বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার, মার্কিন উৎপাদক মূল্য সূচক বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের সামান্য নিম্নমুখী কারেকশন পরিলক্ষিত হয়েছে। আমরা আগেই উল্লেখ করেছি, উৎপাদক মূল্য সূচকের (PPI) শক্তিশালী ফলাফলও সেপ্টেম্বর মাসে ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতির নমনীয়করণ সংক্রান্ত প্রত্যাশায় খুব বেশি পরিবর্তন আনতে পারবে না। সুদের হার কমানোর বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত। এটি আরেক দফা মার্কিন মুদ্রার বিয়ারিশ প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে। তবে, মার্কিন উৎপাদক মূল্য সূচকের ফলাফল ডোনাল্ড ট্রাম্প, স্কট বেসেন্ট এবং FOMC-এর "রিপাবলিকান" সদস্যদের মধ্যে আলোচিত আরও বড় পরিসরের সুদের হার কমানোর পরিকল্পনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। যতক্ষণ জেরোম পাওয়েল ফেডের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন, ততক্ষণ বৃহৎ আকারে আর্থিক নীতিমালার নমনীয়করণের প্রত্যাশার তেমন কারণ নেই। মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি ফেডকে শ্রমবাজারকে সমর্থন এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে বাধ্য করবে। তাই বর্তমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বছরের শেষ নাগাদ সর্বোচ্চ দুইবার সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা করা উচিত। ডলারের জন্য এটিও খারাপ খবর, কারণ চলতি বছর শেষের আগে আবার ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড এবং ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা কম।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বৃহস্পতিবার 5-মিনিট টাইমফ্রেমে কেবল লং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। পুরো ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনে এই পেয়ারের মূল্য 1.3574–1.3590 রেঞ্জের মধ্যে মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে, তবে শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে রিবাউন্ড করেছে, যা শর্ট পজিশন এন্ট্রির সুযোগ তৈরি করেছে। প্রায় এক ঘণ্টা পর, মূল্য 1.3518–1.3532 রেঞ্জে পৌঁছায়, যা শর্ট পজিশন ক্লোজ এবং লং পজিশন ওপেনের সুযোগ দেয়। লং ট্রেডগুলো কোনো লাভ দেয়নি, তবে ক্ষতিও হয়নি, কারণ কোনো সেল সিগন্যাল গঠিত হয়নি। শুক্রবার সকালে, মূল্য 1.3518–1.3532 এরিয়া থেকে বাউন্স করেছে, তাই লং পজিশন এখনও প্রাসঙ্গিক।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
H1 চার্টে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট থেকে বোঝা যাচ্ছে যে নিম্নমুখী প্রবণতা শেষ হয়েছে। গত দুই সপ্তাহের ঘটনাবলি বিবেচনায়, আমরা মার্কিন মুদ্রার দর বৃদ্ধির সম্ভাবনার উপর সামান্য বাজিও ধরতে চাইব না। ধারাবাহিক ও স্থিতিশীলভাবে ডলারের দরপতন অব্যাহত রয়েছে। নতুন অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন এই পেয়ারের ক্রেতাদের সুবিধা দিচ্ছে, এবং কেবল তখনই দরপতনের প্রত্যাশার কারণ তৈরি হবে যখন মূল্য এটির নিচে স্থিতিশীল হবে।
শুক্রবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3518–1.3532 রেঞ্জ ব্রেক করতে ব্যর্থ হওয়ায় ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট পুনরায় শুরু করতে পারে। সুতরাং, 1.3574–1.3590 এবং 1.3643-এর লক্ষ্যমাত্রায় লং পজিশন প্রাসঙ্গিক থাকবে। শর্ট পজিশন বিবেচনা করা উচিত কেবল তখনই, যখন H1 চার্টে এই পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করবে।
M5 চার্টে, এখন নিম্নলিখিত লেভেলগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেডিং করা যেতে পারে: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3518–1.3532, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763। শুক্রবার যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রে শিল্প উৎপাদন, খুচরা বিক্রয় এবং ভোক্তা মনোভাব সূচক সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এছাড়া, মনে করিয়ে দিই, গভীর রাতে ভ্লাদিমির পুতিন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে, ফলে এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা তীব্রভাবে বেড়ে যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
