EUR/USD পেয়ারের 5M চার্টের বিশ্লেষণ
শুক্রবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য কোনো উল্লেখযোগ্য মুভমেন্ট দেখায়নি—বা বলা যায়, কোনো মুভমেন্টই হয়নি। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস ছিল, যা কার্যত একটি ছুটির দিন ছিল। যদিও ওই দিন, সেইসাথে শনিবার এবং রবিবার কিছু মৌলিক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তবে ট্রেডাররা এই ঘটনাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। যদি বিবেচনা করে, তবে সোমবার আমরা নতুন করে তীব্র মুভমেন্ট দেখতে পারি; অন্যথায় এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে থাকার প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
বর্তমানে EUR/USD-এর টেকনিক্যাল চিত্র বেশ স্পষ্ট। ইউরোর মূল্যের আরেক দফা বৃদ্ধির পর পেয়ারটির মূল্যের কোনো নিম্নমুখী কারেকশন দেখা যায়নি, বরং মূল্য আরও গভীর সাইডওয়েজ রেঞ্জে প্রবেশ করেছে। এই পেয়ারের মূল্যের এই ধরনের মুভমেন্ট মার্কেটে বিক্রেতার (বা ডলার ক্রেতার) অভাব নির্দেশ করে। আবারও, ট্রেডাররা এই প্রবণতা দেখিয়েছে যে তারা মার্কিন ডলারে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী নয়—এমনকি মার্কিন সামষ্টিক পরিসংখ্যানের শক্তিশালী ফলাফলও এতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। এর পেছনের কারণ হলো ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি, তার "বিগ, বিউটিফুল বিল", ইলন মাস্কের সঙ্গে দ্বন্দ, এবং অন্যান্য বিশৃঙ্খল ঘটনা, যেগুলো মার্কিন অর্থনীতিকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। আসলে সেগুলো সত্যি কিনা তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো, ট্রেডাররা এই ঘটনাগুলোকে কীভাবে দেখছে—এবং ট্রেডাররা তা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করছে।
শুক্রবার কোনো ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়নি এবং সামগ্রিকভাবে এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা 40 পয়েন্টের কম ছিল। ফলে ট্রেডারদের কোনো পজিশন ওপেন করার যৌক্তিকতা ছিল না।
COT রিপোর্ট
সর্বশেষ COT রিপোর্টটি 24 জুন প্রকাশিত হয়েছে। উপরের চার্টে দেখা যাচ্ছে, নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নেট পজিশনের সংখ্যা দীর্ঘদিন ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। 2024 সালের শেষে বিক্রেতারা অল্প সময়ের জন্য মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল, তবে দ্রুতই তা হারিয়ে ফেলে। ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ডলার কেবল দরপতনের শিকার হয়েছে। যদিও আমরা 100% নিশ্চিতভাবে বলতে পারি না যে ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকবে, তবে বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি এই ধরনের দৃশ্যপটকেই ইঙ্গিত করছে।
আমরা এখনও ইউরোর দর বৃদ্ধিকে সমর্থন করার মতো কোনো মৌলিক কারণ দেখতে পাচ্ছি না। তবে একটি বড় কারণ এখনও ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। দীর্ঘমেয়াদি নিম্নমুখী প্রবণতা এখনও বিদ্যমান রয়েছে—তবে 16 বছর ধরে চলমান প্রবণতার এখন কী গুরুত্ব রয়েছে? ট্রাম্প যদি তার বাণিজ্য যুদ্ধ বন্ধ করেন, তাহলে ডলারের দর আবার বাড়তে পারে—কিন্তু তিনি কি তা করবেন? আর করলেও কবে করবেন?
