ব্রিটিশ পাউন্ডের ফরেক্স ট্রেডের বিশ্লেষণ এবং পরামর্শ
যখন MACD সূচকটি শূন্যের নিচের দিকে নামতে শুরু করেছিল তখন এই পেয়ারের মূল্য 1.3367 লেভেল টেস্ট করেছিল, যা পাউন্ড বিক্রি করার জন্য একটি সঠিক এন্ট্রি পয়েন্ট নিশ্চিত করে। তবে, এই পেয়ারের কোনো উল্লেখযোগ্য দরপতন হতে দেখা যায়নি।
মার্কিন ডলারের বিপরীতে ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতন অব্যাহত রয়েছে—বিশেষ করে চলমান ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য বিরোধের অমীমাংসিত অবস্থা এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বৈশ্বিক বাণিজ্য খাতের অনিশ্চয়তা এবং যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির ওপর এটির সম্ভাব্য প্রভাবের কারণে বিনিয়োগকারীরা এখন অত্যন্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। উল্লেখ্য যে, যুক্ত্রাজ্যের অর্থনীতি ইতোমধ্যে রাজনৈতিক ও আর্থিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদনে সরকারি ঋণগ্রহণের মাত্রার তীব্র বৃদ্ধি এই চাপের বাস্তবতা নিশ্চিত করেছে।
আজ যুক্তরাজ্যে সেপ্টেম্বর মাসের কনজ্যুমার প্রাইস ইনডেক্স বা ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI), কোর CPI এবং রিটেইল প্রাইস ইনডেক্স বা খুচরা মূল্য সূচক (RPI) সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা বর্তমানে দেশটির মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতা বোঝার ক্ষেত্রে মূল নির্দেশক হিসেবে বিবেচিত হবে। বিশ্লেষকরা এই পরিসংখ্যানগুলো মনোযোগ সহকারে বিশ্লেষণ করবেন, যাতে ব্রিটিশ অর্থনীতির ওপর মুদ্রাস্ফীতির চাপের মাত্রা অনুধাবন করা যায় এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ভবিষ্যতে কী ধরনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে পারে তা অনুমান করা যায়।
যদি প্রকাশিত প্রতিবেদনে মূল্যস্ফীতি উচ্চ পর্যায়ে থাকে, তাহলে তা ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে সুদের হারের ব্যাপারে কঠোর বা হকিশ অবস্থান ধরে রাখতে উৎসাহিত করতে পারে। এ ধরনের পদক্ষেপ পাউন্ড স্টার্লিংয়ের জন্য সহায়ক হতে পারে, তবে এর বিপরীতে, ঋণগ্রহণের ক্ষেত্রে উচ্চ ব্যয় ব্যবসায়িক বিনিয়োগ এবং ভোক্তা ব্যয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যা সামগ্রিক অর্থনীতিকে মন্থর করতে পারে। অন্যদিকে, যদি মূল্যস্ফীতি হ্রাস পায়, তাহলে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড সম্ভবত আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করার কথা বিবেচনা করতে পারে, যা ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতন ঘটাবে, তবে অর্থনীতিতে গতিশীলতা সৃষ্টি করতে সহায়তা করতে পারে। বিনিয়োগকারীরা সম্ভাব্য ঝুঁকি ও লাভ-লোকসানের দিকগুলো পরিমাপ করে ভবিষ্যতের সর্বাধিক সম্ভাব্য পরিস্থিতি নির্ধারণের চেষ্টা করবেন।
বিশেষ মনোযোগ থাকবে কোর কনজ্যুমার প্রাইস ইনডেক্সের (Core CPI) দিকে, কারণ এটি জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের মতো চরম অস্থির উপাদানগুলোকে বাদ দিয়ে মূল্যস্ফীতির প্রকৃত প্রবণতার একটি স্পষ্ট চিত্র প্রদান করে। পাশাপাশি, রিটেইল প্রাইস ইনডেক্স বা খুচরা বিক্রয় সূচকও (RPI) গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি মজুরি, পেনশন এবং অন্যান্য সামাজিক ভাতাসমূহ সমন্বয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়।
দৈনিক ট্রেডিং কৌশল হিসেবে, আমি মূলত পরিকল্পনা #1 এবং পরিকল্পনা #2 বাস্তবায়নের ওপর নির্ভর করব।

বাই সিগন্যাল
- পরিকল্পনা #1: আজ পাউন্ডের মূল্য 1.3440-এর (চার্টে গাঢ় সবুজ লাইন) লেভেলে বৃদ্ধির লক্ষ্যে 1.3395-এর (চার্টে সবুজ লাইন) এন্ট্রি পয়েন্টে পৌঁছাবে তখন আমি পাউন্ড কেনার পরিকল্পনা করছি। মূল্য প্রায় 1.3440-এর লেভেলের আশেপাশে পৌঁছালে, আমি লং পজিশন ক্লোজ করতে যাচ্ছি এবং বিপরীত দিকে শর্ট পজিশন ওপেন করতে যাচ্ছি, উল্লিখিত লেভেল থেকে বিপরীত দিকে 30-35 পিপস মুভমেন্টের প্রত্যাশা করছি। আজ শুধুমাত্র আসন্ন প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল প্রকাশিত হলে এই পেয়ার ক্রয় করা যেতে পারে।
