সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
বুধবারের জন্য কেবল একটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে বলে নির্ধারিত রয়েছে — জার্মানির জুলাই মাসের মুদ্রাস্ফীতির দ্বিতীয় প্রাক্কলন প্রকাশিত হবে। ইইউ-তে সাধারণত দ্বিতীয় প্রাক্কলন প্রথমটির থেকে ভিন্ন হয় না, জার্মানির মুদ্রাস্ফীতির গুরুত্ব ইউরোজোনের সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতি সূচকের তুলনায় অনেক কম, এবং বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত গ্রহণে কোনো ভূমিকা রাখছে না, কারণ ব্যাংকটি মূল সুদের হার নিরপেক্ষ স্তরে নামিয়ে এনেছে। তাই, ইউরোর উপর এই প্রতিবেদনের ফলাফলের কোনো প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। আজ যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইভেন্ট ক্যালেন্ডারেও তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু নির্ধারিত নেই।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
বুধবারের ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টগুলোর মধ্যে ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির সদস্য অস্টান গুলসবী, রাফায়েল বস্টিক এবং থমাস বারকিনের বক্তব্য অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। আমরা আগেই উল্লেখ করেছি, যত বেশি ফেডারেল রিজার্ভের কর্মকর্তারা সুদের হার কমানোর প্রস্তুতির কথা প্রকাশ করবেন, ততই মার্কিন ডলারের দরপতনের সম্ভাবনা বাড়বে। তবে, এখন সবাই স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছে যে সেপ্টেম্বর মাসে মূল সুদের হার কমানো হবে।
ট্রেডারদের মূল মনোযোগ এখনো বাণিজ্য যুদ্ধের রয়েছে, যা গত সপ্তাহে নতুন মাত্রা পেয়েছে। আমরা এখনো মনে করি, শুল্ক বহাল রয়েছে যেকোনো বাণিজ্য চুক্তিই মূলত একই বাণিজ্য যুদ্ধ, যা শুধু ভিন্নভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। অবশ্য ইইউ বা জাপানের সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লাভজনক। তাই, এ ধরনের প্রতিটি নতুন চুক্তি মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধিকে প্ররোচিত করতে পারে। তবে, বৈশ্বিক ও মৌলিক দিক থেকে বিনিয়োগকারীরা নতুন বাণিজ্য কাঠামো এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের সুরক্ষাবাদী নীতির বিষয়টি মাথায় রাখবে।
উপসংহার:
সপ্তাহের তৃতীয় দিনের ট্রেডিংয়ে, উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে বিরতি দেখা যেতে পারে। আজ কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক বা মৌলিক প্রেক্ষাপট থাকবে না। তবুও, নতুন করে ডলারের দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে, তবে তা সম্ভবত সামান্য হবে। আজ শুধুমাত্র টেকনিক্যাল সিগন্যালের ভিত্তিতে ট্রেডিং করা উচিত, যে বিষয়ে আগের দুইটি প্রবন্ধে আলোচনা করা হয়েছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।