মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার মূলত সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যে EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে, কারণ তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। আগের বিশ্লেষণে আমরা উল্লেখ করেছিলাম যে দিনের একমাত্র উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন — মার্কিন ডিউরেবল গুডস বা টেকসই পণ্যের অর্ডারের ফলাফল — কেবল তখনই মার্কেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে যদি মূল ফলাফল পূর্বাভাস থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে ভিন্ন হয়। বাস্তবে, জুলাইয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অর্ডার 2.8% হ্রাস পেয়েছে, যেখানে 2.5% থেকে 4.0% হ্রাস পাওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। ফলে প্রকৃত ফলাফল পূর্বাভাসের মধ্যেই থাকায় মার্কেটে কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়নি। সামগ্রিকভাবে, এই পেয়ারের মূল্য একটি নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তবে বিনিয়োগকারীরা এখনই সক্রিয়ভাবে এই পেয়ার ক্রয়ের দিকে ঝুঁকছে না। এটির কারণ হতে পারে কোনো উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না এবং ট্রেডাররা ডলারের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে এমন ইভেন্টগুলোর জন্য অপেক্ষা করছে। তবে আমাদের দৃষ্টিতে, ডলারের ভাগ্য ইতোমধ্যেই নির্ধারিত হয়েছে। যেভাবেই হোক, এই পেয়ারের মূল্য এখনো 1.1655–1.1666 এরিয়া ব্রেক করতে পারছে না, যার মানে ইউরোর সম্ভাব্য দর বৃদ্ধির প্রবণতা সাময়িকভাবে স্থগিত রয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
মঙ্গলবার 5-মিনিটের টাইমফ্রেমে দুটি যথেষ্ট মানসম্মত সেল সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে দিনের পুরোটা সময় জুড়ে অস্থিরতার মাত্রা বেশ কম ছিল। ফলে সর্বোচ্চ, কয়েক ডজন পিপস আয় করা সম্ভব ছিল। মূল্য 1.1655–1.1666 এরিয়া থেকে দুইবার রিবাউন্ড করেছিল, যা শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ দেয়। শেষ সিগন্যালটি সন্ধ্যায় গঠিত হয়েছিল এবং স্টপ লস ব্রেকইভেনে সেট করে ট্রেডটি আজকে পর্যন্ত হোল্ড করে রাখা সম্ভব ছিল।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের এই বছরের শুরু থেকে গঠিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। ফ্ল্যাট মুভমেন্ট শেষ হয়েছে এবং একটি নতুন বুলিশ প্রবণতা তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে মার্কিন ডলারের ক্ষেত্রে মৌলিক ও সামষ্টিক প্রেক্ষাপট এখনও নেতিবাচক। তাই আগের মতোই, মার্কিন মুদ্রা কেবল টেকনিক্যাল কারেকশনের উপর নির্ভর করতে পারে।
বুধবার, আবারও স্বল্প মাত্রার অস্থিরতার সাথে EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ আজকের তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নেই। এই পেয়ারের মূল্য 1.1655–1.1666 এরিয়া ব্রেক করার পর এবং সেখান থেকে রিবাউন্ড হওয়ার পর স্থানীয় পর্যায়ে 1.1571 লেভেলের দিকে দরপতনের প্রত্যাশা করা যেতে পারে।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1552–1.1563–1.1571, 1.1655–1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908।
বুধবারের ক্যালেন্ডারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোজোন—কোনো দিক থেকেই উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে না বা কোনো প্রতিবেদনও প্রকাশিত হবে না, তাই অস্থিরতার মাত্রা কম থাকার সম্ভাবনাই বেশি। এর মানে হলো, কার্যকর ট্রেডিং সিগন্যাল থাকলেও মুনাফার পরিমাণ সীমিত হতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।