গতকাল মার্কিন ট্রেডিং সেশনের সময় বিটকয়েনের মূল্যের শক্তিশালী কারেকশন হয়েছে। $125,000 থেকে $120,500 পর্যন্ত মূল্যহ্রাস একটি সক্রিয় মুভমেন্ট ছিল, যার পরে ক্রেতারা মার্কেটে এন্ট্রি করতে শুরু করেন — যা ইঙ্গিত দেয়, এই বুলিশ প্রবণতা এখনো শেষ হয়নি।
গতকাল বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন একটি উদ্ভাবনী সুবিধা প্রবর্তনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা ক্রিপ্টো প্রকল্পগুলোর জন্য একটি "বিশেষ আইন" হবে। এই সুবিধার আওতায় স্টার্টআপরা তাৎক্ষণিক কোনো মামলা বা জরিমানার আশংকা ছাড়াই নিয়ন্ত্রক সংস্থার পর্যবেক্ষণের অধীনে ব্লকচেইন সল্যুশন পরীক্ষার সুযোগ পাবে।
এই পদক্ষেপটি মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ক্রিপ্টো ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি সম্ভাব্য মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে — যা সম্প্রতি একাধিক মামলাজনিত টানাপোড়েন ও তদন্তের কারণে বেশ উত্তপ্ত ছিল। নিয়ন্ত্রক সংস্থার ইচ্ছা হলো, এই নতুন আইনের মাধ্যমে স্টার্টআপগুলোকে নিয়ন্ত্রিত এবং তদারকিমূলক পরিবেশে তাদের প্রযুক্তি পরীক্ষার অনুমতি দিয়ে ব্লকচেইন উদ্ভাবঙ্কে উৎসাহিত করা। ধারণা করা হচ্ছে, এই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক কোম্পানিগুলোর একটি কঠোর বাছাই প্রক্রিয়া অতিক্রম করতে হবে এবং মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সঙ্গে প্রোডাক্ট টেস্টিং রোডম্যাপ সমন্বয় করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা এবং অর্থপাচার বিরোধী মানদণ্ডে অটল থাকার বিষয়টিও সুনিশ্চিত করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি এই পদক্ষেপ সফল হয়, তবে এটি বৈশ্বিক পর্যায়ে অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলর জন্য একটি মডেল হয়ে উঠতে পারে। এটি ডিজিটাল অ্যাসেট মার্কেটে উদ্ভাবন ও ভোক্তা অধিকা সুরক্ষার মধ্যে একটি ভারসাম্য তৈরি করতে সাহায্য করবে। তবে, এটি নিয়েও কিছু উদ্বেগ রয়েছে — অনেকের মতে, এই কাঠামো বেশ জটিল বা ব্যয়বহুল হতে পারে, যা বেশিরভাগ স্টার্টআপের আওতার বাইরে চলে যেতে পারে। তবুও, এটি বেশ ইতিবাচক ইঙ্গিত, যা নতুন উদ্যোক্তা ও ডেভেলপারদের ব্লকচেইন ইকোসিস্টেমে আকৃষ্ট করতে পারে এবং সাধারণ জনগণের দৃষ্টিতে ইন্ডাস্ট্রিটিকে আরও বৈধতা প্রদান করতে সহায়তা করতে পারে।
এটি স্পষ্ট যে, নতুন এই আইন DeFi, টোকেনাইজেশন এবং পেমেন্ট সার্ভিসের মতো বিষয়ে বৈধ পরীক্ষার সুযোগ এনে দেবে, যেখানে মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও বাস্তব পরিস্থিতিতে এসব সিস্টেম কীভাবে কাজ করে তা পর্যবেক্ষণ করতে পারবে।
ট্রেডিংয়ের পরামর্শ:
বিটকয়েনের টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী এখন ক্রেতারা মূলত এটির মূল্য $122,200 লেভেলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করছে, যেখান থেকে $124,300 লেভেল পৌঁছানোর পথ উন্মুক্ত হবে। সেখান থেকে বিটকয়েনের মূল্য $126,400 লেভেলে পৌঁছাতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হলো $129,100 এরিয়া। এই লেভেল ব্রেকআউট করে মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হলে সেটি মার্কেটে আরও শক্তিশালী বুলিশ প্রবণতার ইঙ্গিত দেবে। বিপরীত পরিস্থিতিতে, যদি বিটকয়েনের দরপতন ঘটে, তাহলে মূল্য $119,700 লেভেলে থাকা অবস্থায় ক্রেতারা সক্রিয় হতে পারে। মূল্য এই জোনের নিচে নেমে গেলে, বিটকয়েনের মূল্য দ্রুত $117,100 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে। $115,100 লেভেলে আরও সাপোর্ট জোন রয়েছে।
ইথেরিয়ামের ক্ষেত্রে, যদি মূল্য স্পষ্টভাবে $4,502 লেভেলের ওপরে কনসোলিডেট করে, তাহলে সরাসরি $4,582 এর দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত হবে। ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা হলো $4,651 এরিয়া। মূল্য এই লেভেলের উপরে উঠলে সেটি মার্কেটে বিস্তৃত বুলিশ প্রবণতা এবং বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাবে। যদি দরপতন হতে শুরু করে, তাহলে মূল্য $4,403 লেভেলে থাকা অবস্থায় ক্রেতারা সক্রিয় হতে পারে। এই লেভেলে নিচে দরপতন ঘটলে, ইথেরিয়ামের মূল্য দ্রুত $4,318 লাইনে নেমে যেতে পারে, যেখানে নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হলো $4,244 এরিয়া।
চার্টে যা দেখা যাচ্ছে:
- লাল লাইন: সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল, যেখানে মূল্যের স্বল্পমেয়াদি মোমেন্টাম থেমে যেতে পারে বা সক্রিয় মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে;
- সবুজ লাইন: 50-দিনের মুভিং অ্যাভারেজ;
- নীল লাইন: 100-দিনের মুভিং অ্যাভারেজ;
- হালকা সবুজ লাইন: 200-দিনের মুভিং অ্যাভারেজ।
মূল্য মুভিং অ্যাভারেজ লাইন অতিক্রম বা টেস্ট করলে তা সাধারণত মার্কেটে চলমান মুভমেন্ট থামিয়ে দেয় অথবা নতুন মোমেন্টাম সৃষ্টি করে।