ইউরোর ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ এবং টিপস
যখন MACD সূচকটি ইতোমধ্যেই শূন্যের অনেকটা উপরে উঠে গিয়েছিল তখন এই পেয়ারের মূল্য 1.1613-এর লেভেল টেস্ট করেছিল, যার ফলে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা সীমিত হয়ে পড়ে। এই কারণেই আমি ইউরো কিনিনি এবং সম্পূর্ণ ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট মিস করেছি।
গতকাল, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের তিনজন প্রতিনিধি একযোগে দেশটির শ্রমবাজার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এই উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা একসাথে বিবৃতি দেওয়ায় আর্থিক মহলে তাৎক্ষণিকভাবে আলোচনার সূত্রপাত হয়, এবং বিনিয়োগকারীরা তাদের কৌশল ও পূর্বাভাস পুনর্মূল্যায়ন করতে বাধ্য হন। বহুদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির প্রধান স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হওয়া শ্রমবাজারে এখন দুর্বলতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, যা ফেডকে মুদ্রানীতি নমনীয় করার বিষয়টি আরও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে বাধ্য করছে।
যে সুদের হার হ্রাস কিছুদিন আগেও অসম্ভব মনে হচ্ছিল, এখন তা বাস্তব সম্ভাবনায় পরিণত হচ্ছে। এ ধরনের পদক্ষেপ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে উদ্দীপনা জোগাতে পারে, ভোক্তা ব্যয় বাড়াতে পারে এবং ব্যক্তি ও কর্পোরেট ঋণের চাপ কমাতে পারে। মার্কিন ডলার এ খবরে তাৎক্ষণিক ও প্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। ডলারের এই দরপতন ইঙ্গিত দেয় যে, মার্কেটের ট্রেডাররা সুদের হার কমানোর সম্ভাবনাকে ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক ঝুঁকির সংকেত হিসেবে দেখছে। সামনের দিনগুলোতে ফেডের কর্মকর্তাদের নতুন বিবৃতি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনগুলোর প্রতি গভীর মনোযোগ দিতে হবে, কারণ সেগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভবিষ্যত পদক্ষেপ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে পারে।
আজকের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট রয়েছে, তবে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জার্মানি থেকে প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনের ওপর। দিনের প্রথম ভাগে দেশটির শিল্প উৎপাদন এবং বাণিজ্য ঘাটতি সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। শিল্প উৎপাদনের অবস্থা একটি দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে বিবেচিত। উৎপাদন বৃদ্ধির অর্থ হলো চাহিদা বাড়ছে, নতুন অর্ডার আসছে এবং এর ফলে সামগ্রিকভাবে জিডিপির ইতিবাচক গতি প্রতিফলিত হচ্ছে।
যদি প্রকাশিত প্রতিবেদনের ফলাফল শক্তিশালী হয়, তবে ইউরোর মূল্য আরও বেড়ে যেতে পারে, কারণ এটি জার্মান অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার এবং সম্প্রসারিতভাবে পুরো ইউরোজোনের অর্থনীতির ইতিবাচক পরিস্থিতির সংকেত দেবে। বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতিবাচক ফলাফল—যেখানে রপ্তানি আমদানির চেয়ে বেশি—প্রকাশিত হলে তা জার্মান পণ্যের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ও দেশটিতে পুঁজি প্রবাহের ইঙ্গিত দেবে। এই বিষয়গুলো ইউরোর জন্য সহায়ক। অন্যদিকে, যদি শিল্প উৎপাদনের ফলাফল দুর্বল হয় বা বাণিজ্য ঘাটতি নেতিবাচক হয়, তাহলে তা ইউরোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিনিয়োগকারীরা এটি জার্মান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে মন্থরতার সংকেত হিসেবে ব্যাখ্যা করে ইউরো বিক্রি শুরু করতে পারেন।
আজকের দৈনিক কৌশলের ক্ষেত্রে, আমি মূলত পরিকল্পনা #1 ও #2 বাস্তবায়নের উপর গুরুত্ব দিচ্ছি।
বাই সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: আজ যখন ইউরোর মূল্য 1.1731-এর লেভেলে বৃদ্ধির লক্ষ্যে 1.1685-এর (চার্টে সবুজ লাইন দ্বারা চিহ্নিত) লেভেলে পৌঁছাবে, তখন আপনি ইউরো কিনতে পারেন। মূল্য 1.1731এর লেভেলে গেলে, আমি লং পজিশন ক্লোজ করার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 30-35 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে ইউরোর শর্ট পজিশন ওপেন করব। আজ শুধুমাত্র আসন্ন প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল প্রকাশিত হলে ইউরোর মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ! এই পেয়ার কেনার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের উপরে রয়েছে এবং সেখান থেকে উপরের দিকে উঠতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: আজ MACD সূচকটি ওভারসোল্ড জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.1658-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রে আমি ইউরো কেনার পরিকল্পনা করছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে ঊর্ধ্বমুখী করবে। আমরা 1.1685 এবং 1.1731-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দর বৃদ্ধির প্রত্যাশা করতে পারি।
সেল সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: EUR/USD পেয়ারের মূল্য চার্টে লাল লাইন দ্বারা চিহ্নিত 1.1658-এর লেভেলে পৌঁছানোর পর আমি ইউরো বিক্রি করার পরিকল্পনা করছি। লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1603-এর লেভেল, যেখানে মূল্য পৌঁছালে আমি সেল পজিশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 20-25 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে ইউরোর বাই পজিশন ওপেন করব। আজ আসন্ন প্রতিবেদনের দুর্বল ফলাফল প্রকাশিত হলে এই পেয়ারের উপর চাপ ফিরে আসতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ! বিক্রি করার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের নিচে রয়েছে এবং শূন্যের নিচে নামতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: MACD সূচকটি ওভারবট জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.1685-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রেও আমি আজ ইউরো বিক্রি করতে যাচ্ছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে নিম্নমুখী করবে। আমরা 1.1658 এবং 1.1603-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দরপতনের আশা করতে পারি।
চার্টে কী আছে:
- হালকা সবুজ লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট ক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় সবুজ লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্দেশ করে, কারণ এই লেভেলের উপরে আরও দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।
- হালকা লাল লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট বিক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় লাল লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে, কারণ এই লেভেলের নিচে আরও দরপতনের সম্ভাবনা নেই।
- মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার সময় ওভারবট এবং ওভারসোল্ড জোন মূল্যায়নের জন্য MACD সূচক ব্যবহার করা উচিত।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
- নতুন ফরেক্স ট্রেডারদের মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মূল্যের তীব্র ওঠানামা এড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক প্রতিবেদন প্রকাশের আগে মার্কেটে এন্ট্রি না করাই উত্তম। যদি আপনি সংবাদ প্রকাশের সময় ট্রেডিং করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে লোকসানের সম্ভাবনা হ্রাসের জন্য অবশ্যই স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করুন। স্টপ-লস অর্ডার ছাড়া ট্রেডিং করলে দ্রুত আপনার সম্পূর্ণ ডিপোজিট শেষ হয়ে যেতে পারে, বিশেষত যদি আপনি অর্থ ব্যবস্থাপনার নীতিমালা উপেক্ষা করেন এবং বেশি ভলিউমে ট্রেড করেন।
- মনে রাখবেন, সফল ট্রেডিংয়ের জন্য একটি সুসংগঠিত ট্রেডিং পরিকল্পনা থাকা আবশ্যক, ঠিক যেমনটি উপরে নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে সেটি দৈনিক ভিত্তিতে ট্রেড করা ট্রেডারদের জন্য লোকসানের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।