শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার EUR/USD পেয়ারের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, যা শুধুমাত্র টেকনিক্যাল কারণে ঘটেছে। ঐদিন ইউরোপীয় ইউনিয়নে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ছিল না বা কোনো প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়নি, তবুও রাত থেকেই ইউরোর মূল্য বাড়তে শুরু করে এবং প্রায় পুরো দিনজুড়ে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছিল। ফলে বৃহস্পতিবারের দরপতনের পর, যা মার্কিন উৎপাদক মূল্য সূচকের (PPI) ফলাফলের প্রভাবে হয়েছে, আমরা বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী একটি যৌক্তিক রিবাউন্ড দেখেছি।
মনে রাখা দরকার যে, উৎপাদক মূল্য সূচকের তীব্র বৃদ্ধি ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতিগত অবস্থানের মৌলিক পরিবর্তন ঘটায়নি। হ্যাঁ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি সাম্প্রতিক মাসগুলোর তুলনায় অনেক দ্রুত হারে বেড়ে যেতে পারে। আর এর কারণ স্পষ্ট—ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি, যা এখন পর্যন্ত অর্থনীতির মাত্র প্রায় 20% অংশে প্রভাব ফেলেছে। তবে এখন ফেডের প্রধান কাজ হচ্ছে শ্রমবাজারকে সুরক্ষিত রাখা। ফেডের সবচেয়ে ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান গ্রহণের আশা করা বাস্তবসম্মত নয়, তবে সবকিছু ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, বছরের শেষ নাগাদ মূল সুদের হার দুইবার কমানো হবে। সেই অনুযায়ী, ডলারের ধারাবাহিক দরপতনের নতুন ও দৃশ্যমান কারণ তৈরি হয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে শুক্রবার একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, এবং সেটি অত্যন্ত কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। ইউরোপীয় সেশন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এই পেয়ারের মূল্য 1.1655–1.1666 এরিয়া ব্রেক করে, যার পর এটির মূল্য কেবল ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। অস্থিরতার মাত্রা খুব বেশি ছিল না, তবে ন্যূনতম প্রচেষ্টায় প্রায় 30 পিপস লাভ করা সম্ভব ছিল।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের এই বছরের শুরু থেকে গঠিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা চলমান থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। মার্কিন ডলারের "তাসের ঘর" ভেঙে পড়েছে, এবং মার্কিন গ্রিনব্যাকের পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। ফেড খুব শিগগির পুনরায় মুদ্রানীতির নমনীয়করণ শুরু করতে পারে, আর ইউক্রেন–রাশিয়া সামরিক সংঘাতের প্রশমন হলে ডলারের পরিবর্তে ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেটের চাহিদা বাড়তে পারে।
সোমবার EUR/USD পেয়ারের মূল্য ট্রেন্ডলাইন থেকে রিবাউন্ড করে ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট পুনরায় শুরু করতে পারে। ফলে আজ লং পজিশন প্রাসঙ্গিক রয়েছে, যার লক্ষ্যমাত্রা 1.1740–1.1750। শর্ট পজিশন বিবেচনা করা যেতে পারে যদি পেয়ারটির মূল্য ট্রেন্ডলাইনের নিচে কনসোলিডেট করে, সেই ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1563।
5-মিনিট টাইমফ্রেমে যেসব লেভেল বিবেচনায় রাখা উচিত: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1552–1.1563–1.1571, 1.1655–1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908। সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার বা প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা নেই, তাই আবারও এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা কম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।