শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের শক্তিশালী বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়েছে, যা পুরোপুরিভাবে যৌক্তিক ছিল—যা গত সপ্তাহে মার্কেটে সৃষ্ট সব মুভমেন্টের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। মনে করিয়ে দেওয়া যাক, গত সপ্তাহের বেশিরভাগ সময় (চার দিন) দৃঢ়ভাবে ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় ছিল, কারণ প্রায় সব খবর ডলারের পক্ষে সহায়ক ছিল। এর মধ্যে ছিল যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় প্রান্তিকে শক্তিশালী জিডিপি, ডোনাল্ড ট্রাম্পের চমকপ্রদ কিন্তু লাভজনক বাণিজ্য চুক্তিসমূহ, এবং ফেডারেল রিজার্ভ বৈঠকে জেরোম পাওয়েলের হকিশ বা কঠোর অবস্থান।
শুক্রবার যখন ননফার্ম পেরোল প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এবং ট্রাম্প 60টি দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন তখন এই পুরো "তাসের ঘর" ভেঙে পড়ে। তখনই বোঝা যায় যে, যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় প্রান্তিকে যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, তার বাস্তব কোনো ভিত্তি ছিল না। মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে, আর শ্রমবাজার সঙ্কুচিত হচ্ছে। অর্থাৎ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি বা ব্যবসায় বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে নয়, বরং শুল্ক আরোপ এবং আমদানি-রপ্তানি ভারসাম্যে কৃত্রিম বিকৃতি ঘটিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রদর্শন করানো হচ্ছে।
এভাবে, বিনিয়োগকারীরা অবশেষে সেই সরল সত্যটি বুঝতে পেরেছে যা আমরা আগেই বলেছিলাম: ট্রাম্পের গৃহীত নীতিমালা কাগজে-কলমে ভালো মনে হলেও বাস্তবতা ততটা আশাব্যঞ্জক নয়।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার 5 মিনিটের টাইমফ্রেমে বেশ কয়েকটি সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, কিন্তু আমরা সেগুলো চিহ্নিত করার ব্যাপারেও আগ্রহী ছিলাম না। যুক্তরাষ্ট্রের সামষ্টিক প্রতিবেদন প্রকাশের আগে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট অত্যন্ত শান্ত ছিল, এবং কার্যত কোনো ট্রেডিং সিগন্যালও গঠিত হয়নি। ননফার্ম পেরোল প্রতিবেদন প্রকাশের আগে মার্কেটে প্রবেশ এন্ট্রির কোনো যৌক্তিকতা ছিল না। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর মার্কেটে এই পেয়ারের মূল্যের এলোমেলো মুভমেন্ট শুরু হয়, এবং ট্রেডাররা সেসময় কোনো টেকনিক্যাল লেভেলকেই গুরুত্ব দেয়নি।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, সামনে আবারও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের চলতি বছরের শুরু থেকে সৃষ্ট ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে। মার্কিন ডলারের বাজারদর "তাসের ঘরের" মতো করে ভেঙে পড়েছে। আমরা আগেই সতর্ক করেছিলাম যে, আমেরিকান মুদ্রার দীর্ঘমেয়াদি দর বৃদ্ধির কোনো মৌলিক কারণ নেই এবং ট্রাম্পের গৃহীত অবস্থানের থেকে তৈরি হওয়া "আশাবাদ"-এর ভিত্তি দুর্বল। শুক্রবারের ঘটনাপ্রবাহ আমাদের সেই মূল্যায়নই সঠিক বলে প্রমাণ করেছে।
সোমবার EUR/USD পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট করতে পারে, কারণ ট্রেডাররা এখনও শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনের ফলাফল "বিশ্লেষণ" করছে। শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের হতাশাজনক ফলাফল ছাড়াও, আমরা আরও উল্লেখ করতে চাই যে ট্রাম্প নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছেন—যার সঙ্গে বেশ কিছু দেশকে হুমকি-ধামকিও দিয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস, ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকবে।
সোমবার, 5 মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নোক্ত লেভেলগুলো বিবেচনায় রাখা যেতে পারে: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1563–1.1571, 1.1655–1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908।
সোমবার ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের প্রকাশনা বা ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তবে যেহেতু ট্রাম্প "নির্বিচারে বিভিন্ন সক্রিয় পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছেন," তাই কিছু না কিছু খবর আসার প্রত্যাশা রাখা যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।