মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার স্বল্প মাত্রার অস্থিরতার সাথে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের সাইডওয়েজ ট্রেডিং অব্যাহত ছিল। দিনের মধ্যে কেবল একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় — সেটি হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ISM পরিষেবা সংক্রান্ত PMI। আমাদের প্রত্যাশানুযায়ী, এই প্রতিবেদনটির ফলাফল পূর্বাভাসের চেয়ে দুর্বল ছিল — যা জুলাই মাসে 50.1 পয়েন্টে নেমে এসেছে। এর ফলে আমরা দুটি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি। প্রথমত, মার্কিন পরিষেবা খাতও বাণিজ্যযুদ্ধ এবং ট্রাম্পের নীতির প্রভাবে ভুগছে। দ্বিতীয়ত, ISM পরিষেবা সূচক ইতোমধ্যেই আগস্টে 50.0-এর নিচে চলে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। সামগ্রিকভাবে আমরা দেখতে পাচ্ছি: দুর্বল শ্রমবাজার, বেকারত্ব বৃদ্ধি, দুটি ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচকের পতন হচ্ছে, অথচ আরেকদিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধিও হচ্ছে। আমাদের দৃষ্টিতে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল নতুন করে ডলারের দরপতনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। মৌলিক প্রেক্ষাপটের বিষয়টি আমরা আবার পুনরাবৃত্তি করবো না – কারণ আমাদের মতে, এখনও ডলারের জন্য চরমভাবে নেতিবাচক মৌলিক প্রেক্ষাপট বিরাজ করছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
মঙ্গলবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ISM পরিষেবা PMI প্রকাশের পরই কিছুটা মুভমেন্ট দেখা গেছে। ঠিক তখনই এই পেয়ারের মূল্য একটি স্পষ্ট ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম প্রদর্শন করে। মার্কেটে সাম্প্রতিক প্রবণতার ধরন বিবেচনায়, চার্টে এমন চারটি লেভেল রয়েছে যেগুলোর মধ্যে ট্রেড করা অর্থহীন। দিনের শেষে, এই পেয়ারের মূল্য এই সমস্ত লেভেলের উপরে কনসোলিডেট করেছে, তাই আমরা এখনও ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশা করছি।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের চলতি বছরের শুরু থেকে সৃষ্ট ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মার্কিন ডলারের "তাসের ঘর" ভেঙে পড়েছে। আমরা আগেই সতর্ক করেছিলাম যে মার্কিন মুদ্রার দীর্ঘমেয়াদি দর বৃদ্ধির জন্য কোনো শক্তিশালী চালিকা শক্তি নেই, এবং ট্রাম্পের নীতিমালা ঘিরে যে "আত্মবিশ্বাস" তৈরি হয়েছিল, তা নিয়েও আমরা প্রশ্ন তুলেছিলাম। শুক্রবারের ঘটনাগুলো আমাদের অবস্থানকে সঠিক প্রমাণ করেছে।
বুধবার আবারও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম শুরু হতে পারে। সোমবার ও মঙ্গলবার বিনিয়োগকারীরা ভালোভাবেই বিশ্রাম নিয়েছে, তাই এখন সময় এসেছে মার্কিন ডলার বিক্রয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার। শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের হতাশাজনক ফলাফল ছাড়াও, উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নতুন একগুচ্ছ শুল্ক — সাথে রয়েছে নতুন দফায় হুমকি-ধামকি। এই পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি শুরু হওয়ার জন্য একটি সাপোর্ট জোন হিসেবে আমরা 1.1527–1.1571 রেঞ্জটি ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছি।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1552–1.1563–1.1571, 1.1655–1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908.
বুধবারের জন্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নে খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের কথা রয়েছে, সেইসাথে মার্কিন অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী তেমন কিছুই প্রকাশের কথা নেই। ফলে, আজ আবারও এই পেয়ারের মূল্যের স্বল্প মাত্রার অস্থিরতা বিরাজ করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।