সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের পর্যালোচনা:
বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে বলে নির্ধারিত রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনগুলো যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত হবে, যদিও এগুলো মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে না। আনুমানিক এক ঘণ্টার মধ্যেই যুক্তরাজ্যে শিল্প উৎপাদন এবং জিডিপি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। তবে এবারের জিডিপি প্রতিবেদন মাসিক, প্রান্তিক-ভিত্তিক নয়। সাধারণত মার্কেটে প্রান্তিক-ভিত্তিক ও বার্ষিক জিডিপি প্রতিবেদনের প্রভাব বেশি হয়ে থাকে। এদিকে শিল্প উৎপাদন খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হিসেবে বিবেচিত হয় না। তবুও, যেহেতু বৃহস্পতিবার আর কোনো উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তাই শুধুমাত্র এই কারণেই প্রতিবেদন দুটির ফলাফল মার্কেটে কিছুটা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। বৃহস্পতিবারের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ইউরোজোন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট নির্ধারিত থাকলেও, এগুলোর মধ্যে খুব কম ইভেন্টই রয়েছে যা মার্কেটের ট্রেডারদের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে। ইউরোপে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ডে এবং প্রধান অর্থনীতিবিদ ফিলিপ লেইনের বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির (FOMC) একাধিক সদস্য বক্তব্য দেবেন, যার মধ্যে রয়েছেন থমাস বারকিন, মাইকেল ব্যার, স্টিভেন মির্রেন, ক্রিস্টোফার ওয়ালার এবং মিশেল বোম্যানসহ আরও অনেকে।
পূর্ববর্তী বিশ্লেষণে যেমনটি উল্লেখ করা হয়েছে, লাগার্ডে ও পাওয়েল — দুজনই গত কয়েক সপ্তাহে একাধিকবার বক্তব্য প্রদান করেছেন। এর ফলে মার্কেটের ট্রেডাররা ইতোমধ্যেই এটি জানে দুইজন কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রধানের কাছ থেকে নিকট ভবিষ্যতে কী প্রত্যাশা করা যেতে পারে, সে সম্পর্কে তাঁরা স্পষ্ট ধারণা পেয়েছে। ইসিবি বর্তমানে সুদের হার কমানোর কোনো পরিকল্পনা করছে না, কারণ তারা এটির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে না। অপরদিকে, মার্কিন শ্রমবাজারে চলমান দুর্বল পরিস্থিতির কারণে ফেডের পক্ষ থেকে আর্থিক নীতিমালা আরও নমনীয় করার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপসংহার:
সপ্তাহের শেষ দিকের ট্রেডিংয়ে, উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে, যেহেতু উভয় পেয়ারের মূল্য নিজ নিজ চার্টে ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করেছে। ইউরো ট্রেডিংয়ের জন্য 1.1655–1.1666 জোন ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্রিটিশ পাউন্ডের ক্ষেত্রেও একটি অনুরূপ ট্রেডিং রেঞ্জ গঠিত হয়েছে যা 1.3413–1.3421-এর লেভেলের মধ্যে অবস্থিত।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।