বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের খুবই সীমিত মাত্রার অস্থিরতা পরিলক্ষিত হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, ব্রিটিশ পাউন্ড এবং মার্কিন ডলারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও, আগেই যেমনটি বলা হয়েছে, মার্কেট বর্তমানে নিজের নিয়মে চলছে।
সপ্তাহের শুরুতে আমরা ইতোমধ্যেই দেখেছি যে মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও ডলারের মূল্য শক্তিশালীভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যুক্তরাজ্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন সম্পূর্ণ উপেক্ষিত হয়েছে, জেরোম পাওয়েলকে বরখাস্ত করার গুজবের পর মার্কেটে 'ঝড়' সৃষ্টি হয়েছে, এবং ব্রিটিশ বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদনের দুর্বল ফলাফলের প্রতি ট্রেডাররা সম্পূর্ণভাবে উদাসীন ছিল।
তাই, আমরা এখনও মনে করি যে, এই পেয়ারের সাম্প্রতিক দরপতন কেবলমাত্র একটি টেকনিক্যাল কারেকশন। কেন এটি হওয়া প্রয়োজন? যাতে বিনিয়োগকারীরা—বিশেষ করে মার্কেট মেকাররা—লং পজিশন থেকে কিছু প্রফিট গ্রহণ করতে পারে এবং নতুন লং পজিশন গঠন শুরু করতে পারে। আমাদের মতে, "2025 সালের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা" চলতে থাকবে। এই পেয়ারের মূল্য ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে ঊর্ধ্বমুখী হলে সেটি স্বল্পমেয়াদে ট্রেন্ড রিভার্সালের ইঙ্গিত দেবে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বৃহস্পতিবার ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে দুটি সেল সিগন্যাল গঠিত হয়। এই পেয়ারের মূল্য 1.3413–1.3421 জোন থেকে দুইবার রিবাউন্ড করে, কিন্তু কোনো উল্লেখযোগ্য মুভমেন্ট শুরু করতে ব্যর্থ হয়। এই পেয়ার 1.3413–1.3421-এর উপরে কনসোলিডেটও করতে পারেনি। ফলে, নতুন ট্রেডাররা শর্ট পজিশন ওপেন করতে পারেন, কিন্তু এর ফলে লাভ বা লোকসান কিছুই হয়নি।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক চার্টে এখনও GBP/USD পেয়ারের মূল্যের শক্তিশালী নিম্নমুখী মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে। আমাদের বিশ্বাস, এই পেয়ারের এই দরপতন নিছক একটি টেকনিক্যাল কারেকশন, কারণ মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধির পক্ষে কোনো মৌলিক কারণ বিদ্যমান নেই। তবুও, ট্রেডাররা শুধুমাত্র টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতেও ট্রেড করতে পারে, এবং এখন আমরা সেটাই দেখছি। যতক্ষণ না মূল্য ট্রেন্ডলাইনের উপরে কনসোলিডেট করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত গত ছয় মাসব্যাপী চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার জন্য কোনো টেকনিক্যাল ভিত্তি তৈরি হবে না।
শুক্রবার আবারও GBP/USD পেয়ারের দরপতন হতে পারে, কারণ সপ্তাহের শেষ দিনের ট্রেডিংয়ে এমন কোনো শক্তিশালী অনুঘটক নেই যা মার্কেটে বুলিশ বা বিয়ারিশ প্রবণতা সৃষ্টি করবে—যদি না, অবশ্যই, ট্রাম্প আবার নতুন শুল্ক ঘোষণা করেন বা "বিশবারের মতো পাওয়েলকে বরখাস্ত করেন।"
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, এখন নিম্নলিখিত লেভেলগুলোতে ট্রেডিং করা যেতে পারে: 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3458, 1.3518–1.3525, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763, 1.3814–1.3832।
শুক্রবার যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে কিছুই নেই, আর যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিতব্য একমাত্র উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন হচ্ছে ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান থেকে কনজিউমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স বা ভোক্তা মনোভাব সূচক। যদিও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক, তবে এই সূচকের প্রভাবে মার্কেটে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।