শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবারও EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল এবং আজই মূল্য অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ড লাইন ব্রেক করে এটির নিচে নেমে যেতে পারে। টানা তিন দিন ধরে ইউরোর দরপতন হয়েছে, যা কিছুটা বিভ্রান্তিকর। সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের ফলাফল ও খবর ইউরোর জন্য নেতিবাচক কিংবা ডলারের জন্য বিশেষ ইতিবাচক ছিল না। গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে এই পেয়ারের দরপতন শুরু হয়, ঠিক ফেডের বৈঠকে ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান ঘোষণার পর। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দরপতন অব্যাহত ছিল, যা আংশিকভাবে যুক্তরাজ্যে নতুন করে বাজেট ও ঋণ সংকট মাথাচাড়া দেওয়ায় পাউন্ড স্টার্লিংয়ের উপর শক্তিশালী চাপের কারণে হয়েছিল। তবে এই পরিস্থিতির শীঘ্রই সমাপ্তি ঘটা উচিত। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন ডলারের প্রেক্ষাপট এমনভাবে পরিবর্তন হয়নি যা এটির মূল্যের শক্তিশালী পুনরুদ্ধারকে ন্যায্যতা দেয়। তবে, যদি এই পেয়ারের মূল্য ট্রেন্ড লাইন ব্রেক করে, বর্তমান প্রবণতা বিয়ারিশে পরিবর্তিত হয়ে যাবে এবং আরও দরপতনের সম্ভাবনা থাকবে। শুক্রবার ইউরোজোন বা যুক্তরাজ্যে উল্লেখযোগ্য কোনো প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি বা কোনো ইভেন্টও ছিল না।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে, শুক্রবার 1.1737–1.1745 লেভেলের কাছাকাছি দুটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। উভয়টিই ভুল প্রমাণিত হয়, এবং দ্বিতীয়টি মূলত কার্যকর করা উচিত ছিল না, কারণ এটি মার্কেটে সেশন শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে গঠিত হয়েছিল এবং নিরাপদে ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করার সুযোগ পাওয়া যায়নি। প্রথম সিগন্যালের ক্ষেত্রে, এই পেয়ারের মূল্য 15 পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছিল, যা ব্রেকইভেন স্টপ লস সেট করার সুযোগ দিয়েছিল।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, তবে স্বল্পমেয়াদে বিয়ারিশ প্রবণতাদেখা যেতে পারে। মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনও মার্কিন ডলারের জন্য নেতিবাচক, তাই আমরা মার্কিন মুদ্রার শক্তিশালী মূল্য বৃদ্ধির আশা করছি না। আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে, ডলারের মূল্যের কেবলমাত্র টেকনিক্যাল কারেকশনের উপর নির্ভর করা যেতে পারে। ফেডের বৈঠকের ফলাফল ডলারের পরিস্থিতিতে তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনেনি।
সোমবার EUR/USD পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ড লাইন থেকে বাউন্স করলে ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট পুনরায় শুরু হতে পারে। যদি তা না হয়, তাহলে আরও দরপতনের সম্ভাবনা থাকবে, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1655–1.1666 লেভেল। তবে যেহেতু টানা তিন দিন ধরে দরপতন হচ্ছে, তাই নতুন করে দরপতন শুরু হওয়ার আগে পুলব্যাক হয়ে মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1737–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988।
সোমবার ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বা আকর্ষণীয় প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না। তাই ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া জানানোর মতো কিছু থাকবে না, এবং মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা কম থাকতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