- গুরুত্বপূর্ণ! এই পেয়ার কেনার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের উপরে রয়েছে এবং শূন্যের উপরে উঠতে শুরু করেছে।
- পরিকল্পনা #2: MACD সূচকটি ওভারসোল্ড জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.3372-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রেও আমি আজ ইউরো কিনতে যাচ্ছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নগামী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে ঊর্ধ্বমুখী করবে। 1.3395 এবং 1.3440-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দর বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা যেতে পারে।
সেল সিগন্যাল
- পরিকল্পনা #1: আজ পাউন্ডের মূল্য 1.3372-এর (চার্টে লাল লাইন) লেভেল ব্রেক করে নিম্নমুখী হওয়ার পর আমি পাউন্ড বিক্রি করার পরিকল্পনা করছি, যা GBP/USD-এর দ্রুত দরপতনের দিকে নিয়ে যাবে। বিক্রেতাদের জন্য মূল লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.3324-এর লেভেল, যেখানে মূল্য পৌঁছালে আমি শর্ট পজিশন ক্লোজ করতে যাচ্ছি এবং অবিলম্বে বিপরীত দিকে লং পজিশন ওপেন করার পরিকল্পনা করছি, এই লেভেল থেকে বিপরীত দিকে 20-25 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার আশা করছি। আজ প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস ইঙ্গিত পাওয়া গেলএ পাউন্ডের বিক্রেতারা সক্রিয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
- গুরুত্বপূর্ণ! বিক্রি করার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের নিচে রয়েছে এবং শূন্যের নিচে নামতে শুরু করেছে।
- পরিকল্পনা #2: MACD সূচকটি ওভারবট জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.3395-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রে আমি আজ পাউন্ড বিক্রি করার পরিকল্পনা করছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে নিম্নমুখী দিকে নিয়ে যাবে। 1.3372 এবং 1.3324-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দরপতনের আশা করা যেতে পারে।

চার্টে কী আছে:
- হালকা সবুজ লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট ক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় সবুজ লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্দেশ করে, কারণ এই লেভেলের উপরে আরও দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।
- হালকা লাল লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট বিক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় লাল লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে, কারণ এই লেভেলের নিচে আরও দরপতনের সম্ভাবনা নেই।
- মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার সময় ওভারবট এবং ওভারসোল্ড জোন মূল্যায়নের জন্য MACD সূচক ব্যবহার করা উচিত।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
- নতুন ফরেক্স ট্রেডারদের মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মূল্যের তীব্র ওঠানামা এড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক প্রতিবেদন প্রকাশের আগে মার্কেটে এন্ট্রি না করাই উত্তম। যদি আপনি সংবাদ প্রকাশের সময় ট্রেডিং করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে লোকসানের সম্ভাবনা হ্রাসের জন্য অবশ্যই স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করুন। স্টপ-লস অর্ডার ছাড়া ট্রেডিং করলে দ্রুত আপনার সম্পূর্ণ ডিপোজিট শেষ হয়ে যেতে পারে, বিশেষত যদি আপনি অর্থ ব্যবস্থাপনার নীতিমালা উপেক্ষা করেন এবং বেশি ভলিউমে ট্রেড করেন।
- মনে রাখবেন, সফল ট্রেডিংয়ের জন্য একটি সুসংগঠিত ট্রেডিং পরিকল্পনা থাকা আবশ্যক, ঠিক যেমনটি উপরে নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে সেটি দৈনিক ভিত্তিতে ট্রেড করা ট্রেডারদের জন্য লোকসানের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।