরে স্পষ্ট কনসলিডেশন দেখা গেলে ইথেরিয়ামের মূল্যের $2,498-এর দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা $2,528 লেভেলের কাছাকাছি অবস্থিত; এই লেভেল ব্রেক করা হলে ক্রেতাদের পক্ষ থেকে নতুন করে আগ্রহ দেখা যেতে পারে। যদি ETH-এর মূল্য কমে যায়, তাহলে $2,425 লেভেলের আশেপাশে ক্রেতাদের সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূল্য এই জোনের নিচে নামলে ইথেরিয়ামের মূল্য দ্রুত $2,390 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে, যেখানে $2,355 হচ্ছে নিম্নমুখী প্রবণতার ক্ষেত্রে সর্বশেষ লক্ষ্যমাত্রা।
চার্টে কী কী আছে:
লাল লাইন: সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স জোন, যেখানে স্বল্পমেয়াদে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে বা সক্রিয়ভাবে মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
সবুজ লাইন: 50-দিনের মুভিং এভারেজ।
নীল লাইন: 100-দিনের মুভিং এভারেজ।
হালকা সবুজ লাইন: 200-দিনের মুভিং এভারেজ।
মুভিং এভারেজের সঙ্গে মূল্যের ইন্টারসেকশন বা টেস্ট অনেক সময় সাপোর্ট/রেজিস্ট্যান্স এরিয়া হিসেবে বা মার্কেটে মোমেন্টামের সূচনা হিসেবে কাজ করে।
