মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার কার্যত সক্রিয়ভাবে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের ট্রেডই করা হয়নি। দিনের মধ্যে অন্তত ছয়টি প্রতিবেদন (সবই ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচক) প্রকাশিত হয়েছে, সঙ্গে জেরোম পাওয়েলের বক্তব্যও অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা যেমনটি দেখতে পেয়েছি, ট্রেডাররা এসব ইভেন্টের প্রতি কোনো প্রতিক্রিয়াই দেখায়নি। সুতরাং আমরা সঙ্গে সঙ্গে ধরে নিতে পারি যে সব সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানের প্রভাব দুর্বল ছিল, আর মি. পাওয়েল ট্রেডারদের নতুন কিছু জানাননি। আসলে বিষয়টি ঠিক এমনই ছিল। ইউরোপীয় অঞ্চলের ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচকগুলোর মিশ্র ফলাফল দেখা গিয়েছে, সামগ্রিকভাবে সূচকগুলোর বৃদ্ধি বা পতনের কোনো ইঙ্গিতও ছিল না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত সূচকগুলো বিনিয়োগকারীদের কাছে একেবারেই গুরুত্বহীন ছিল, কারণ যুক্তরাষ্ট্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ ISM ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচক প্রকাশিত হয়। সন্ধ্যার বক্তব্যে পাওয়েল জোর দিয়ে বলেছেন শুধু উচ্চ কর্মসংস্থান ধরে রাখা নয়, ফেডের দুটি ম্যান্ডেট পূরণ করা জরুরি। ফেডের চেয়ারম্যান উল্লেখ করেছেন যে মুদ্রাস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে এবং শ্রমবাজার পরিস্থিতি দুর্বল হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। সুতরাং, মার্কিন ডলার মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকে কোনো সহায়তা পায়নি, এবং ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে মঙ্গলবার কয়েকটি সেল সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে এগুলোর সবগুলোই একে অপরের পুনরাবৃত্তিমূলক ছিল এবং এই পেয়ারের উল্লেখযোগ্য দরপতনও হয়নি। তাই নতুন ট্রেডারদের শর্ট পজিশন ওপেন করার যৌক্তিকতা থাকলেও মঙ্গলবার আসলে মুনাফা করা অত্যন্ত কঠিন ছিল।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধির বেশ চমৎকার সম্ভাবনা রয়েছে, এবং স্বল্পমেয়াদে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি মার্কিন ডলারের জন্য নেতিবাচক ছিল, তাই আমরা এখনো মার্কিন মুদ্রার শক্তিশালী দর বৃদ্ধির আশা করছি না। আমাদের মতে, আগের মতোই কেবল মার্কিন ডলারের মূল্যের টেকনিক্যাল কারেকশনের উপর নির্ভর করা যেতে পারে, যার একটি আমরা বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার হতে দেখেছি। ফেডের বৈঠকের ফলাফল ডলারের পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন ঘটায়নি।
বুধবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট চলমান থাকতে পারে, কারণ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অক্ষুণ্ণ রয়েছে, যা ট্রেন্ডলাইন দ্বারা নিশ্চিত হয়েছে। কেবলমাত্র মূল্য এই লাইনটি ব্রেক করে নিম্নমুখী হলে আমরা ডলারের শক্তিশালী দর বৃদ্ধির আশা করব, যদিও এমনটি ঘটার জন্য কোনো মৌলিক কারণ নেই।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনা করা উচিত: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1737–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988। বুধবার যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় ইউনিয়নে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের প্রকাশনা বা ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। আর মঙ্গলবার দেখা গেছে যে এগুলো থাকলেও যে মার্কেটে মুভমেন্ট সৃষ্টি তা নিশ্চিত নয়। তাই আজ আরেকবার "ফ্ল্যাট মুভমেন্ট" হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।