ইউরোর ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ এবং টিপস
যখন MACD সূচকটি ইতোমধ্যেই জিরো লাইনের বেশ উপরে উঠে গিয়েছিল তখন এই পেয়ারের মূল্য 1.1787-এর লেভেল টেস্ট করেছিল, যার ফলে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা বেশ সীমিত হয়ে পড়ে। এই কারণেই আমি ইউরো ক্রয় করিনি।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে স্বাধীনতা দিবসের ছুটির কারণে ট্রেডিং ভলিউম অত্যন্ত ছিল, যা মার্কেটকে প্রভাবিত করেছে। বর্তমানে ট্রেডাররা মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে একটি সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনার ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছে, যদিও এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি। ট্রাম্প ইতোমধ্যেই সেইসব বাণিজ্য অংশীদারদের বিরুদ্ধে নতুন করে শুল্ক আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন, যারা এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো চুক্তিতে পৌঁছায়নি, যা আলোচনার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় পক্ষের ওপর চাপ তৈরি করেছে। মার্কিন পক্ষ তাদের কঠোর অবস্থান বজায় রেখেছে। বাণিজ্য বিধিনিষেধ নমনীয় করার এবং ইউরোপীয় বাজারে মার্কিন পণ্যের প্রবেশাধিকার দেওয়ার যে দাবি করা হচ্ছে, তা কিছু ইইউ দেশের জন্য গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে, কারণ তারা তাদের জাতীয় অর্থনীতি ও উৎপাদকদের ওপর নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই আলোচনার গতি এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, কারণ ৯ জুলাইয়ের সময়সীমা দ্রুতই ঘনিয়ে আসছে।
আজ সকালে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সূচক প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জার্মানির শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন, ইউরোজোনের সেন্টিক্স বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংক্রান্ত সূচক, এবং সেইসাথে ইউরোজোনের মে মাসের খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রকাশিত হবে। এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল নিঃসন্দেহে মার্কেটে প্রভাব ফেলবে এবং ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনে এই পেয়ারের মূল্যের ওঠানামা ঘটাতে পারে। জার্মানির শিল্প উৎপাদনের ওপর বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হবে, যা ইউরোজোনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে বিবেচিত হয়। এই প্রতিবেদনের দুর্বল ফলাফল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং ইসিবিকে আরও সতর্ক মুদ্রানীতি গ্রহণে প্রণোদিত করতে পারে। সেন্টিক্স সূচক একটি নেতৃস্থানীয় অর্থনৈতিক সূচক, যা স্বল্পমেয়াদে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রবণতা মূল্যায়নে সহায়তা করবে। এই সূচকের পতন ঘটলে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে হতাশাবাদী মনোভাব এবং বিনিয়োগে হ্রাসের ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে। একই সঙ্গে, খুচরা বিক্রয় প্রতিবেদনের ফলাফল ভোক্তাদের ব্যয়ের অবস্থা প্রতিফলিত করবে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সবশেষে, জোয়াকিম নাগেলের বক্তব্যও গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করা হবে, কারণ এতে ইসিবির ভবিষ্যৎ মুদ্রানীতির ব্যাপারে কোনো ইঙ্গিত দেখা যেতে পারে।
দৈনিক কৌশলের ক্ষেত্রে, আমি মূলত পরিকল্পনা #1 এবং #2 বাস্তবায়নের ওপর নির্ভর করব।
বাই সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: আজ যখন ইউরোর মূল্য 1.1822-এর লেভেলে বৃদ্ধির লক্ষ্যে 1.1787-এর (চার্টে সবুজ লাইন দ্বারা চিহ্নিত) লেভেলে পৌঁছাবে, তখন আপনি ইউরো কিনতে পারেন। মূল্য 1.1822-এর লেভেলে গেলে, আমি লং পজিশন ক্লোজ করার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 30-35 পিপসের পুলব্যাকের উপর নির্ভর করে ইউরোর শর্ট পজিশন ওপেন করব। আজ শুধুমাত্র আসন্ন প্রতিবেদনের শক্তিশালী ফলাফল প্রকাশিত হলে এই পেয়ারের মূল্যের বুলিশ মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ! এই পেয়ার কেনার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের উপরে রয়েছে এবং সেখান থেকে উপরের দিকে উঠতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: আজ MACD সূচকটি ওভারসোল্ড জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.1763-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রে আমি ইউরো কেনার পরিকল্পনা করছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে ঊর্ধ্বমুখী করবে। আমরা 1.1787 এবং 1.1822-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দর বৃদ্ধির প্রত্যাশা করতে পারি।
সেল সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: EUR/USD পেয়ারের মূল্য চার্টে লাল লাইন দ্বারা চিহ্নিত 1.1763-এর লেভেলে পৌঁছানোর পর আমি ইউরো বিক্রি করার পরিকল্পনা করছি। লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1728-এর লেভেল, যেখানে মূল্য পৌঁছালে আমি সেল পজিশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 20-25 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে ইউরোর বাই পজিশন ওপেন করব। আজ আসন্ন প্রতিবেদনের দুর্বল ফলাফল প্রকাশিত হলে এই পেয়ারের উপর চাপ ফিরে আসতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ! বিক্রি করার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের নিচে রয়েছে এবং শূন্যের নিচে নামতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: MACD সূচকটি ওভারবট জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.1787-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রেও আমি আজ ইউরো বিক্রি করতে যাচ্ছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে নিম্নমুখী করবে। আমরা 1.1763 এবং 1.1728-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দরপতনের আশা করতে পারি।
চার্টে কী আছে:
- হালকা সবুজ লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট ক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় সবুজ লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্দেশ করে, কারণ এই লেভেলের উপরে আরও দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।
- হালকা লাল লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট বিক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় লাল লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে, কারণ এই লেভেলের নিচে আরও দরপতনের সম্ভাবনা নেই।
- মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার সময় ওভারবট এবং ওভারসোল্ড জোন মূল্যায়নের জন্য MACD সূচক ব্যবহার করা উচিত।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
- নতুন ফরেক্স ট্রেডারদের মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মূল্যের তীব্র ওঠানামা এড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক প্রতিবেদন প্রকাশের আগে মার্কেটে এন্ট্রি না করাই উত্তম। যদি আপনি সংবাদ প্রকাশের সময় ট্রেডিং করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে লোকসানের সম্ভাবনা হ্রাসের জন্য অবশ্যই স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করুন। স্টপ-লস অর্ডার ছাড়া ট্রেডিং করলে দ্রুত আপনার সম্পূর্ণ ডিপোজিট শেষ হয়ে যেতে পারে, বিশেষত যদি আপনি অর্থ ব্যবস্থাপনার নীতিমালা উপেক্ষা করেন এবং বেশি ভলিউমে ট্রেড করেন।
- মনে রাখবেন, সফল ট্রেডিংয়ের জন্য একটি সুসংগঠিত ট্রেডিং পরিকল্পনা থাকা আবশ্যক, ঠিক যেমনটি উপরে নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে সেটি দৈনিক ভিত্তিতে ট্রেড করা ট্রেডারদের জন্য লোকসানের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।