বর্তমানে, লাল ও নীল লাইন আবারও একে অপরকে অতিক্রম করেছে, যা একটি নতুন বুলিশ প্রবণতার সম্ভাবনা নির্দেশ করে। সর্বশেষ সাপ্তাহিক রিপোর্ট অনুযায়ী "নন-কমার্শিয়াল" গ্রুপে লং পজিশনের সংখ্যা 3.0k বাড়েছে, এবং শর্ট পজিশনের সংখ্যা 6.6k কমেছে। এর ফলে নেট পজিশন আরও 9.6k কনট্রাক্ট বৃদ্ধি পেয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্টের বিশ্লেষণ
ঘণ্টাভিত্তিক চার্টে প্রায় কোনো ধরনের পুলব্যাক ছাড়াই EUR/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট চলমান রয়েছে, যা ঘণ্টাভিত্তিক চার্টের ওপরে যেকোনো টাইমফ্রেমেই দেখা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত খবর ট্রেডারদের ডলার বিক্রি করতে বাধ্য করছে। এমনকি মার্কিন সামষ্টিক প্রতিবেদনের শক্তিশালী ফলাফল ডলারের ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে পারছে না। ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত নীতিমালা মার্কিন ডলারের বৈশ্বিক রিজার্ভ মুদ্রার মর্যাদাকে দুর্বল করছে। এই সপ্তাহে, বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধ আরও এক ধাপ তীব্র হতে পারে, এবং ইলন মাস্ক ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে পূর্ণমাত্রার রাজনৈতিক দ্বন্দ শুরু হতে পারে।
7 জুলাইয়ে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হল: 1.1092, 1.1147, 1.1185, 1.1234, 1.1274, 1.1362, 1.1426, 1.1534, 1.1615, 1.1666, 1.1750, 1.1846–1.1857, এবং ইচিমোকু লাইনের মধ্যে সেনকৌ স্প্যান বি (1.1642) ও কিজুন-সেন (1.1766) লাইন রয়েছে। মনে রাখতে হবে, ইচিমোকু সূচকের লাইনগুলো দিনের মধ্যে অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, যা সিগন্যাল নির্ধারণের সময় বিবেচনায় নিতে হবে।
মূল্য যদি সঠিক দিকে 15 পয়েন্ট অগ্রসর হয়, তাহলে ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করতে ভুলবেন না। এটি সিগন্যাল ভুল প্রমাণিত হলে লোকসান থেকে সুরক্ষা দেবে।
সোমবার, ইউরোপীয় ইউনিয়নে খুচরা বিক্রয় এবং জার্মান শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত স্বল্প প্রভাবসম্পন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। মার্কি অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কোনো প্রতিবেদন প্রকাশের কথা নেই। তবে শুক্রবার ও শনিবার যথেষ্ট পরিমাণে খবর প্রকাশিত হয়েছে, যা সোমবার ট্রেডারদের পুনরায় সক্রিয় করতে পারে। এসব অগ্রগতি মার্কিন ডলারের পক্ষে যাবে এমন সম্ভাবনা কম।
চার্টের উপাদানগুলোর ব্যাখ্যা:
- গাঢ় লাল লাইন – রেজিস্ট্যান্স/সাপোর্ট লেভেল, যেখানে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে। এগুলো ট্রেড সিগনালের উৎস নয়।
- কিজুন-সেন এবং সেনকৌ স্প্যান B লাইন – ইচিমোকু সূচকের লাইন, যা 4-ঘণ্টা টাইমফ্রেম থেকে 1-ঘণ্টা টাইমফ্রেমে স্থানান্তর করা হয়েছে। এগুলো শক্তিশালী লেভেল।
- হালকা লাল লাইন – মূল্য যে চূড়ান্ত পয়েন্টগুলো থেকে পূর্বে বাউন্স করেছে। এগুলো ট্রেড সিগনালের প্রদানকারী লেভেল।
- হলুদ লাইন – ট্রেন্ডলাইন, ট্রেন্ড চ্যানেল অথবা অন্যান্য টেকনিক্যাল প্যাটার্ন।
- COT চার্টের ইনডিকেটর 1 – প্রতিটি ক্যাটাগরির ট্রেডারদের নেট পজিশনের সংখ্যা নির্দেশ করে।