সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
সোমবার কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রকাশনা নির্ধারিত নেই। ইউরো এবং পাউন্ড—দু'টি মুদ্রাই গত দেড় থেকে দুই সপ্তাহের দরপতনের পর বর্তমানে পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে। আমাদের ধারণা, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও মৌলিক পটভূমি এখনও মার্কিন ডলারের জন্য অনুকূল নয়। তাই আমরা আশা করছি উভয় পেয়ারের মূল্যের বিয়ারিশ বা নিম্নমুখী প্রবণতা সমাপ্ত হবে এবং ইউরোপীয় মুদ্রাগুলোর মূল্যের আবারও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হবে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
আজকের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে মূলত প্রতিবেদন নয়, বরং বেশ কয়েকটি বক্তব্য অনুষ্ঠিত হবে। ইউরোজোনে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধি সিপোলোনে, কাজাকস, মুলার, শনাবেল এবং প্রধান অর্থনীতিবিদ ফিলিপ লেইন বক্তব্য দেবেন। আমাদের মতে, বর্তমানে ইসিবির প্রতি বিনিয়োগকারীদের কোনো প্রশ্ন নেই: আর্থিক নীতিমালার নমনীয়করণ শেষ হয়েছে এবং ইউরোজোনে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির কারণে আর সুদের হার হ্রাসের সম্ভাবনা নেই।
ফেডারেল রিজার্ভের ক্ষেত্রে কিছুটা বেশি অনিশ্চয়তা রয়েছে, তবে সেটিও সীমিত। ফেড স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ভবিষ্যতের সুদের হার সংক্রান্ত সকল সিদ্ধান্ত সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে। যদি শ্রমবাজারের দুর্বলতার কারণে বাড়তি নমনীয় পদক্ষেপের প্রয়োজন হয়, তবে তা কার্যকর করা হবে। যদি না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ফেড আবারও সুদের হার হ্রাসে বিরতি নিতে পারে। তাই কেবল নতুন শ্রমবাজার, বেকারত্ব এবং মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর ইসিবি এবং ফেডের কর্মকর্তাদের বক্তব্য থেকে নতুন ও অর্থবহ সংকেত পাওয়া সম্ভব হবে।
উপসংহার:
সপ্তাহের প্রথম দিনের ট্রেডিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশের কথা না থাকায় উভয় পেয়ারের মূল্য দুই দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে। পাউন্ড স্টার্লিংয়ের মূল্যের বিয়ারিশ প্রবণতা ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে, এবং ইউরোর ক্ষেত্রেও একই ধরনের প্রবণতা দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- EUR/USD: দৈনিক ট্রেডিংয়ের জন্য 1.1737–1.1745 এরিয়া মূল লেভেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
- GBP/USD: মূল্য ইতোমধ্যেই 1.3413–1.3421 এরিয়া ব্রেক করেছে, তাই বর্তমান পর্যায়ে নতুন লং পজিশনের জন্য পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা 1.3466–1.3475-এ নির্ধারণ করা হয়েছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।