বুধবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
EUR/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট
বুধবার, EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল। গতকাল উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলোর মধ্যে ছিল মার্কিন-চীন সম্পর্কের আরও অবনতি এবং ইউরোজোনের শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন, যেটির ফলাফল দুর্বল হলেও প্রত্যাশার চেয়ে ভালো এসেছে—এটি হয়তো ইউরোর সামান্য দর বৃদ্ধির পেছনে একটি কারণ হতে পারে। সামগ্রিকভাবে, মার্কেটের ট্রেডাররা অবশেষে ইউরো ক্রয়ের প্রতি আগ্রহী হয়েছে, যা একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত। এই পেয়ারের মূল্য আবারও ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, যা অন্তত স্বল্পমেয়াদি একটি বুলিশ প্রবণতা গঠনের সম্ভাবনা তৈরি করছে। পূর্বে যেমনটি উল্লেখ করা হয়েছে, আমরা এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্য বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছি এবং ধারণা করছি, অবশেষে আবারও ২০২৫ সালে পরিলক্ষিত সামগ্রিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হবে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মার্কেটের ট্রেডাররা ধারাবাহিকভাবে মার্কিন ডলারের মূল্যের বিয়ারিশ প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে এমন বেশ কয়েকটিকারণ উপেক্ষা করেছে। এখন সেই কারণগুলো এই পেয়ারের মূল্যে প্রতিফলিত হওয়ার সময় এসেছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বুধবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে কোনো নতুন ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়নি। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি শক্তিশালী বাই সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল—এই পেয়ারের মূল্য 1.1571–1.1584 জোন ব্রেক করে উপরের দিকে গিয়েছিল। তখনই স্টপ লস ব্রেকইভেনে সেট করে ট্রেড ওপেন রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। দেখা গেছে, সেই ট্রেড অনুযায়ী এই পেয়ারের মূল্য লক্ষ্যমাত্রা পর্যন্ত পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক চার্টে এখন EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এই পেয়ারের মূল্য আবারও ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করেছে, এবং সামগ্রিক মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট মার্কিন ডলারের জন্য এখনও দুর্বলই রয়েছে। তাই, আমরা ২০২৫ সালে পরিলক্ষিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার প্রত্যাশা করছি।
বৃহস্পতিবার, EUR/USD পেয়ারের মূল্য যেকোনও দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে, কারণ ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশের সম্ভাবনা বেশ সীমিত। তবে, নতুন ট্রেডারদের জন্য এখন একটি নতুন গুরুত্বপূর্ণ জোন তৈরি হয়েছে—1.1655–1.1666। যদি এই এরিয়ার ওপরে কনসোলিডেশন হয়, তাহলে লং পজিশন ওপেন করা যেতে পারে, যেখানে এই পেয়ারের মূল্যের 1.1745 লেভেলের দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। অন্যদিকে, যদি মূল্য এই এরিয়ার নিচে নেমে যায়, তাহলে শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ তৈরি হতে পারে, যেখানে এই পেয়ারের মূল্যের 1.1584 লেভেলের দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলসমূহ: 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527, 1.1571-1.1584, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, 1.1970-1.1988। বৃহস্পতিবার ইউরোজোনের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট হিসেবে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ডের একটি ভাষণ অনুষ্ঠিত হবে। এর বাইরে আর কোনো তাৎপর্যপূর্ণ ইভেন্ট নেই, সুতরাং এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটি কম থাকতে পারে এবং টেকনিক্যাল কারণে ইউরোর মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।