শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের বিশ্লেষণ:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট
শুক্রবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের কিছুটা পুনরুদ্ধারের সংকেত পরিলক্ষিত হয়েছে, যদিও ট্রেডিং সেশনের প্রথমার্ধে আবারো এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট শুরু হওয়ার প্রচেষ্টা দেখা গেছে এবং মূল্য ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন অতিক্রম করতে ব্যর্থ হয়। সুতরাং, নিম্নমুখী প্রবণতা এখনো কার্যকর রয়েছে, যদিও এটি সম্পূর্ণরূপে অযৌক্তিক।
আসলে এক সপ্তাহ আগেই ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তখনও মার্কিন ডলারের পুনরায় দরপতন হওয়ার জন্য যথেষ্ট কারণ ছিল। গত সপ্তাহে সেই কারণগুলোর প্রভাব আরও বেড়েছে, বিশেষত ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক চীনের বিরুদ্ধে নতুন করে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করার পর—যা বছরের শুরুতে ডলারের দরপতনের জন্য একটি মূল কারণ ছিল।
এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থানও ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকির তুলনায় পেছনে হটে গেছে। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কার্যক্রম আংশিকভাবে বন্ধ রয়েছে এবং ফেডারেল রিজার্ভ ভবিষ্যতেও সুদের হার কমাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে, যা ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা ব্যাংক অব ইংল্যান্ড-এর অবস্থানের ঠিক বিপরীত।
সে কারণে, বর্তমানে ডলারের আরও দর বৃদ্ধির জন্য কোনো যৌক্তিকতা নেই।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার ইউরোপীয় সেশনের সময় ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে একটি শক্তিশালী বাই সিগন্যাল গঠিত হয়। এই পেয়ারের মূল্য যথাযথভাবে 1.3259 লেভেল থেকে বাউন্স করে এবং এরপর ৮০–৯০ পিপস বৃদ্ধি পেয়ে 1.3329–1.3331 জোনের ওপরে কনসোলিডেশন করে।
শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে নতুন ট্রেডাররা তাদের ট্রেড মুনাফার সাথে কোজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। আজ 1.3329–1.3331 জোন থেকে বাউন্স হলে আবারও লং পজিশনে এন্ট্রির একটি সুযোগ পাওয়া যেতে পারে।
সোমবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনও GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদি ডলারের মূল্য বৃদ্ধির জন্য কোনো শক্তিশালী কারণ নেই। মধ্যমেয়াদে আমরা এখনো এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশা করছি। তবে বর্তমানে মার্কেটে খুব অদ্ভুত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পাউন্ডের দরপতন হচ্ছে, কিন্তু এর পেছনে কোনো স্পষ্ট কারণ নেই। টেকনিক্যাল কৌশলগুলো অনেকটাই লোয়ার টাইমফ্রেমে প্রযোজ্য থাকলেও, সকল টাইমফ্রেমেই বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টকে অযৌক্তিক বলে মনে হচ্ছে।
সোমবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে, কারণ শুক্রবার এই পেয়ারের মূল্য 1.3329–1.3331 জোনটি ব্রেক করেছিল। এই এরিয়া থেকে বাউন্স হলে লং পজিশনের জন্য একটি সুযোগ সৃষ্টি হবে, যেখানে মূল্যের 1.3413–1.3421-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। তবে এই পেয়ারের মূল্য এই জোনের ওপরে অবস্থান ধরে রাখতে ব্যর্থ হলে শর্ট পজিশন গ্রহণযোগ্য হতে পারে, যেখানে মূল্যের 1.3259 লেভেলের দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য নিচের লেভেলগুলো পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763।
সোমবার যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না বা কোনো ইভেন্টও নির্ধারিত নেই, তাই আজ মার্কেটে সীমিত ভোলাটিলিটি দেখা যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।