বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট
বৃহস্পতিবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্য ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করেছে এবং ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল। চার্টে দেখা যাচ্ছে, এখন মার্কেটে একটি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছে, এবং আমরা ব্রিটিশ পাউন্ডের আরও দর বৃদ্ধির আশা করছি। গতকাল যুক্তরাজ্যে আগস্ট মাসের শিল্প উৎপাদন এবং জিডিপি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যা পূর্বাভাসের চেয়ে ইতিবাচক ফলাফল প্রদর্শন করেছে। তবে আগের মতোই, ব্রিটিশ অর্থনৈতিক প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল মার্কেটে খুব বেশি প্রভাব বিস্তার করেনি। ট্রেডারদের দৃষ্টি এখন মূলত মার্কিন ডলার, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ডোনাল্ড ট্রাম্প, ফেডারেল রিজার্ভ, এবং চীনের সঙ্গে বর্ধিত বাণিজ্য যুদ্ধের দিকেই কেন্দ্রীভূত। আমাদের দৃষ্টিতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো বৈশ্বিক মৌলিক অনুঘটক মার্কিন ডলারকে সহায়তা করছে না। গত কয়েক মাসে এই পেয়ার দৈনিক টাইমফ্রেমে একটি প্রশস্ত সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যে ট্রেড করেছে। সাধারণত এমন দীর্ঘ কনসোলিডেশনের পরে নতুন একটি প্রবণতা শুরু হয় — হয় ঊর্ধ্বমুখী নয়তো নিম্নমুখী। এই পর্যায়ে নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ার জন্য বিশেষ কোনো কারণ নেই, যার মানে শিগগিরই বুলিশ প্রবণতা শুরু হতে পারে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বৃহস্পতিবার একটি সংকীর্ণ রেঞ্জের মধ্যেই কমপক্ষে পাঁচটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়। এই পেয়ারের মূল্য 1.3413–1.3421 জোন থেকে পাঁচবার রিবাউন্ড করেছে, যা নতুন ট্রেডারদের জন্য একাধিক এন্ট্রি পয়েন্ট তৈরি হয়েছে। এখনো পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে পাউন্ডের মূল্যের শক্তিশালী বৃদ্ধি না ঘটলেও, আমাদের বিশ্বাস আজকের সেশনে পাউন্ডের মূল্যের 1.3466–1.3475 জোনে পৌঁছনোর সম্ভাবনা রয়েছে।
শুক্রবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে অবশেষে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন সম্ভাব্য বুলিশ প্রবণতা গঠিত হতে শুরু হয়েছে, যার ফলে আরও ব্যাপক ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হতে পারে। আগেও বলা হয়েছে যে দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধির জন্য কোনো ভিত্তি নেই।
সেই কারণে মধ্যমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী পাউন্ডের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা বিরাজ করবে। সাম্প্রতিক সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক সংক্রান্ত আগ্রাসী পদক্ষেপ মার্কেটে এমন চাপ সৃষ্টি করছে, যা ডলার থেকে বিনিয়োগ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।
শুক্রবার এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে, কারণ এখন স্পষ্টভাবে বুলিশ প্রবণতা শুরু হয়েছে। যদি এই পেয়ারের মূল্য 1.3413–1.3421 রেঞ্জ নিশ্চিতভাবে ব্রেকআউট করে ঊর্ধ্বমুখী হয়, তাহলে লং পজিশনগুলো আরও শক্তিশালী হবে এবং এই পেয়ারের মূল্য 1.3466–1.3475 জোনের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। বিপরীতভাবে, যদি মূল্য এই জোনের নিচে নেমে যায়, তাহলে একটি ডাউনওয়ার্ড কারেকশনের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হচ্ছে: 1.3102-1.3107, 1.3203-1.3211, 1.3259, 1.3329-1.3331, 1.3413-1.3421, 1.3466-1.3475, 1.3529-1.3543, 1.3574-1.3590, 1.3643-1.3652, 1.3682, এবং 1.3763। শুক্রবার যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্র— কোনো দেশ থেকেই উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না। অতএব, ট্রেডারদের কোনো বড় খবরের ভিত্তিতে মার্কেটে নাটকীয় মুভমেন্টের প্রত্যাশা না করে প্রধানত টেকনিক্যাল সিগন্যাল অনুসরণ করেই ট্রেডিং করতে হবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।