বর্তমানে মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের ফলাফলের প্রতি বিটকয়েনের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে এবং মার্কেটে নতুন বুলিশ প্রবণতা শুরু হওয়ার প্রস্তুতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে, গতকাল শীর্ষস্থানীয় একটি ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে যেখানে সতর্ক করা হয়েছে যে বিটকয়েনের মার্কেট উল্লেখযোগ্যভাবে পরিপক্ব হয়ে গেছে—অর্থাৎ BTC এবং অন্যান্য অল্টকয়েনের কর্পোরেট ক্রেতাদের জন্য সহজে অর্থ উপার্জনের সময় শেষ।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিটকয়েনে বিনিয়োগ থেকে উচ্চ রিটার্ন নিশ্চিত করতে কেবল স্ট্র্যাটেজির মতো কোম্পানির বিটকয়েন কৌশল অনুকরণ করাই আর যথেষ্ট নয় । যদিও আরও বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান মার্কেটে প্রবেশ করছে, তাই মূল্যের বিশাল ওঠানামা এখন আর ততটা বাস্তবসম্মত নয়। প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এখন মূলধন বরাদ্দ করার আগে মৌলিক প্রেক্ষাপট, ঝুঁকি এবং সম্ভাব্য রিটার্ন নিয়ে অনেক বেশি বিস্তারিত বিশ্লেষণ করছে। এর মধ্যে প্রতিটি প্রজেক্টের প্রযুক্তি, নিয়ন্ত্রণ কাঠামো এবং প্রতিযোগিতামূলক অবস্থার গভীর গবেষণা অন্তর্ভুক্ত।
এদিকে, ফিডেলিটি SOL ইটিএফ (#FSOL), ক্যানারি HBAR ইটিএফ (#HBR), এবং ক্যানারি XRP ইটএফ (#XRPC) ডিপোজিটরি ট্রাস্ট অ্যান্ড ক্লিয়ারিং কর্পোরেশন (DTCC) ওয়েবসাইটে যুক্ত হয়েছে, যা নাসডাক ট্রেড ক্লিয়ারিং পরিচালনা করে। এটি ঐতিহ্যবাহী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সির বিস্তৃত গ্রহণযোগ্যতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এই ইটিএফ-গুলোকে DTCC সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করা ট্রেডিং এবং সেটেলমেন্টকে সহজতর করবে, যা ক্রিপ্টোতে আগ্রহী কিন্তু নিয়ন্ত্রিত ও স্বচ্ছ ইন্সট্রুমেন্টকে প্রাধান্য দেওয়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পারে। এটি আরও ইঙ্গিত দেয় যে ক্রিপ্টো-ভিত্তিক ইটিএফ-এর প্রতি আগ্রহ ক্রমাগত বাড়ছে। হেজ ফান্ড এবং অ্যাসেট ম্যানেজারদের মতো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ইটিএফ-কে ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগ করার একটি সুবিধাজনক উপায় হিসেবে দেখছেন, যেখানে সরাসরি মালিকানা ও কাস্টডির জটিলতা এড়ানো যায়।
DTCC-তে নতুন ETF যোগ হওয়ায় বোঝা যাচ্ছে যে নাসডাক এবং অন্যান্য প্রধান এক্সচেঞ্জ ক্রিপ্টো প্রোডাক্টের লাইনআপ বাড়াতে প্রস্তুত। এর ফলে ক্রিপ্টো মার্কেটে আরও বেশি মূলধন প্রবাহিত হতে পারে এবং এর প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নকে সমর্থন করতে পারে। এই ETF-গুলোর সূচনা পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যকরণ এবং ক্রিপ্টো মার্কেটের প্রবৃদ্ধি থেকে মুনাফা অর্জনের নতুন সুযোগ তৈরি করে, যা সবই একটি নিয়ন্ত্রিত কাঠামোর মধ্যে হবে।
ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:
বিটকয়েনের টেকনিক্যাল চিত্র:
ক্রেতারা বর্তমানে বিটকয়েনের মূল্যকে $116,000 লেভেলে পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যা সরাসরি $117,500-এর দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করবে এবং সেখান থেকে $118,600 লেভেলে পৌঁছানো সহজ হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা $119,300 এর লেভেলে; এই লেভেল ব্রেক করে মূল্য উপরের দিকে গেলে সেটি মার্কেটে বুলিশ প্রবণতা আরও শক্তিশালী হওয়ার সংকেত দেবে। দরপতনের ক্ষেত্রে, বিটকয়েনের মূল্য $114,600 লেভেলের আশেপাশে থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূল্য এই এরিয়ার নিচে নেমে গেলে BTC-এর মূল্য দ্রুত $113,200-এর দিকে নেমে আসতে পারে, আর বিয়ারিশ প্রবণতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হবে $111,900।
ইথেরিয়ামের টেকনিক্যাল চিত্র:
ইথেরিয়ামের মূল্য $4519 এর উপরে দৃঢ়ভাবে অবস্থান ধরে রাখলে সরাসরি $4601-এর দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত হবে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হবে $4723-এর লেভেল; যা ব্রেক করে মূল্য় ঊর্ধ্বমুখী হলে সেটি মার্কেটে বুলিশ প্রবণতা এবং ক্রেতাদের আগ্রহ বৃদ্ধির সংকেত দেবে। দরপতনের ক্ষেত্রে, মূল্য $4418 লেভেলের আশেপাশে থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূল্য এই জোনের নিচে নেমে গেলে ETH-এর মূল্য দ্রুত $4347-এর দিকে নামতে পারে, আর বিয়ারিশ প্রবণতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হবে $4272।
চার্টে কী কী আছে:
- লাল লাইন: সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল—যেখান থেকে মূল্য়ের মুভমেন্ট মন্থর হতে পারে বা শক্তিশালী মুভমেন্ট শুরু হতে পারে।
- সবুজ লাইন: 50-দিনের মুভিং অ্যাভারেজ
- নীল লাইন: 100-দিনের মুভিং অ্যাভারেজ
- হালকা সবুজ (লাইম): 200-দিনের মুভিং অ্যাভারেজ
- মূল্য যেকোনো মুভিং অ্যাভারেজ অতিক্রম করলে বা টেস্ট করলে তা সাধারণত মার্কেটে মুভমেন্ট থামিয়ে দেয় বা নতুন প্রবণতা সৃষ্টি হতে পারে।