মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্টমঙ্গলবার এবং বুধবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল, যদিও এই দরপতনের জন্য কোনো স্পষ্ট কারণ ছিল না। অনেক বিশ্লেষক মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ফ্রান্সের রাজনৈতিক সংকটকে দায়ী করছেন। তবে, তাঁরা এটি ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হচ্ছে যে কেন ব্রিটিশ পাউন্ডও দরপতনের শিকার হচ্ছে। তাহলে কি আসলেই ডলারের মূল্য বাড়ছে?
তবে মনে রাখা উচিত, সোমবার ও মঙ্গলবার—এই দুই দিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি বা কোনো ইভেন্টও ছিল না, এবং যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট পঞ্চমবারের মতো আগামী অর্থবছরের বাজেট পাস করতে ব্যর্থ হয়েছে। এটা কি আসল কারণ, যার ফলে ডলারের দর বৃদ্ধি পেয়েছে? শুধুমাত্র মার্কিন সরকারের চলমান অচলাবস্থার কারণে?
এ কারণেই আমরা এই ধরনের মুভমেন্টকে পুরোপুরি অযৌক্তিক বলে মনে করি। একমাত্র যৌক্তিক ব্যাখ্যা হতে পারে যে দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ার একটি ফ্ল্যাট রেঞ্জে ট্রেড করছে। যদি ট্রেডাররা সেই চার্টের দিকে মনোযোগ দেন, তাহলে তারা দেখতে পাবেন যে গত কয়েক মাস ধরেই পাউন্ডের মূল্য একটি সাইডওয়েজ রেঞ্জে মুভমেন্ট প্রদর্শন করছিল — ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার তুলনায় এমনটি অনেকটাই বেশি ঘটেছে— যদিও সামগ্রিকভাবে 2025 সালের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো অটুট রয়েছে। রেঞ্জবাউন্ড মার্কেটে শক্তিশালী মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক অনুঘটকের প্রয়োজন হয় না। সুতরাং, এই পেয়ারের সাম্প্রতিক দরপতন সম্পূর্ণরূপে টেকনিক্যাল কারণেও হতে পারে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের চার্টে দেখা যাচ্ছে যে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের ধরন অনেকটা EUR/USD পেয়ারের মতোই। এই পেয়ারের মূল্য ক্রমশ সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলোকে উপেক্ষা করছে। উদাহরণস্বরূপ, 1.3413 লেভেলটি পূর্বে তিনবার দরপতন রোধ করেছে — সেটাও এমন সময়ে যখন কোনো উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি বা কোনো ইভেন্ট ছিল না যেটি বিয়ারিশ মুভমেন্ট ঘটাতে পারত। তবুও গতকাল, মূল্য এই লেভেলের ব্রেক করে নিম্নমুখী হয়েছে এবং রাতভর এই লেভেলের নিচে কনসোলিডেট করেছে।
এতে মনে হচ্ছে যেন মার্কেট মেকাররা ইচ্ছাকৃতভাবে দরপতন ঘটাচ্ছে। তবুও ট্রেডিং সিগন্যালগুলো একেবারে অকার্যকর ছিল না। 1.3466–1.3475 রেঞ্জের নিচে মূল্যের কনসোলিডেশন হলে শর্ট পজিশন ওপেন করা সম্ভব ছিল। এরপর যখন মূল্য 1.3413–1.3421 লেভেলের উপরে ফিরে এসেছে, তখন সেই শর্ট পজিশনগুলো ক্লোজ করে দেওয়া যেত। রাতের বেলায় আরও নতুন শর্ট পজিশন ওপেন করে যেতে পারত — যদি আপনি তখন পর্যন্ত জেগে থেকে ট্রেড করতেন।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল
ঘন্টাভিত্তিক চার্টে দেখা যাচ্ছে যে বর্তমানে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্টের গঠন সম্পন্ন করেছে। আগেই বলা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদে ডলারের শক্তিশালী দর বৃদ্ধির মতো কোনো যথার্থ কারণ নেই। এ কারণেই আমরা মধ্যমেয়াদে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশা করছি। তবে, বর্তমান মার্কেটের সার্বিক পরিস্থিতি বেশ খাপছাড়া। ব্রিটিশ পাউন্ডের এখনো দরপতন হচ্ছে — কিন্তু এর পেছনে দৃশ্যমান কোনো শক্তিশালী কারণ নেই। এখনও আপনি লোয়ার টাইমফ্রেমে টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করতে পারেন, তবে এ কথাও সত্য যে প্রায় প্রতিটি টাইমফ্রেমেই এই পেয়ারের মূল্যের অযৌক্তিক মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে।
বুধবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে, বিশেষ করে যদি রাতেরবেলা 1.3413–1.3421 জোনটি ব্রেক করার পর এই জোনের নিচে ট্রেডিং অব্যাহত থাকে। তবে বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের ধরন অত্যন্ত অস্থির, তাই কোনো স্পষ্ট যৌক্তিক কারণ ছাড়াই ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন ঘটতে পারে। এছাড়াও, এখন দেখা যাচ্ছে যে মূল্য ধীরে ধীরে গুরুত্বপূর্ণ লেভেল ও জোনগুলোকে উপেক্ষা করা শুরু করেছে।
৫ মিনিটের চার্টে, আপনি নিচের গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো ব্যবহার করে ট্রেড করতে পারেন: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য—দুই দেশেই কোনো উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না বা কোনো ইভেন্টও অনুষ্ঠিত হবে না। একমাত্র ব্যতিক্রম হিসেবে সন্ধ্যায় ফেডারেল রিজার্ভের সর্বশেষ বৈঠকের কার্যবিবরণী প্রকাশিত হবে, যা মূলত একটি প্রথাগত প্রতিবেদন হিসেবে বিবেচিত হয় এবং সাধারণত মার্কেটে বড় ধরনের কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য চূড়ান্ত পরামর্শ:
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।