বুধবারের ট্রেডিংয়ের পর্যালোচনা:
GBP/USD পেয়ারের 1-ঘন্টার চার্ট

সপ্তাহের শুরুর দিকের তুলনায় বুধবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতা দেখা গেছে। এর পেছনের কারণ খুবই স্পষ্ট — এ সপ্তাহের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিবেদন যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি সূচক প্রকাশিত হয়েছে।
যদিও আমরা এখনো মনে করি যে যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতির হার অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের পক্ষ থেকে আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করার কোনো ইঙ্গিত নেই, তবুও সেপ্টেম্বরে দেশটির কনজ্যুমার প্রাইস ইনডেক্স বা ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) প্রত্যাশিত হারে বৃদ্ধি পায়নি। এর ফলে ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতন হতে দেখা দেয় এবং মার্কেটে ব্রিটিশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান গ্রহণের প্রত্যাশা আরও জোরালো হয়।
তবে দিনের দ্বিতীয়ার্ধে, কোনো এক অজানা কারণে মার্কিন ডলারের মূল্য হ্রাস পেতে থাকে। আমরা এখনো এই ধরণের মুভমেন্টকে অযৌক্তিক বলে মনে করি এবং একে দৈনিক টাইমফ্রেমে অবস্থিত ফ্ল্যাট মার্কেট স্ট্রাকচারের ফলাফল হিসেবে দেখছি—যা মার্কেটের সামগ্রিক মুভমেন্টকে অস্বাভাবিক করে তুলেছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, বুধবার কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, যদিও সেগুলোর বেশিরভাগই দুর্বল সিগন্যাল ছিল। যখন যুক্তরাজ্যের ভোক্তা মূল্য সূচকের ফলাফলের প্রভাবে সৃষ্ট দরপতন শেষের দিকে ছিল ঠিক তখনই প্রথম সেল সিগন্যালটি গঠিত হয়। 1.3329–1.3331 জোনে দুটি সেল সিগন্যাল গঠিত হলেও, পরবর্তীতে কার্যকর কোনো নিম্নমুখী মুভমেন্ট দেখা যায়নি।
তবে, ওই দুটি ভুল সিগন্যালের পর একই লেভেলে একটি কার্যকর বাই সিগন্যাল গঠিত। এটিই দিনের মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর বাই সিগন্যাল প্রথম সেল সিগন্যালটি গঠিত হয় এবং যারা এই ট্রেড করেছেন তারা ২০–২৫ পিপস পর্যন্ত মুনাফা করতে সক্ষম হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে:
ঘন্টাভিত্তিক চার্টে, অবশেষে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে — যা দীর্ঘমেয়াদি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পরবর্তী ধাপের সূচনা হতে পারে। পূর্বেও বলেছি, বর্তমানে মার্কিন ডলারের শক্তিশালী ও দীর্ঘমেয়াদি মূল্য বৃদ্ধির ভিত্তি নেই, তাই মধ্যমেয়াদে এখনও এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পূর্বাভাস দেয়া যায়। তবে এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটির মাত্রা বর্তমানে অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে এবং মূল্যের মুভমেন্টের ধরনও বেশ মন্থর।
বৃহস্পতিবার, আবারও এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হতে পারে, কারণ টেকনিক্যাল স্ট্রাকচার বর্তমানে বুলিশ প্রবণতাকে সমর্থন করছে। তবে লং পজিশন ওপেন করতে হলে অবশ্যই 1.3329–1.3331 জোন থেকে নতুন করে রিবাউন্ড হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু যদি মূল্য এই এরিয়ার নিচে কনসোলিডেটেড করে, তাহলে নতুন শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ তৈরি হতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে দৈনিক ট্রেডিংয়ের জন্য নিচের লেভেলগুলোতে মনোযোগ দিতে হবে: 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3466–1.3475, 1.3529–1.3543, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র—উভয় দেশের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আবারও গুরুত্বপূর্ণ কিছুই নেই। এর ফলে মার্কেটে সীমিত ভোলাটিলিটি দেখা যেতে পারে এবং দৈনিক ভিত্তিতে প্রবণণতাভিত্তিক মুভমেন্টও তুলনামূলকভাবে দুর্বল হতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী রয়েছে:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।