বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে "বিরতি" পরিলক্ষিত হয়েছে, যা পূর্বাভাস অনুযায়ীই ঘটেছে। বৃহস্পতিবারের সামগ্রিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি ছিল অত্যন্ত দুর্বল, যদিও ইভেন্ট ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় প্রতিবেদন প্রকাশের কথা ছিল। তবে জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে বেকারত্বের হার গত মাসের তুলনায় অপরিবর্তিত ছিল, ঠিক যেমন জার্মানির মুদ্রাস্ফীতিও অপরিবর্তিত ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে শুধুমাত্র স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এর ফলে, গতকাল মার্কেটে কার্যত কোনো বড় মুভমেন্ট দেখা যায়নি। ইউরোর মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা এখনও বিদ্যমান রয়েছে, যা চলতি সপ্তাহের সামষ্টিক ও মৌলিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ। আজ যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্ব, শ্রমবাজার ও ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা মার্কেটে একটি নতুন "ঝড়" সৃষ্টি করতে পারে। যদি এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল ডলারের জন্য ইতিবাচক হয়, তবে আজও ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ধারাবাহিকতা বজায় থাকতে পারে—যেমনটা চলতি সপ্তাহে অন্যান্য প্রতিবেদন প্রকাশের সময় দেখা গেছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে বৃহস্পতিবার এই পেয়ারের মূল্য 1.1413 এবং 1.1455-এর মধ্য অবস্থিত সঙ্কীর্ণ ফ্ল্যাট রেঞ্জে অবস্থান করেছে। এই রেঞ্জের সীমানায় চারটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল এবং প্রতিবারেই মূল্য এই রেঞ্জের বিপরীত সীমানায় পৌঁছেছে বা কাছাকাছি চলে গিয়েছে। ফলে, নতুন ট্রেডাররা তিনটি ট্রেড ওপেন করতে পারতেন, যেগুলোর প্রতিটিতেই সামান্য হলেও লাভ করা যেতো।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে আবারও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী কারেকশন শুরু হয়েছে, যার পেছনে মার্কিন–ইইউ বাণিজ্য চুক্তির খবর, মার্কিন জিডিপির শক্তিশালী ফলাফল এবং জেরোম পাওয়েলের বক্তব্য ভূমিকা রেখেছে। যেহেতু ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থানে সাম্প্রতিক সময়ে কোনো পরিবর্তন হয়নি এবং পাওয়েলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ও বাণিজ্যযুদ্ধ সংক্রান্ত বিষয়গুলো এখনও প্রাসঙ্গিক রয়েছে, তাই আমরা এখনও মাঝারি মেয়াদে ডলারের শক্তিশালী হওয়ার কোনো ভিত্তি দেখছি না। ফলে স্বল্পমেয়াদে ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি বজায় থাকতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তা অনিশ্চিত।
শুক্রবার EUR/USD পেয়ারের মূল্য উভয়দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে, কারণ আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামষ্টিক প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করবে। টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে, 1.1413 এবং 1.1455 লেভেলগুলো ট্রেডিং সিগন্যাল নির্ধারণের জন্য এখনও গুরুত্বপূর্ণ। ফ্ল্যাট রেঞ্জের এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখনো শেষ হয়নি।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1563–1.1571, 1.1655–1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908.
শুক্রবার ইউরোজোনে মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে, তবে এটি ট্রেডারদের কাছ থেকে খুব একটা মনোযোগ পাবে বলে মনে হচ্ছে না। বরং সপ্তাহের শেষ দিনের ট্রেডিংয়ের যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্ব, শ্রমবাজার এবং ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলোর দিকেই সবার দৃষ্টি থাকবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।