সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
বৃহস্পতিবার আবারও খুব অল্প সংখ্যক সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে বলে নির্ধারিত রয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মার্কিন ISM পরিষেবা খাতের PMI প্রতিবেদন। মনে করিয়ে দিই যে ISM উৎপাদন খাতের PMI প্রতিবেদনের ফলাফল আগস্টে সম্পূর্ণভাবে হতাশাজনক না হলেও ট্রেডারদের প্রত্যাশার তুলনায় দুর্বল ফলাফল প্রদর্শন করেছে। পরিষেবা খাতের সূচকও হতাশাজনক ফলাফল প্রদর্শন করতে পারে। ইউরোজোনে আজ জুলাই মাসের খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে যেটির দিকে ট্রেডাররা সজাগ দৃষ্টি রাখবে। খুচরা বিক্রয় সূচক 0.2% হ্রাস পাওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, তবে বাস্তবে পতনের মাত্রা আরও বেশি হতে পারে, কারণ ইউরোপীয় অর্থনীতি বর্তমানে প্রায় স্থবির অবস্থায় রয়েছে। যুক্তরাজ্যে আজ নির্মাণ খাতের PMI প্রকাশিত হবে, যা ট্রেডারদের জন্য বেশ কম গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রে ADP থেকে কর্মসংস্থান এবং সাপ্তাহিক বেকারভাতা আবেদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। উল্লেখযোগ্য যে ADP থেকে প্রকাশিতব্য প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি মূলত ননফার্ম পেরোল প্রতিবেদনের প্রতিফলন ঘটায়। তবে শ্রমবাজার সম্পর্কে ট্রেডাররা ননফার্ম পেরোল প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই মূল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
বৃহস্পতিবারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট হচ্ছে FOMC-এর সদস্য অস্টান গুলসবি এবং জন উইলিয়ামসের বক্তব্য। ১৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় ফেডের বৈঠক ঘনিয়ে আসছে—সেদিন ফেডারেল রিজার্ভ আবারও মুদ্রানীতির নমনীয়করণ শুরু করতে পারে। অবশ্যই, ননফার্ম পেরোল প্রতিবেদন প্রকাশের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া শ্রেয় হবে, তবে এখন থেকেই ফেডের কর্মকর্তাদের মনোভাবের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। মনে করিয়ে দিই যে ফেডের অনেক সদস্য সেপ্টেম্বর মাসে সুদের হার কমানোর পক্ষে রয়েছেন, তবে মধ্যমেয়াদে আর কোনো সুদের হার কমানোর পক্ষে তারা নেই। ফেড কমিটির বেশিরভাগ সদস্য মনে করেন মার্কিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সর্বোচ্চ দুইবার 0.25% হারে সুদের হার কমানো প্রয়োজন।
ট্রেডারদের জন্য অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে বাণিজ্য যুদ্ধ। যেহেতু আমরা বাণিজ্যযুদ্ধ প্রশমনের কোনো ইঙ্গিত এখনও দেখছি না, তাই আমরা মধ্যমেয়াদে মার্কেটে মার্কিন ডলারের লং পজিশন ওপেন করার যৌক্তিকতা দেখছি না। গত সপ্তাহে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপর শুল্ক বাড়িয়ে 50% করেছেন। আগের মতোই, মার্কিন মুদ্রার কেবল টেকনিক্যাল কারণ বা নির্দিষ্ট কোনো ইভেন্ট/প্রতিবেদনের প্রভাবে স্বল্পমাত্রার দর বৃদ্ধির আশা করা যেতে পারে, তার বেশি কিছু নয়।
উপসংহার:
সপ্তাহের শেষ দিকের ট্রেডিংয়ে মূলত টেকনিক্যাল কারণের ভিত্তিতেই উভয় কারেন্সি পেয়ারের ট্রেড করা হবে। ইউরোর ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে 1.1655–1.1666 এরিয়ার উপর নজর রাখা উচিত। আর পাউন্ড স্টার্লিংয়ের ক্ষেত্রে 1.3413–1.3421 এরিয়ার উপর নজর রাখা উচিত।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।