মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত রয়েছে। ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে স্পষ্টভাবে একটি নতুন বুলিশ প্রবণতার গঠন দেখা যাচ্ছে, আর দৈনিক টাইমফ্রেমে 2025 সালের প্রবণতা আবারও কার্যকর হয়েছে। ডলারের সাম্প্রতিক দরপতনের পেছনে নতুন কোনো কারণ খোঁজার প্রয়োজন নেই। গতকাল প্রকাশিত চারটি কিছুটা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের কোনোটিই ইউরোর মূল্য বৃদ্ধিতে প্রভাব বিস্তার করেনি। মার্কিন খুচরা বিক্রয় এবং শিল্প উৎপাদন সূচকের ফলাফল পূর্বাভাস ছাড়িয়ে গেছে, যা এই পেয়ারের মূল্যকে নিম্নমুখী করার কথা ছিল। তবে বৈশ্বিক মৌলিক পটভূমি এখনও মার্কিন ডলারের ওপর শক্তিশালী চাপ সৃষ্টি করছে। মাঝে মাঝে ডলারের মূল্যের কারেকশন হচ্ছে, তবে সামগ্রিকভাবে আমরা আরও দরপতনেরই প্রত্যাশা করছি। আজ সন্ধ্যায় ফেডের বৈঠকের ফলাফল প্রকাশ পাবে, যা আরেকবার ডলারের দরপতনের সূচনা করতে পারে—যদিও বৈঠকটির সম্ভাব্য ফলাফল মার্কেটে আংশিকভাবে "মূল্যায়িত" হয়েছে, যেমনটি মঙ্গলবার দেখা গেছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে মঙ্গলবারের মুভমেন্ট মোটামুটি কার্যকর ছিল, তবে ট্রেডিং সিগন্যালগুলো খুব একটা মানসম্মত ছিল না। প্রথম ট্রেডিং সিগন্যালটি মার্কিন সেশনের সময় গঠিত হয়েছিল, যখন 1.1808 লেভেলের খুবই অনির্দিষ্ট ও দ্বিধাগ্রস্ত একটি ব্রেকআউট ঘটে। উল্লেখ্য যে, গতকাল ইউরোর মূল্যের শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার জন্য কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণ ছিল না। এরপর 1.1851 লেভেল আশেপাশে একটি ভুল সেল সিগন্যাল গঠিত হয়, এবং একই লেভেলে দেরিতে একটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়। ফলে মঙ্গলবারের মুভমেন্ট থেকে লাভ করা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছিল।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের চলতি বছরের শুরু থেকে গঠিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি ডলারের জন্য নেতিবাচক রয়ে গেছে, তাই আমরা এখনো ডলারের মূল্য বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছি না। আমাদের মতে, আগের মতোই, ডলারের মূল্যের কেবল টেকনিক্যাল কারেকশনের ওপর নির্ভর করা যেতে পারে। ট্রেন্ডলাইনের নিচে কনসোলিডেশন হলে নতুন করে টেকনিক্যাল কারণ দরপতন শুরু হতে পারে, তবে আপাতত এই পেয়ারের মূল্য সেই লাইনের প্রায় 100 পিপস উপরে রয়েছে।
বুধবার এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে, কারণ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিদ্যমান রয়েছে।মূল্য 1.1908-এর লক্ষ্যমাত্রার দিকে যাবে নির্ধারণ করে 1.1851 (সিগন্যালসহ) থেকে নতুন লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে করে। শর্টস প্রাসঙ্গিক হবে যদি 1.1851 লেভেল ব্রেক করে মূল্য নিম্নমুখী হয় ও সেখানে ট্রেডিং সেশন শেষ হয় তাহলে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে, যার লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1808।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1737–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988। বুধবার ইউরোজোনে ক্রিস্টিন লাগার্দের আরেকটি ভাষণ অনুষ্ঠিত হবে এবং আগস্টের মুদ্রাস্ফীতির দ্বিতীয় অনুমান প্রকাশিত হবে—দুটিই গৌণ গুরুত্বসম্পন্ন ইভেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকটি স্বল্প গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে এবং ফেডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।