বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার অপ্রত্যাশিতভাবে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের দরপতন ঘটেছে এবং এমনকি অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনের নিচে কনসোলিডেশন হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, এই পেয়ারের এই সাম্প্রতিক দরপতন কোনো সুস্পষ্ট কারণে ঘটেনি। বিশেষ করে গতকাল আমরা ইউরোর দরপতনের জন্য শক্তিশালী কোনো মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ভিত্তি দেখিনি—আর এখনো দেখছি না। তবুও, টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী এখন বিয়ারিশ প্রবণতা বিরাজ করছে, যদিও পরিস্থিতি এতটা সরল নয়।
1.1737 লেভেলে পৌঁছানোর দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোর দরপতন থেমেছে। তাই আমরা মনে করি এই দরপতন এখানেই শেষ হতে পারে। এখন ট্রেডাররা অনুকূল অবস্থানে আছেন: যদি মূল্য 1.1737-এর ব্রেক করে নিম্নমুখী হয়, তাহলে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে—বিয়ারিশ প্রবণতা শুরু হবে এবং একটি সেল সিগন্যাল গঠিত হবে। তবে, যদি এই লেভেল থেকে এই পেয়ারের মূল্য রিবাউন্ড করে, তাহলে আমরা লং পজিশনও বিবেচনা করব, কারণ এই পেয়ারের ধারাবাহিক দরপতনের জন্য প্রায় কোনো কারণ নেই।
গতকাল ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন বা মৌলিক সংবাদ প্রকাশিত হয়নি, তাই টেকনিক্যাল ও মার্কেটের সার্বিক পরিস্থিতিই এই নিম্নমুখী মুভমেন্টের কারণ।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে বুধবার কেবল একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে সেটি নতুন ট্রেডারদের জন্য যথেষ্ট মুনাফা এনে দিয়েছে। এশিয়ান এবং ইউরোপীয় সেশনের শুরুতে মূল্য 1.1808 লেভেলের কাছাকাছি থাকা অবস্থায় একটি সিগন্যাল গঠিত হয়, যেখান থেকে মূল্য 1.1737–1.1745 এরিয়ায় নেমে আসে, যেখানে দরপতন আপাতত থেমেছে। এভাবে, এই ট্রেড থেকে প্রায় 50 পিপস আয় করা যেত।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনো EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সম্ভাবনা বজায় রয়েছে, যদিও এই পেয়ারের মূল্য ট্রেন্ডলাইনের ব্রেক করে নিম্নমুখী হয়েছে। ডলারের জন্য মৌলিক ও সামষ্টিক প্রেক্ষাপট এখনো খুবই দুর্বল, তাই আমরা মার্কিন ডলারের শক্তিশালী দর বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছি না। আমাদের মতে, আগের মতোই, ডলারের মূল্যের কেবল টেকনিক্যাল কারেকশনের উপর নির্ভর করা যেতে পারে, যার একটি আমরা গত সপ্তাহে লক্ষ্য করেছি। ফেডের বৈঠকও ডলারের পরিস্থিতিতে কোনো পরিবর্তন আনেনি।
বৃহস্পতিবার পুনরায় EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হতে পারে, কারণ অধিকাংশ বিষয় এখনো ইউরোর পক্ষেই কাজ করছে—তবে যদি এই পেয়ারের মূল্য 1.1737–1.1745 এরিয়ার ব্রেক করে নিম্নমুখী হয়, তবে আরও দরপতনের সম্ভাবনা থাকবে এবং মূল্যের 1.1655–1.1666-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫-মিনিটের চার্টে নিম্নলিখিত লেভেলগুলো পর্যবেক্ষণ করুন: 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1571–1.1584, 1.1655–1.1666, 1.1737–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970–1.1988।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ডিউরেবল গুডস অর্ডার এবং দ্বিতীয় প্রান্তিকের জিডিপির তৃতীয় অনুমান সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল মার্কেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।