বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে এবং এখনও নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, যদিও মুভমেন্ট কিছুটা দুর্বল রয়ে গেছে। মনে হচ্ছে মার্কেট মেকাররা সঠিক মুহূর্তের অপেক্ষায় আছে—আর সেই সময় এখনও আসেনি। মনে করিয়ে দিই, ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকার জন্য এখনও যথেষ্ট কারণ রয়েছে: সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এমন কিছু ঘটেনি যা ডলারের মূল্য বৃদ্ধিকে যৌক্তিকতা দেবে। গতকাল ইসিবি মুদ্রানীতি অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের স্পষ্ট সংকেত দিয়েছে যে নিকট ভবিষ্যতে নীতিমালা নমনীয় করা হবে না। অন্যদিকে, ফেড আগামী সপ্তাহ থেকেই মূল সুদের হার কমানো শুরু করতে পারে, এবং আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে মুদ্রানীতি ব্যাপকভাবে নমনীয় করতে পারে। যদি ইউরো ইসিবি সুদের হার হ্রাসের সময়ও বাড়তে থাকে, তবে ফেড নীতিমালা নমনীয় করলে কী হবে? তাই ইউরোপীয় মুদ্রার আরও দর বৃদ্ধির প্রত্যাশা বজায় থাকা উচিত, যদিও টেকনিক্যাল বিষয়গুলো উপেক্ষা করা যাবে না। উদাহরণস্বরূপ, ট্রেন্ডলাইনের ব্রেক করে মূল্য নিম্নমুখী হলে সেটি নতুন নিম্নমুখী মুভমেন্ট শুরু হওয়ার সংকেত হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের প্রকাশের 15 মিনিট আগে একটি শক্তিশালী বাই সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, যা এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সূচনা করে। নতুন ট্রেডাররা 1.1655–1.1666 এরিয়া থেকে বাউন্সের ফলে লং পজিশন ওপেন করতে পারতেন এবং 10 মিনিট পরেই স্টপ লস ব্রেকইভেনে সরিয়ে নিতে পারতেন। সত্যি বলতে, গতকালের সিগন্যালটি যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ ছিল কারণ এটি দুটি বড় ইভেন্টের সংযোগস্থলে গঠিত হয়েছিল—ইসিবির বৈঠক এবং মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন। তবুও, এটি থেকে বেশ ভালোই মুনাফা করার সুযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক চার্টে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের চলতি বছরের শুরু থেকে গঠিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে। মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনও মার্কিন ডলারের জন্য ব্যাপকভাবে নেতিবাচক, তাই আমরা ডলারের দর বৃদ্ধির কোনো প্রত্যাশা করছি না। আমাদের মতে, আগের মতোই, ডলারের মূল্যের কেবল টেকনিক্যাল কারেকশনের উপর নির্ভর করা যেতে পারে। তবে, ট্রেন্ডলাইনের ব্রেক করে মূল্য নিম্নমুখী হলে টেকনিক্যাল কারণে এই পেয়ারের মূল্যের নতুন নিম্নমুখী মুভমেন্ট শুরু হতে পারে।
শুক্রবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে, যেহেতু এখনও মার্কেটে বুলিশ প্রবণতা বিরাজ করছে। তবে, নতুন লং পজিশন ওপেন করার জন্য 1.1737–1.1745 জোন ব্রেকআউট করে মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়া প্রয়োজন।
5-মিনিটের চার্টে নিম্নলিখিত লেভেলগুলোতে দৃষ্টি দিন: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1737–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908।
শুক্রবার ইইউ-এ জার্মানির মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের দ্বিতীয় অনুমান প্রকাশিত হবে, যা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোক্তা মনোভাব সূচক প্রকাশিত হবে (যা তুলনামূলকভাবে কিছুটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ)।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।