শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে, যা পুরোপুরিভাবে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল। মার্কিন শ্রমবাজার এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফল কেমন হবে তা আগে থেকে অনুমান করা অসম্ভব ছিল, তাই একটাই কাজ বাকি ছিল—প্রতিবেদনগুলো প্রকাশের জন্য অপেক্ষা করা। মূলত, মার্কিন শ্রমবাজার সংক্রান্ত পরিসংখ্যানের আরেকটি দুর্বল ফলাফলের ওপর বাজি ধরা যুক্তিসঙ্গত ছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে মার্কিন অর্থনীতি ভালো করছে না, যদিও ট্রাম্প নিজে দাবি করে চলেছেন যে "সবকিছু চমৎকার চলছে।" গত কয়েক মাসে প্রায় সব সামষ্টিক সূচকই নিম্নমুখী হয়েছে—ঠিক সেই সময় যখন ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক এবং নিষেধাজ্ঞা পূর্ণভাবে কার্যকর ছিল। সুতরাং সার্বিক উপসংহার বেশ স্পষ্ট: ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ বাণিজ্য অংশীদারদের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব অর্থনীতির ক্ষেত্রেই বেশি সমস্যা সৃষ্টি করছে। স্বাভাবিকভাবে, এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন ডলার দুর্বল হতে থাকবে। শ্রমবাজার পরিস্থিতির দুর্বলতাও এ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ফেডারেল রিজার্ভ সেপ্টেম্বর থেকেই মূল সুদের হার কমাতে বাধ্য হবে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে শুক্রবার একটি উল্লেখযোগ্য ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপীয় সেশনে, মূল্য 1.1655–1.1666 এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করে, যা নতুন ট্রেডারদের লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ দেয়। মার্কিন সামষ্টিক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় যেকোনো ধরনের ঝুঁকি এড়াতে স্টপ লস ব্রেক-ইভেনে সেট করা বুদ্ধিমানের কাজ ছিল। এই পেয়ারের মূল্য সহজেই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছেছে, তবে ঐ সময় মূল্যের মুভমেন্ট অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ থাকায় এই এরিয়ার আশেপাশে গঠিত সিগন্যালগুলো বিবেচনা করার কোনো মানে ছিল না।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনো EUR/USD পেয়ারের মূল্যের এ বছরের শুরু থেকে গঠিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা ধরে রয়েছে, তবে আপাতত মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে। মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো মার্কিন ডলারের জন্য বেশ নেতিবাচক, তাই ডলারের দর বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো প্রত্যাশা করা হচ্ছে না। আমাদের দৃষ্টিতে, আগের মতোই, মার্কিন মুদ্রার মূল্যের কেবলমাত্র টেকনিক্যাল কারেকশনের ওপর নির্ভর করা যেতে পারে।
সোমবার EUR/USD পেয়ার যেকোনো দিকেই ট্রেড করতে পারে, যেহেতু মূল্য এখনো সাইডওয়েজ চ্যানেলের ভেতরে রয়েছে। শুক্রবার এই পেয়ারের মূল্যের শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সত্ত্বেও, পেয়ারটির মূল্য সামগ্রিকভাবে এখনো ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে, তাই এই চ্যানেলের উপরের সীমা থেকে নতুন করে দরপতন শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেবলমাত্র 1.1737 লেভেল ব্রেক করে মূল্য আত্মবিশ্বাসীভাবে ঊর্ধ্বমুখী হলে পুনরায় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে।
5-মিনিট টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1737–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908। সোমবার ইউরোজোন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার বা প্রতিবেদন প্রকাশের পরিকল্পনা নেই। একমাত্র উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন হলো জার্মানির শিল্প উৎপাদন, তবে এটির ফলাফল মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে এমন সম্ভাবনা কম।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।